Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

ভিডিও
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৪
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৮
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৮
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৭
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৫
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৮
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪৯
মারুফ রায়হান
১১:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৬
মারুফ রায়হান
১১:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৬
আপডেট: ১১:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৬
আরও খবর
কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহের কবি, সম্প্রীতির কবি
আন্দোলন-সংগ্রাম, রাজনীতিতে নজরুল-সাহিত্যের প্রভাব
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী ফারিয়া বাশার
স্বাগত ১৪৩২: বাংলা নববর্ষ বাঙালির উৎসব
ঢাকার ঈদ মিছিলে মোগল ঐতিহ্য

শহীদ কাদরী

তোমাকে অভিবাদন প্রিয় কবি

মারুফ রায়হান
১১:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৬
মারুফ রায়হান
১১:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৬
আপডেট: ১১:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৬

ঠিক দশ বছর আগের এমনই এক আগস্ট-দিন। বন্ধু শামসুর রাহমান প্রস্থান করলেন। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুর কাজটি করলেন শহীদ কাদরী সাত সমুদ্দুর তের নদীর ওপার থেকে। তাৎক্ষণিক যে বার্তা দিলেন কবিতার নবীন পাঠকদের উদ্দেশে, তা সমীহ জাগাল নিমেষে। লিখলেন : ‘আমি শামসুর রাহমানকে বাংলা ভাষায় তিরিশের দশকের পাঁচজনের অব্যবহিত পরেই সবচেয়ে বড় কবি মনে করি। সময় ও ইতিহাস তাঁকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তাঁর গঠন ছিল সম্পূর্ণ বিশুদ্ধতাবাদী কবির। কিন্তু এই বিশুদ্ধতা তিনি রক্ষা করতে পারেননি। তার কারণ হলো, ওই সময়ে আমাদের দেশে শুরু হয়েছিল রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। কোনো সচেতন লেখকের পক্ষে তখন এর থেকে সরে থাকা সম্ভব ছিল না।’

গভীর বেদনার, আজ শহীদ কাদরীর সমসাময়িক কবিবন্ধুদের ভেতর আছেন কেবল সৈয়দ শামসুল হক ও আল মাহমুদ। হায় একজন বিলেতের আরোগ্যশালায়, অন্যজন প্রায় দৃষ্টিহীন। কিছুটা অনুজপ্রতিম কবিদের ভেতর শহীদ কাদরীর কাছেরজন ছিলেন শিকদার আমিনুল হক। সবার আগে তিনিই চলে গেছেন। শিকদার ভাইয়ের কাছে শহীদ কাদরীর কত গল্পই না আমরা শুনেছি, সে সব ইতিহাস! বয়সে বেশ ছোট, কবি ইকবাল হাসানও ছিলেন শহীদ কাদরীর প্রিয় পাত্র। তাঁর কাছ থেকেও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনতাম কবির কাহিনী। আমেরিকায় শহীদ কাদরীর অনুরাগী ও অনুসরণকারীদের ভেতর কবি হাসান আল আবদুল্লাহ ও আদনান সৈয়দ অন্যতম। আদনান বেশ কয়েক বছর শহীদ কাদরীর সব খবর আমাকে জানাতেন। শেষের দিকে কবি কাজী জহিরুল ইসলাম কবির সান্নিধ্যধন্য হন। দিন দশেক আগে নাকি তাঁকে কবি বলেছিলেন, ‘আমি মৃত্যুর গন্ধ পাচ্ছি।’

দুই.

মধ্যপঞ্চাশে কয়েকটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে সদ্য কৈশোর-উত্তীর্ণ কবি শহীদ কাদরীর তোলপাড়-তোলা আত্মপ্রকাশ। একই সময়ে দুই অগ্রজ শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদের সঙ্গেও তাঁর সুখ্যাত সখ্যের শুরু। কবিতায় আধুনিক নগরজীবনের রূপকার শামসুর রাহমানের প্রথম গ্রন্থ ‘প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশিত হয় ষাট সালে। অন্যদিকে শহীদ কাদরীর প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘উত্তরাধিকার’ বেরোয় তার ঠিক সাত বছর পর। সেকালে এই দুই কবির কাব্যমানস ও কাব্যরসদ নিয়ে তুলনামূলক আলোচনার কারণেই হয়তো এই দুজনকে অনেকে সমসাময়িক কবি বলে মনে করে থাকেন। প্রকৃত অর্থে এঁরা দুজন যথাক্রমে পঞ্চাশ ও ষাট দশকের নতুনতম কবিতার উজ্জ্বলতম প্রতিনিধি। যে কোনো কবির ক্ষেত্রে অভিষেক গ্রন্থটি, আরো স্পষ্ট করে বললে বলতে হয়, প্রবেশক কবিতাটি একধরনের ইশতেহার এবং কবিজন্ম-পরিচয়পত্র হিসেবে বিবেচনার দাবি রাখে। সে-সূত্রে শামসুর রাহমানের ‘রূপালী স্নান’ কবিতাটি স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিল জীবনানন্দ-জগৎ থেকে একজন রোমান্টিক কবির জন্ম হলেও এতে রয়েছে শুদ্ধতাবাদের সঙ্গে সমকালীনতার একটি মনকাড়া মিশেল। দুটি চরণ পাঠ করা যাক : ‘...যদিও আমার দরজার কোনে অনেক বেনামি/ প্রেত ঠোঁট চাটে সন্ধ্যায়, তবু শান্ত রূপালী স্বর্গ-শিশিরে স্নান করি আমি।’ অন্যদিকে শহীদ কাদরীর ‘উত্তরাধিকার’ কবিতাটি প্রবলভাবে ব্যক্তিত্বস্পৃষ্ট; এই কবি যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং দেশভাগের তিক্ত বেদনার্ত উত্তরাধিকার বহন করছেন সেটা তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রকাশিত কবিতাটিতে। বাস্তুহীন বেঁচে থাকার নিষ্করুণ অভিঘাত ঘটে সূচনাকালেই। প্রথম স্তবকটি লক্ষ করুন : ‘জন্মেই কুঁকড়ে গেছি মাতৃজরায়ন থেকে নেমে-/ সোনালি পিচ্ছিল পেট আমাকে উগ্ড়ে দিলো যেন/ দীপহীন ল্যাম্প্পোস্টের নিচে, সন্ত্রস্ত শহরে/ নিমজ্জিত সব কিছু, রুদ্ধচক্ষু সেই ব্ল্যাক-আউটে আঁধারে।’

এখন লক্ষণীয় হলো, এই দুই শক্তিমান নাগরিক এবং আধুনিক কবিই নিজ অস্তিত্ব ও পারিপার্শ্ব সম্পর্কে অসন্তুষ্ট এবং কিছুটা বিপন্ন ও বিব্রত। তবে উভয় কবির প্রাথমিক কবিত্বশক্তির তুলনা করলে দেখব একজনের ভেতর রয়েছে মিহি ভাবালুতা, অতিকথন এবং বাংলা কবিতা-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা; অন্যজন ঋজু, একচুল পরিমাণও বাড়তি শব্দ ব্যবহারে অসম্মত এবং পরিপূর্ণভাবে ভাবাবেগবর্জিত ও মননময়। পরবর্তীকালে আমরা পাশাপাশি সন্তোষ ও অপ্রাপ্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষ করব যে এই দুই শক্তিমানের একজন ক্রমশ নিজেকে বদলে ফেলে-ফেলে জনতার কবি হয়ে উঠছেন এবং হৃদয়ের সঙ্গে রাজপথকে জড়িয়ে নিয়েছেন। ক্রমান্বয়ে তিনি পরিণত হয়েছেন স্বদেশের ‘দায়িত্বশীল’ প্রধান কবিকণ্ঠে। অপরজন তৃতীয় কাব্যটি প্রকাশের অব্যবহিত পর বেছে নেন স্বেচ্ছানির্বাসন, স্বদেশ থেকে বহুদূর চলে যান, এমনকি আপাতবিচারে কবিতাবিশ্ব থেকেও। কবিতাবিচার সংখ্যা দিয়ে হয় না এটা মানলেও যুদ্ধধ্বস্ত ও রক্তস্নাত একটি নতুন দেশের বয়সী হয়ে ওঠা এবং তাঁর জনমানুষের মনোজগতে পরিবর্তনের পর্যায়টিতে সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি শহীদ কাদরীর শুভানুধ্যায়ীদের জন্য সকরুণ হয়ে ওঠে। তাঁরা ধরেই নিয়েছিলেন যে কবিতার পথে বুঝি আর কাদরীর পদচিহ্ন পড়বে না। যাহোক, কবি শহীদ কাদরীর চতুর্থ বা সর্বশেষ কবিতাগ্রন্থ ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৯ সালে, তাঁর দীর্ঘ নীরবতার পর। এতে ছত্রিশটি কবিতা মলাটবন্দি করে কবি তাঁর সপ্রেম সবিনয় নিবেদনের দৃষ্টান্ত রেখেছিলেন শেষাবধি।

সুদীর্ঘ নীরবতার পর সপ্রতিভ ও স্বকীয়তায় প্রোজ্জ্বল কবি শহীদ কাদরীর নতুন কবিতার বই স্বাভাবিকভাবেই কবিতাপ্রেমীদের আগ্রহের কারণ হয়েছিল। এই গ্রন্থে কবির কণ্ঠে মূল যে স্বরটি প্রকাশিত, তার পর্যালোচনায় গেলে আমরা বুঝব যে প্রবাসযাপনে বিপর্যস্ত এক প্রাজ্ঞ প্রবীণ তাঁর প্রিয়তমা মাতৃভূমির সুখস্মৃতিমগ্ন, যদিও তার ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে একই সঙ্গে গভীর অভিমান এবং প্রত্যাবর্তনের তৃষ্ণা। তবে সকল কিছু ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে স্বদেশভূমির জন্যে যুগপৎ শঙ্কা ও কল্যাণভাবনাই। ‘ভ্রাতৃরক্তে সিক্ত মাতৃভূমি’- চরণধ্বনি প্রতিধ্বনিত তাঁর বেশ কিছু কবিতায়। বাঙালিত্ব নিয়ে তিনি গর্বিত ও সুখী হলেও বাঙালির নিষ্ঠুরতা তাঁকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে বিমূঢ় কবির উচ্চারণ :

তাদের পরনে ছিল ইউনিফর্ম,

বুট, সৈনিকদের টুপি,

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাদের কথাও হয়েছিল,

তারা ব্যবহার করেছিল এক্কেবারে খাঁটি বাঙালির মতো,

বাঙলা ভাষা। অস্বীকার করার উপায় নেই ওরা মানুষের মতো

দেখতে, এবং ওরা মানুষই,

ওরা বাঙলার মানুষ...

(হন্তারকদের প্রতি, পৃ. ২২)

 

অন্তরে স্বদেশ চিরজাগরুক না থাকলে কবিতা কেন, কোনো শিল্পকর্মই সৃজন করা সম্ভবপর নয়। আমরা ভুলে যাচ্ছি না যে, ধর্মভেদনীতির ফলস্বরূপ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়া এক দেশ থেকে অন্য দেশে কিছুটা বিলম্বে হলেও শেষ পর্যন্ত আসতে বাধ্য হন শহীদ কাদরীর বাবা। বালক কাদরীর হৃদয়ে যা গেঁথে দেয় অচিকিৎস্য গভীর ক্ষত। বহু বছর পরেও দীর্ঘ পরবাসজীবনের অন্তিমে তাঁর স্বগৃহে ফেরার কালে একই ক্ষত জীবন্ত হয়ে ওঠে। সৎ কবি বলেই তিনি এই গভীর সত্যটিকে আড়াল করেন না; বলেন, ‘যতবার আমি ঘরের নিকটবর্তী হই/ কুয়াশা আক্রান্ত সেই বারান্দায় রয়েছে দাঁড়ানো আজো/ একটি অস্পষ্ট ছায়ামূর্তি- একদা কৈশোরে/ যে আমাকে জানিয়েছিল বিদায়, সেই ছায়ামূর্তি/ আজো, এখনো, আমাকে লক্ষ্য ক’রে উড়িয়ে চলেছে একটি বিদায়ী রুমাল।’ তবু নিজের মাতৃভূমি তাঁর কাছে প্রিয়তমাতুল্য- বিব্রত ও রোরুদ্যমান সেই প্রিয়তমার উদ্দেশেই তিনি তাঁর ‘সংরক্ত চুম্বনের অন্তর্লীন আগুনগুলোকে’ পৌঁছে দিতে চান। তিনি জানেন পরবাসযাপন কত যন্ত্রণাদগ্ধ হতে পারে। বিজন বিভূঁইয়ের জীবন হয়ে ওঠে ‘বিব্রত’ ও ‘নতজানু’। ‘দেখতে শুনতে হুবহু বাঙালি কৈ ও মাগুর মাছের মতো কালো’ হলেও বর্ণবাদী দেশে কাকও মার্কিন নাগরিক বটে! বাংলা শব্দের জন্য এমন সপ্রেম আর্তি শহীদ কাদরীতে আমরা আগে এত তীব্রভাবে পেয়েছি কি? ‘মার্কিনি ভাষায় কিচিরমিচির করা’ চড়ুইকে বাংলা বুলি শেখানোর জন্য তিনি ছটফট করে ওঠেন; একই কবিতার উপসংহারে তাঁর উচ্চারণ আর্তনাদের মতো শোনায় :

কাউকে বিশ্বাস নেই আর এই বিরূপ বিদেশে।

তবু বলি: যদি পারো,

হে নন্দিত মেঘ তুমি নেমে এসো

শ্রাবণে শ্রাবণে তুমি, হে বন্ধু স্পন্দিত করে দাও

এই অফুরান পরবাস।

(প্রবাসের পঙক্তিমালা, পৃ. ৪৬)

স্বাভাবিক ও সমীচীনই মনে হয় যখন কবি ঘুরে ঘুরে কবিতায় কথা বলেন দেশত্যাগের কারণ সমন্ধে, কৌশলে প্রকাশ করেন বন্ধুদের প্রতি তাঁর পুঞ্জিভূত তীব্র অভিমান। ‘স্বগতোক্তি’, ‘তাই এই দীর্ঘ পরবাস’, ‘স্বপ্নে-দুঃস্বপ্নে একদিন’- এই তিনটি কবিতায় তার মাত্রা পায় চূড়ান্ত রূপ। তবু শেষ পর্যন্ত কবি-আত্মা দৃঢ়ভাবে জানায়- ‘কোনো নির্বাসনই কাম্য নয় আর’। নির্বাসন যে কত মর্মস্পর্শী ও ভয়াবহ হতে পারে তার প্রকৃত স্বরূপ কবি ছাড়া আর কে চেনাতে পারে! তার বিবরণ হয়ে উঠেছে স্বদেশপ্রেমী ও স্বদেশমুখী সমস্ত বাঙালি সত্তার নিবিড়তম উপলব্ধি। কী সাংকেতিক ও সাঙ্গীতিকই না এসব উচ্চারণ : ‘জুঁই, চামেলি, চন্দ্রমল্লিকা কিংবা কাঠগোলাপ থেকে/ টিউলিপ ম্যাগনোলিয়া অথবা ক্রিসেনথিমামে/ নিজস্ব শহর থেকে অচেনা ফুটপাথে/ এশিয়ার আকাশে ময়ূর নীল থেকে/ কুয়াশাচ্ছন্ন পাশ্চাত্যে/ না, কোনো নির্বাসনই/ কাম্য নয়/ আর।’ (কোনো নির্বাসনই কাম্য নয় আর, পৃ. ৩৭)

শহীদ কাদরীর পূর্বের তিনটি গ্রন্থকে (উত্তরাধিকার, তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা এবং কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই) পাশে রেখে যদি পড়ি ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’, তবে এই বইটিতে কোমলগন্ধি লিরিকের সন্ধান পাব। অক্ষরবৃত্তের শক্তি আমরা দেখেছি কাদরীতে। এমনকি অন্তঃমিল ও অন্তরমিলের জাদুও। চিত্রকল্পের চমৎকারিত্ব-ভরা তাঁর কবিত্বে মোহিত হয়েছি আমরা বহুবার। এই কবিতাগুলোয় প্রবলভাবে তার দেখা না মিললেও বুঝতে অসুবিধে হয় না যে সেই অভিন্ন পরাক্রম কবির কলম থেকেই নিঃসৃত হয়েছে এসব বুদ্ধিদীপ্ত সুসম্পাদিত পঙক্তিমালা। মিলের মিষ্টতা ও চিত্তাকর্ষক চিত্রকল্প থেকে অন্তত দু-একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে চাই।

১.

বলতে পারো আমিও নাছোড়বান্দা

নানা দেশে ও বিদেশে ঘুরে

বিভিন্ন ধরনের ধান্দা জানা আছে আমারও

অতএব বলছি, আবারো বলছি:

আমি ভ্রাম্যমাণ...

(নিরুদ্দেশ যাত্রা, পৃ. ৬৪)

২.

তোমার জবার মতো চোখে রাঙা শ্রাবণের জল

পালতোলা নৌকার মতন বাঁকাচোরা ঢেউয়ে ঢেউয়ে কম্পমান

তোমার বিপদগ্রস্ত স্তন।

(আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও, পৃ. ১৭)

৩.

সেই একসময় ছিল যখন, বাংলা ভাষা থেকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল

বাংলা ভাষাকেই। সরকারি উর্দি পরা বিদেশি সৈনিকের মতো ভারী বুট পরে

সদর্পে কুচকাওয়াজ করে বেড়িয়েছে আমাদের অচেনা শব্দগুলো

(একে বলতে পারো একুশের কবিতা, পৃ. ২০)

আমরা নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম- সাত সাগরের ক্ষুব্ধ তরঙ্গে আছড়ে পড়া হারিয়ে যাওয়া বাংলা কবিতার রাজপুত্র অন্তহীন নক্ষত্রবিহীন যাত্রা শেষে আবার ফিরে এসেছেন আপন মাতৃক্রোড়ে, নিজস্ব ঠিকানায়। 

তিন.

শহীদ কাদরীর খুব বিখ্যাত একটি কবিতা- অগ্রজের উত্তর। অগ্রজের জবানিতে তুলে এনেছেন কবি তাঁর যৌবনের বিক্ষুব্ধ অবৈষয়িক দিনযাপনের কথা। পুরো কবিতাটি আজ আবার পড়ি নিবিড়ভাবে।

না, শহীদ সে তো নেই; গোধূলিতে তাকে

কখনো বাসায় কেউ কোনদিন পায়নি, পাবে না।

নিসর্গে তেমন মন নেই, তাহলে ভালোই হতো

অন্তত চোখের রোগ সযত্নে সারিয়ে তুলতো হরিৎ পত্রালি!

কিন্তু মধ্য-রাত্রির সশব্দ কড়া তার রুক্ষ হাতের নড়ায়

(যেন দুঃসংবাদ নিতান্ত জরুরি) আমাকে অর্ধেক স্বপ্ন থেকে

দুঃস্বপ্নে জাগিয়ে দিয়ে, তারপর যেন মর্মাহতের মতোন

এমন চিৎকার করে ‘ভাই, ভাই, ভাই’ বলে ডাকে,

মনে পড়ে সেবার দার্জিলিঙের সে কী পিছল রাস্তার কথা,

একটি অচেনা লোক ও-রকম ডেকে-ডেকে-ডেকে খসে পড়ে

গিয়েছিল হাজার-হাজার ফিট নীচে!

 

সভয়ে দরোজা খুলি-এইভাবে দেখা পাই তার-মাঝরাতে;

জানি না কোথায় যায়, কী করে, কেমন করে দিনরাত কাটে,

কর্মেতে মন নেই, সর্বদাই রক্তনেত্র, শোকের পতাকা

মনে হয় ইচ্ছে করে উড়িয়েছে একরাশ চুলের বদলে!

না, না, তার কথা আর নয়, সেই

বেরিয়েছে সকাল বেলায় সে তো- শহীদ কাদরী বাড়ি নেই।

আজ আগস্টের বৃষ্টিহীন বিষণ্ণ সন্ধ্যায় বাংলা কবিতার কিংবদন্তি শহীদ কাদরীর চলে যাওয়ার সংবাদ শুনে আমরা বিমূঢ় হয়ে থাকি অনেকক্ষণ। তারপর স্বগতোক্তির মতো করে তাঁর কবিতার চরণই একটু বদলে উচ্চারণ করি- তোমাকে অভিবাদন প্রিয় কবি।

এইবার তাঁর বাড়ি ফেরার সময় হলো, আমাদেরও হলো ফুরসৎ তাঁর জন্য ভাবার! তিনি ফিরবেন নিজবাসভূমে। তাঁর উজ্জ্বল পঙক্তিমালা বাঙালি পাঠকের হৃদয়ে চির আসন পেয়েছে সে তো ঢের আগেই।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি
  2. ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?
  3. সিনেমার বাজেট ৯০ কোটি, তিন দিনে ৬০ কোটির ঘরে ‘সিতারে জমিন পার’
  4. বক্স অফিসে ঘুরে দাঁড়াল আমির খান, দ্বিতীয় দিনে বাজিমাত
  5. ফের বক্স অফিসে ব্যর্থ হচ্ছেন আমির খান?
  6. করণ জোহরের শো থেকে বাদ পড়লেন চার প্রতিযোগী
সর্বাধিক পঠিত

৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি

ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?

সিনেমার বাজেট ৯০ কোটি, তিন দিনে ৬০ কোটির ঘরে ‘সিতারে জমিন পার’

বক্স অফিসে ঘুরে দাঁড়াল আমির খান, দ্বিতীয় দিনে বাজিমাত

ফের বক্স অফিসে ব্যর্থ হচ্ছেন আমির খান?

ভিডিও
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৫
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৭
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৮
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৮
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৩
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৩
নাটক : লাভ লুপ
নাটক : লাভ লুপ
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬১
গানের বাজার, পর্ব ২৩৭

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x
ইউনিজয়
ফনেটিক
English

By using this site you agree to our Privacy Policy