ম্যারিকো বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ২০ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ২০২৩-২৪ হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১১৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে একই প্রান্তিকে যা ছিল ৯৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ম্যারিকো বাংলাদেশের আয়ও বেড়েছে। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ৩৬৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৭ টাকা ১১ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময় যা ছিল ৩০ টাকা ৮৫ পয়সা। এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৯৩ টাকা ১৪ পয়সায়। গত বছরের একই সময় যা ছিল ৫৩ টাকা ৮৮ পয়সা।
সর্বশেষ ৩১ মার্চ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের এরই মধ্যে দুই দফায় ৭৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ম্যারিকো বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৪৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ ও দ্বিতীয় দফায় ৩০০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন শেয়ারহোল্ডাররা। ঘোষিত লভ্যাংশসহ আলোচ্য হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরে ম্যারিকো বাংলাদেশের আয় হয়েছে ১ হাজার ৪১৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ৩০৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আলোচ্য হিসাববছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩৮৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৫৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১২২ টাকা ৯৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১১২ টাকা ৮২ পয়সা।
সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে ২০০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশের বাইরে ৬০০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে ম্যারিকো বাংলাদেশের আয় হয়েছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে আয় ছিল ১ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩৫৫ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে নিট মুনাফা ছিল প্রায় ৩১১ কোটি টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১১২ টাকা ৮২ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ৯৮ টাকা ৬৯ পয়সা।
সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ৯০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ম্যারিকো বাংলাদেশ। এর আগে সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরে মোট ৯৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল ম্যারিকো বাংলাদেশ। ওই হিসাব বছরের জন্য ২০০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশের বাইরে ৭৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। ২০১৮-১৯ হিসাববছরে শেয়ারহোল্ডারদের মোট ৬৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এর মধ্যে ৬০০ শতাংশ অন্তর্বর্তী ও বাকি ৫০ শতাংশ দেওয়া হয় চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ।
মুম্বাইভিত্তিক এফএমসিজি কোম্পানি ম্যারিকো ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে। ২০০৯ সালে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৪০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে বর্তমানে এর পরিশোধিত মূলধন ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩০০ কোটি ২০ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৯০ শতাংশই রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।