Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

কানে নজরকাড়া লুকে জাহ্নবী কাপুর

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

ভিডিও
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫১
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫২
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৩৮
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
সলিমুল্লাহ খান
১১:০৯, ২৪ জুন ২০১৭
আপডেট: ১২:৫৫, ২৪ জুন ২০১৭
সলিমুল্লাহ খান
১১:০৯, ২৪ জুন ২০১৭
আপডেট: ১২:৫৫, ২৪ জুন ২০১৭
আরও খবর
কথাসাহিত্যিকের চোখে: গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণ
সাক্ষাৎকার: কবিরা কখনোই কারো একার নয় : আল মাহমুদ
গ্রন্থকীটদের জন্য সাত শহর
দুর্ঘটনা: ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষেরা
পুরোনো সেই ঈদের কথা
জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

আহমদ ছফা : পিতৃনামের পরাক্রম

সলিমুল্লাহ খান
১১:০৯, ২৪ জুন ২০১৭
আপডেট: ১২:৫৫, ২৪ জুন ২০১৭
সলিমুল্লাহ খান
১১:০৯, ২৪ জুন ২০১৭
আপডেট: ১২:৫৫, ২৪ জুন ২০১৭

‘আমার একটা অস্পষ্ট ধারণা আছে একদিন আমার জীবনের সমস্ত কথা অমৃতসমান বিবেচিত হবে। এই উচ্চারণে যদি অহঙ্কার প্রকাশ পায় আল্লাহ যেনো আমার অপরাধ মার্জনা করেন।’—আহমদ ছফা 

আহমদ ছফার অকালমৃত্যুর এক দশকও পার না হইতে—ইংরেজি ২০০৮ সাল নাগাদ—তাঁহার আত্মীয় নূরুল আনোয়ার ‘আহমদ ছফা রচনাবলি’ প্রকাশ করিয়াছিলেন। ইহাতে মহাত্মা আহমদ ছফার সকল লেখা স্থান পায় নাই। পাওয়া সম্ভবও ছিল না। এই কাজটি অনেকজনকে অনেকদিন ধরিয়া ধীরে ধীরে করিতে হইবে; তবু নূরুল আনোয়ার একটা অসাধ্যসাধন করিয়াছেন—এ কথা মানিতেই হইবে। তাঁহার কীর্তি অসাধারণ—এই কীর্তির কোন তুলনা হয় না। নূরুল আনোয়ার সম্পাদিত রচনাবলি প্রকাশিত না হইলে এই মহান লেখকের অনেক অমূল্য রচনা আজও হয়তো জরাজীর্ণ পত্র-পত্রিকার পাতায় আত্মগোপন করিয়া থাকিত—থাকিত অন্তত আরো অনেক বছর।

আহমদ ছফা রচনাবলির চতুর্থ খণ্ডে একটি ছোট্ট অথচ অসাধারণ মূল্যবান লেখা অন্তর্ভুক্ত হইয়াছে। লেখাটির নামও বেশ—রীতিমত অতুলনীয় : ‘রোগশয্যায় বিরচিত’। ইহার রচনাকাল—আনোয়ার জানাইয়াছেন—ইংরেজি ১৯৯৯ সাল। আহমদ ছফার জীবদ্দশায় প্রকাশিত সর্বশেষ গ্রন্থটির নাম দাঁড়াইয়াছিল—‘উপলক্ষের লেখা’। প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০০১। ‘রোগশয্যায় বিরচিত’ নামের লেখাটি এই বইয়ের মধ্যেও পাওয়া যায়। আহমদ ছফা তাঁহার পুরাদস্তুর আত্মজীবনী লিখিবার ফুরসত কখনো পান নাই। তবে ‘রোগশয্যায় বিরচিত’ নামের রচনাটিতে তাঁহার বাল্য ও কৈশোরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গের অবতারণা করা হইয়াছে।

মহাত্মার এন্তেকালের দশ বছরের মাথায় নূরুল আনোয়ার একটি চমৎকার স্মৃতিকথাও প্রকাশ করিয়াছিলেন। নাম : ‘ছফামৃত’। সেই স্মৃতিকথায় তিনি ‘রোগশয্যায় বিরচিত’ লেখাটি প্রায় সম্পূর্ণই উদ্ধৃত করেন। ঘটনার কৈফিয়তস্বরূপ নূরুল আনোয়ার বলিয়াছেন: ‘কাকার জীবনকে সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য এর চেয়ে [ভালো] অন্য কোন পথ খোলা আছে বলে আমার জানা নেই।’ তিনি আমাদের আরো সংবাদ দিয়াছেন। সংবাদ অনুসারে, এই লেখাটি আহমদ ছফা লিখিয়াছিলেন ‘ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালের রোগশয্যায়’ বসিয়া। আনোয়ারের কথায়, ‘সালটি ছিল উনিশশ’ নিরানব্বই। আমেরিকা যাবার প্রাক্কালে বিশেষ প্রয়োজনে তাঁকে এ লেখাটি লিখতে হয়েছিল।’ (আনোয়ার ২০১০ : ২৪)

আহমদ ছফা যদি আজ অবধি বাঁচিয়া থাকিতেন, এ বছর তাঁহার বয়স হইত চুয়াত্তর—কি বড়জোর পঁচাত্তর—বছর। আগামী ৩০ জুন তাঁহার জন্মদিন। স্থির করিয়াছি, এই জন্মদিনের অছিলায় তাঁহার স্মৃতির উদ্দেশে তাঁহারই লেখা হইতে কিছু সংবাদ চয়ন করিয়া এই শ্রদ্ধার্ঘ্যটি নিবেদন করিব। ‘রোগশয্যায় বিরচিত’ নামক জাতের অতীত এই লেখাটিতে তিনি জানাইতেছেন, ‘এটা আমার আত্মজীবনী না, পারিবারিক কাহিনীর অংশও নয়। তবু এক বিশেষ প্রয়োজনে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই কাহিনী আমাকে লিখতে হচ্ছে।’ (ছফা ২০০৮ : ২১২)

আহমদ ছফার এই নাতিদীর্ঘ রচনাটি পড়িয়া আমার কেন জানি মনে হইল ইহার নাম ‘পিতৃনামের পরাক্রম’ বা এই জাতীয় অন্য কোন গুরুগম্ভীর পদামৃতে রচিত হইতে পারিত। এই লেখায় আহমদ ছফা যাহা বিবৃত করিয়াছেন তাহাতে মনোবিশ্লেষণ বিশারদ জাক লাকাঁ কথিত সুসমাচারই আরেকবার শুনিতে পাইলাম। আহমদ ছফা একদিন প্রয়োজনে যাহা লিখিয়াছিলেন তাহার মূল্য আজও অপরিমেয়। ১৯৯৯ সালের ১৮ মে তারিখে তাঁহার এক প্রকাশক বরাবর পত্রযোগে তিনি যাহা লিখিয়াছিলেন আজ মনে হয় তাহাই অক্ষরে অক্ষরে ফলিতেছে। তিনি লিখিয়াছিলেন, ‘আমার একটা অস্পষ্ট ধারণা আছে একদিন আমার জীবনের সমস্ত কথা অমৃতসমান বিবেচিত হবে। এই উচ্চারণে যদি অহঙ্কার প্রকাশ পায় আল্লাহ যেনো আমার অপরাধ মার্জনা করেন।’ (ছফা ২০০৪ : ১২৩)

উদাহরণস্বরূপ তাঁহার পিতৃস্মৃতির কথা বলা যাউক। আহমদ ছফা লিখিয়াছেন, ‘আমার পিতার নাম মরহুম হেদায়েত আলী ওরফে ধন মিয়া। তিনি নিতান্ত সাধারণ অবস্থা থেকে শ্রম, ধৈর্য, সাহস ও সততার বলে নিজেকে একজন ভূমিবান সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং একটি প্রাচীন পরিবারের সম্মান অনেকাংশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।’ এই পরিচয়ের একটু পরেই পিতার কয়েকটি গুণ বিশদ করিয়াছেন তিনি : ‘আমার মরহুম পিতা একদিকে যেমন জেদী এবং তেজস্বী ছিলেন, অন্যদিকে তাঁর প্রাণ ছিল [তেমনই] পুষ্পের মত কোমল। আমার পিতার জীবদ্দশায় তাঁর শত্রুর অভাব ছিল না। তথাপি আমাদের অঞ্চলের এমন অনেক মানুষের সাক্ষাৎ আমি এখনো পেয়ে থাকি যাঁরা মুক্তকণ্ঠে আমার পিতার সাহস, সরলতা এবং পরের উপকার করার গল্প বয়ান করে থাকেন।’ (ছফা ২০০৮ : ২১১)

তিনি আরও লিখিয়াছেন, ‘আমার পিতা পরের হিতে জীবন উৎসর্গ করতে কুণ্ঠিত হতেন না। আমাদের অঞ্চলে তিনি অনেক জনহিতকর কাজ করেছিলেন। তিনি মানুষের পানি খাওয়ার জন্য পুষ্করিণী খনন করেছিলেন। রাস্তা-ঘাট এবং পুল-সাঁকো ইত্যাদি করে তিনি নির্মল আনন্দ অনুভব করতেন। যদিও লেখাপড়া করার বিশেষ সুযোগ তাঁর ঘটেনি তথাপি তিনি অত্যন্ত বিদ্যোৎসাহী মানুষ ছিলেন। তিনি নিজের জমিতে মসজিদ এবং মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। যতদিন বেঁচেছিলেন একহাতে সেই প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যয়ভার বহন করেছেন। তিনি আমাদের অঞ্চলে তাঁর বন্ধুদের নিয়ে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আমি সে বিদ্যালয়ের তৃতীয় ব্যাচের ছাত্র। আমার পিতা অনেক গরিব ছাত্রের স্কুলের পরীক্ষার ফিস গোপনে পরিশোধ করতেন। এমনকি আমাদের চরমতম অর্থনৈতিক সংকটের সময়ও গরিব ও এতিম ছাত্রদের বাড়িতে এনে জায়গির রাখতেন।’ (ছফা ২০০৮ : ২১১)

এই স্মৃতিকথার আরেক জায়গায় আহমদ ছফা আরো একবার অকপটে লিখিয়াছেন : ‘আমার পিতার কাছে আমি আরো একটা বিশেষ কারণে ঋণী। আমাদের এলাকায় কমিউনিস্ট পার্টির কর্মতৎপরতা শুরু হলে তিনি ঝুঁকি নিয়ে আমাকে কমিউনিস্ট পার্টির কর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন। দূরে সভা হলে আমার হেঁটে যেতে কষ্ট হত। তখন বাস-রিকশা ছিল না। তিনি অনেক সময় ঘাড়ে করে [আমাকে] সভাস্থানে পৌঁছে দিয়ে আসতেন। আমার দুই-পাঁচ মিনিট বক্তৃতা শোনার জন্য তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতেন। সভা শেষ হলে সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন। হাঁটতে অসুবিধে হলে ঘাড়ে করে তুলে নিতে হত।’ (ছফা ২০০৮ : ২১২)

১৯৯৪-৯৬ সালে এক সাক্ষাৎকারযোগে আহমদ ছফা আরও একটি সংবাদ জানাইতেছিলেন। সাক্ষাৎকারগ্রহীতা জানিতে চাহিয়াছিলেন, ‘আসহাব উদ্দিন আহমদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ কেমন ছিল?’ উত্তরে আহমদ ছফা বলিয়াছিলেন, ‘তাঁর বাড়ি বাঁশখালী থানায়—আমাদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে নয়। ছোটবেলায় তাঁর কথা শুনে কমিউনিজমের প্রতি অনুরক্ত হয়েছিলাম। তাঁর সঙ্গে জীবনে তিনবার দেখা হয়েছে।’ খানিক পরে তিনি জানাইলেন, ‘আসহাব উদ্দিন আহমদ সাহেবকে আমি প্রথম দেখি আমাদের গ্রামে ন্যাপের জনসভায় বক্তৃতা দিতে। তাঁর সেই বক্তৃতাটি আমার এখনো মনে আছে। সেদিন তিনি আমাদের বাড়িতে খেয়েছিলেন।’ (ছফা ২০০৮ (ক) : ৩৬৩-৩৬৪)

এই অতিথিপরায়ণতার পেছনে আহমদ ছফার পিতার ভূমিকা নিশ্চয়ই সক্রিয় ছিল। অনুমান করিতে দোষ নাই, আসহাব উদ্দিন আহমদ তখনও রাজনীতির ভূগর্ভে প্রবেশ করেন নাই—ভূপৃষ্ঠের রাজনীতিতেই তৎপর ছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ থাকে যে ১৯৫৪ সনের প্রাদেশিক নির্বাচনে আসহাব উদ্দিন আহমদও যুক্তফ্রন্টের মনোনয়ন লাভ করিয়া পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হইয়াছিলেন। আহমদ ছফার বাড়িতে তাঁহার খাওয়ার ঘটনাটি ঠিক কোন বছর ঘটিয়াছিল আজ জানিবার উপায় নাই।

চিরদিন কাহারও সমান যায় না—এই প্রবাদবাক্যটি চিরসত্য প্রমাণ করিয়া আহমদ ছফাও একদিন পিতৃহারা হইলেন। পিতার অকালমৃত্যুর জন্য তিনি তাঁহার একমাত্র বৈমাত্রেয় ভাইটিকে অংশত দায়ী করিয়াছেন। বলা যাইতে পারে, আহমদ ছফা রচনাবলির সম্পাদক নূরুল আনোয়ার আহমদ ছফার এই ভাইটিরই সন্তান বটে। তিনি লিখিয়াছেন, ‘আমার বড় ভাই ছিলেন দুর্বল-চরিত্রের, নিশ্চেষ্ট, বিলাসী-ধরনের মানুষ। তাঁর বিচিত্র রকমের শখ ছিল—প্রায় সময়ই স্ত্রীর কথায় উঠতেন বসতেন। এই সময় থেকে আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হতে থাকে। আমার পিতার সঙ্গে ভ্রাতার অমত, মানসিক সংঘাত পরিবারের নৈতিক এবং অর্থনৈতিক ফাটলগুলো স্পষ্ট করে তুলতে থাকে। আমি কমিউনিস্টদের নিয়ে মহাসুখে আন্দোলন করছি, বড় ভ্রাতা লড়াই দেয়ার বৃষ কিনে অর্থ ধ্বংস করছেন। এই সময়ে আমাদের পরিবারে আরো একটা বিপর্যয় ঘটে যায়। পুকুরের পেছনের ঘাটে পা ফসকে গিয়ে সারাজীবনের জন্য আমার পিতা পঙ্গু হয়ে যান এবং পঙ্গু অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। সেই সময়ে আমি জেলে ছিলাম।’ (ছফা ২০০৮ : ২১৩)

সমস্যার মধ্যে আহমদ ছফাও আমাদের জানাইতে চাহেন নাই ঠিক কেন—কোন কারণে—তাঁহাকে জেলের দরজায় পৌঁছিতে হইয়াছিল। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানাইতে পারেন নাই ঠিক কোন বছর তাঁহার পিতৃদেব জান্নাতবাসী হইয়াছিলেন। তাঁহার জীবনচরিতকার শামসুল আরেফীন লিখিয়াছেন, তাঁহার পিতা হেদায়েত আলী ওরফে ধন মিয়ার মৃত্যু ১৯৫৯ সালে। সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও তিনি যোগ করিতে ভোলেন নাই, ‘আহমদ ছফার বোন বিলকিস খাতুন দৃঢ়তার সাথে আমাকে এ তথ্য জানান।’ অন্যান্য সূত্রে আমরা জানিয়াছি, আহমদ ছফা সেকালের ম্যাট্রিকুলেশন (বা প্রবেশিকা) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন মাত্র ১৯৫৭ সালে। আরেফীনের হিশাব অনুসারে আহমদ ছফা পনের দিন কারাবাস করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার কিছুদিন আগে। স্মৃতি যদি আহমদ ছফার বোনকে প্রতারিত করিয়া থাকে তাহা হইলে ধরিয়া লইতে হইবে তাঁহার পিতার মৃত্যু ১৯৫৭ সালে।

এই সমস্যার অন্তর্গত জটিলতাটি তুলিয়া ধরিতে হইলে আমাদিগকে আরেফীনের লেখা বৃত্তান্তটি এখানে হুবহু তুলিয়া দিতে হয়। একনজরে আহমদ ছফার জীবনপঞ্জী লিখিবার ছলে আরেফীন লিখিয়াছেন, ‘১৯৫৭ : ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কিছুদিন পূর্বে [আহমদ ছফা] ঘর থেকে সোনার মোহর চুরি করে চট্টগ্রাম শহরে পলায়ন [করেন]। অতঃপর একদিন তিনি লালদীঘির আশেপাশে কোথাও হাঁটছিলেন। এ সময় অল্পবয়সী এক ছেলে অকস্মাৎ তাঁর কাছে এসে কান্নাকাটি করতে করতে বলল, সে সারাদিন উপোস। তাকে একটা কাজ জোগাড় করে দিতে পারলে ভালো হয়। ছেলেটির কথায় তাঁর মন কেঁদে উঠল। লালদীঘির পূর্ব অথবা পশ্চিমপাড়ে পরিচিত এক হোটেলে তিনি ছেলেটিকে নিয়ে গিয়ে নিজের পয়সায় খাওয়ালেন। তারপর হোটেল মালিককে বিশেষভাবে অনুরোধ করে তাঁর হোটেলে ছেলেটির একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেন। এর পরেই ঘটল মহাবিপদ। ছেলেটি হোটেলের ড্রয়ার ভেঙ্গে বেশ কিছু টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল। এজন্যে হোটেল মালিক তাঁকে (অর্থাৎ আহমদ ছফাকে) দায়ী করলেন এবং পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। পুলিশ তাঁকে জেলে চালান করলে সেখানে তাঁকে পনের দিন অবস্থান করতে হয়। তাঁর জেল থেকে বেরুবার আটদিন পর অনুষ্ঠিত হয় ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা। পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল পটিয়ায়। তিনি এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তৃতীয় বিভাগ প্রাপ্ত হন। অতঃপর ইন্টারমিডিয়েটে অধ্যয়নের জন্য ভর্তি হন (১৯৫৭) কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজে। সেখানে হোস্টেলে অবস্থান গ্রহণপূর্বক এক বৎসর অধ্যয়নের পর পড়ালেখা বর্জন করেন।’ (আরেফীন ২০০৪ : ১৩০)

আহমদ ছফার পিতার মৃত্যু ১৯৫৭ সালে না ১৯৫৯ সালে—তাহা বড় কথা নহে। বড় কথা তিনি ১৯৬৪ সালে ‘জনকের কবরে’ নামে যে কবিতাটি লিখিয়াছিলেন তাহাতে তাঁহার পিতৃভক্তির পরিচয় প্রগাঢ় পাওয়া যায়। এই কবিতাটি সম্প্রতি আমাদের হাতে পড়িয়াছে। ইহা এখনও আহমদ ছফা রচনাবলিতে স্থান পায় নাই। (ছফা ১৩৭১) আহমদ ছফার এই পিতৃপরিচয়ের একটি সামান্য—অর্থাৎ সার্বজনীন—দিকও আছে। আমরা অন্য কোথায়ও—অন্য কোন উপলক্ষে—তাহার পরিচয় লইবার চেষ্টা করিব।

১৯ জুন ২০১৭

দোহাই
১. আহমদ ছফা, ‘রোগশয্যায় বিরচিত,’ আহমদ ছফা রচনাবলি, ৪র্থ খণ্ড, নূরুল আনোয়ার সম্পাদিত (ঢাকা : খান ব্রাদার্স, ২০০৮), পৃ. ২১০-২১৪।

২. আহমদ ছফা, ‘এক সন্ধ্যার সংলাপ,’ আহমদ ছফা রচনাবলি, ৩য় খণ্ড, নূরুল আনোয়ার সম্পাদিত (ঢাকা : খান ব্রাদার্স, ২০০৮ (ক)), পৃ. ৩৫১-৩৮১।

৩. আহমদ ছফা, ‘চিঠি : ৪৬,’ শামসুল আরেফীন, আহমদ ছফার অন্দরমহল, সংকলিত (চট্টগ্রাম : বলাকা প্রকাশন, ২০০৪), পৃ. ১২২-২৩।

৪. আহমদ ছফা, ‘জনকের কবরে,’ মাসিক মোহাম্মদী, জ্যৈষ্ঠ ১৩৭১; সলিমুল্লাহ খান, ‘ইতিহাস কেন ইতিহাস নয় : দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎ বঙ্গ অথবা নতুন মহাভারত প্রসঙ্গে,’ যুগান্তর, ঈদসংখ্যা (জুন) ২০১৭।

৫. নূরুল আনোয়ার, ছফামৃত (ঢাকা : খান ব্রাদার্স, ২০১০)।

৬. শামসুল আরেফীন, আহমদ ছফার অন্দরমহল (চট্টগ্রাম : বলাকা প্রকাশন, ২০০৪)।

ঈদুল ফিতর ২০১৭

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?
  2. আদিত্যের সঙ্গে প্রেমে শিক্ষা হয়েছে, কোন ভুলটা আর করতে চান না অনন্যা?
  3. ‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি
  4. যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ
  5. মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল
  6. রহস্য নিয়ে আসছে অজয়ের ‘দৃশ্যম ৩’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত

মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?

আদিত্যের সঙ্গে প্রেমে শিক্ষা হয়েছে, কোন ভুলটা আর করতে চান না অনন্যা?

‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি

যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ

মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল

ভিডিও
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৩৮
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৯
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৯
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x
ইউনিজয়
ফনেটিক
English

By using this site you agree to our Privacy Policy