Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

ভিডিও
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৪
এই সময় : পর্ব ৩৮৩২
এই সময় : পর্ব ৩৮৩২
আপনার জিজ্ঞাসা (সরাসরি) : পর্ব ৮৭১
আপনার জিজ্ঞাসা (সরাসরি) : পর্ব ৮৭১
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
গানের বাজার, পর্ব ২৩৬
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০২
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০২
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৮
নাটক : বাকির খাতা ফাঁকি
নাটক : বাকির খাতা ফাঁকি
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৬
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৬
মুহাম্মদ মহিউদ্দিন
১৫:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৬
মুহাম্মদ মহিউদ্দিন
১৫:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৬
আপডেট: ১৫:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৬
আরও খবর
কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহের কবি, সম্প্রীতির কবি
আন্দোলন-সংগ্রাম, রাজনীতিতে নজরুল-সাহিত্যের প্রভাব
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী ফারিয়া বাশার
স্বাগত ১৪৩২: বাংলা নববর্ষ বাঙালির উৎসব
ঢাকার ঈদ মিছিলে মোগল ঐতিহ্য

উপন্যাস পর্ব ৬

বাবা আছে বাবা নেই

মুহাম্মদ মহিউদ্দিন
১৫:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৬
মুহাম্মদ মহিউদ্দিন
১৫:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৬
আপডেট: ১৫:৫৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

রাতে আর আমার খাওয়া হলো না। রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ সবাই চলে গেল। থাকল বাকিউল। মৌলানারা আমাকে বাকিউলের সাথে একটা ট্যাক্সিক্যাবে উঠিয়ে দিলেন। ক্যাবটি মনে হয় আগে থেকেই তৈরি ছিল। মৌলানা শরাফত খানের চোখাচোখি হলো। তাঁর চোখে জল নেই। বরং তৃপ্তির অদ্ভুত হাসি। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা আমাকে পাত্রস্থ করে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন।

বাকিউলের সাথে ক্যাবে ওঠার সময় আমি ওঁদের কাউকে পা ছুঁয়ে সালাম করিনি। সালামটা আমার মন থেকে আসেনি। সবাই হা করে তাকিয়ে ছিল। আমি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি।

ক্যাব চলছে। বাকিউল আর আমি পেছনের সিটে। বাকিউলের গা থেকে উৎকট পারফিউমের গন্ধ বেরুচ্ছে। বিয়ে উপলক্ষে নিশ্চয় সে ওটা গায়ে মেখেছে। গন্ধটা খুব অসহ্য লাগছে। ক্যাবে ওঠার পর কিছুটা দূরত্ব রেখেই বসেছিল বাকিউল। এখন কিছুটা গা ঘেঁষছে। গন্ধ বেশি লাগছে। ইচ্ছে করছে ক্যাবের দরজা খুলে লাফ দেই। যে বিয়ের পিঁড়ি থেকে বাঁচতে পারিনি আর গন্ধ থেকে বেঁচে কী হবে।

আমার ডান হাতটা টেনে নিল বাকিউল। হঠাৎ আমার গায়ে যেন বিদ্যুতের শক খেল। কেঁপে উঠলাম। লোম খাড়া হয়ে গেল। হাতটা টেনে নিতে গিয়েও টানলাম না।

বাকিউল আমার ছোট হাতটা ওর হাতের মুঠোয় পুরে নিল। হালকা পেষণ হচ্ছে। আঙুল ফুটিয়ে দিচ্ছে। বিরক্তি নিয়ে চুপ করে আছি।

খারাপ লাগছে? বাকিউল নীরবতা ভাঙল।

ক্যাব হর্ন দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি চুপ করে আছি। বাকিউল হাত ধরে ঝাঁকুনি দিল। বাকিউলের দিকে তাকাতে গিয়েও তাকালাম না।

চুপ করে আছো কেন? মন খারাপ? পুনরায় বাকিউল বলল। সামনে একজন পুলিশের হাত দেখানোতে থামল ক্যাব। দূরে আরেকজন পুলিশ আয়েস করে সিগারেট ফুঁকছে। হাত দেখানো পুলিশটি ক্যাবের জানালার পাশে এসে উঁকি দিল।
কোথায় যাচ্ছেন? জিজ্ঞেস করল পুলিশ।
বাসায়। বলল বাকিউল।
উনি কে?
আমার স্ত্রী।
আপনার স্ত্রী? অ্যাই যে আপনি কি ওনার স্ত্রী? পুলিশ আমাকে লক্ষ্য করে বলল।
চুপ করে আছি। ল্যাম্পপোস্টের আবছা আলোতে বাকিউলকে খুব অসহায় দেখাচ্ছে। বেচারা কাঁদি কাঁদি অবস্থা।
কী ব্যাপার রাবেয়া? কথা বলছো না কেন? বলল বাকিউল।
আর বলতে হবে না। নেমে আসুন। পুলিশ বলল।
ততক্ষণে অপর পুলিশটি ওপাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
ভাই বিশ্বাস করুন ও আমার বিয়ে করা স্ত্রী। আমার সাথে রাগ করে চুপ করে আছে। অ্যাই বলো তুমি আমার স্ত্রী নও। বলল বাকিউল।
মুখ খুলছি না।
চেহারা দেখতে তো ভদ্র মনে হয়। কিন্তু কাম তো করেন দুই নাম্বার। অপর পুলিশ বলল।
বাকিউল দাঁত-মুখ খিঁচে আমার দিকে তাকাচ্ছে। পারে তো এক্ষুনি খেয়ে ফেলে।
ভাইজান বেরিয়ে আসেন। প্রথম পুলিশটি আবার বলল।
বাকিউল বেরুল। আমি দরজা খুলে বেরিয়ে পুলিশের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।
ক্যাবের ভাড়া দিয়ে দিন। পুলিশ বলল।
ক্যাব ছেড়ে দিলে এত রাতে তো গাড়ি পাব না। বলল বাকিউল।
আমাদের গাড়িতেই পৌঁছে দেব।
ব্যবসাটা কতদিন হলো? প্রথম পুলিশ বলল।
কিসের ব্যবসা? বলল বাকিউল।
এই যেটা করছেন।
ফাউল কথা বলবেন না। বাকিউল কিছুটা রেগে গিয়ে বলল।
আপনিও ফাউল কাজ করবেন না। চলেন একটু নানাবাড়ি থেকে ঘুরে আসি। পুলিশ বলল।
নানা বাড়ি? বাকিউল অবাক হয়ে বলল।
হ্যাঁ নানাবাড়ি। যেখানে থাকা খাওয়া ফ্রি।
আমি চুপচাপ। বাকিউল আমার দিকে কড়মড় করে তাকাচ্ছে। দ্বিতীয় পুলিশ আমাকে আপাদমস্তক দেখছে। ভাবটা এমন যেন এক্ষুনি হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
অ্যাই গাড়িতে ওঠো। প্রথম পুলিশ ধমকের সুরে বলল।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল, এই বয়সে কামে নাইমা পড়ছ?
পুলিশের কথাটা ঠিক বুঝলাম না। আমি তাকিয়ে আছি।
বাজে কথা বলবেন না ও আমার স্ত্রী। পুলিশকে বলল বাকিউল।
হ্যাঁ। উনি যে আপনার স্ত্রী সে তো বুঝতেই পারছি। গাড়িতে উঠতে উঠতে দ্বিতীয় পুলিশ বলল। চলো থানায় গেলেই আসল স্ত্রী বেরিয়ে পড়বে।
বাকিউল পকেট থেকে মুঠোফোন বের করে কাকে যেন ফোন করল। নিশ্চয় মৌলানা কাকাকে। বিয়ের কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলল। পুলিশদ্বয় কিছুটা হতচকিত হলো।
রাত একটা পেরিয়েছে। থানায় ওসির ঘরের দেয়ালঘড়িটা তাই বলছে। এক কোণায় পাতানো একটা চেয়ারে বসে আছি। চেয়ারটির বা হাতল ভাঙা। দেয়ালের সাথে হেলানো।
বাকিউল অন্য পাশে।
নাম কি আপনার? ওসি সাহেব বললেন।
ইনকাম ট্যাক্সে আছি। উচ্চমান সহকারী। বলল বাকিউল। 
তো নিম্নমানের কাজ করছেন কেন? হাসতে হাসতে বললেন ওসি সাহেব।
প্লিজ আর বাড়াবাড়ি করবেন না। আমাদের বিয়ের কাবিননামার কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছি। এতক্ষণে হয়তো নিয়ে আসছে।
বাকিউলকে খুব বিমর্ষ দেখাচ্ছে। কাগজেকলমে তো আমি তার স্ত্রী, পুলিশ তো এখন তাই দেখবে। সুতরাং চুপ করেই থাকি। ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই।
এই যে আপনি কি ওনার স্ত্রী? ওসি সাহেব আমাকে লক্ষ্য করে বললেন।
আমি হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ালাম। বাকিউল কিছুটা আশ্বস্ত হলো।

আমাদের ধরে আনা দ্বিতীয় পুলিশটা চোখ বড় করে আমাকে দেখছে। ওসি সাহেবকে লক্ষ্য করেই বলল স্যার ওসব কথার কোনো বিশ্বাস নেই। কাগজ না দেখে ছাড়া যাবে না।
আপনার নাম কী? ওসি সাহেব বলল।
রাবেয়া। বললাম আমি।
শাড়ি পরাতে আমাকে মনে হয় বড় বড় লাগছে, তাই ওসি সাহেব আমাকে আপনি করেই সম্বোধন করছে। ভালো লাগছে। চা খাবেন? ওসি সাহেব বললেন।
রাত বাজে প্রায় দুটো। ওসি সাহেব চা খেতে বলছেন। শুনেছি পুলিশ ধরে এনে বেশ মারধর করে। আর এ দেখছি চা খেতে বলছে।
বাকিউল খাবে না বলল। আমার খুব চা খেতে ইচ্ছে করছে। ঘুম পাচ্ছে। কাকিমার দেওয়া পোলাও, মিষ্টি কিছুই তো খাইনি। ক্ষিধেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। খালি পেটে চা পড়লে সমস্যা হতে পারে।
পানি হবে? বললাম আমি।
ওসি সাহেবের চেয়ারের পাশেই মনে হয় পানির বোতল ছিল। সেটা এগিয়ে দিলেন। বোতল থেকে হা করে পানি খেতে আমার বেকায়দা হয়। তারপরও এগিয়ে গিয়ে বোতলটা নিলাম। হা করে মুখে পানি ঢালতে গিয়ে বুকের কিছু অংশ ভিজল। বাকিউল তাকিয়ে আছে।
মৌলানা শরাফত খান তাঁর বন্ধু মৌলানাকে নিয়ে হাজির। সাথে কাবিননামা।
পুলিশ কথা রেখেছে। ঝামেলা চুকিয়ে রাত তিনটার দিকে বাকিউলের বাসার গলির মুখে নামিয়ে গেছে। বাকিউল আমার হাত ধরে একটা একতলা বাড়ির সামনে এনে দাঁড় করাল। আবছা আলোতে মনে হলো বাড়িটি বেশ লম্বা। প্রতিটি বাসার আলাদা করে বারান্দা।
পকেট থেকে চাবি বের করে বাকিউল তালা খুলল।
দরজা খোলার সাথে সাথে বোটকা একটা গন্ধ বেরুল ভেতর থেকে। বাকিউলের গায়ে যে পারফিউম মেখেছিল, সেটাও পুলিশের ঘষাঘষিতে উঠে গেছে।

অন্ধকারে হাতড়ে বাতি জ্বালাল বাকিউল। চার দেয়ালের একটি ঘর। ভেতর দিকে আরো ঘর আছে। ও পাশের দরজা তাই বলছে।
দরজার পাশে একটি চকি। মাঝারি ধরনের। পাশেই লাগানো টেবিল। কিছুটা বড়সড়। একটি চেয়ার। কাঠের। বেশ পুরোনো। বাতি জ্বালানোর সাথে সাথে কয়েকটি তেলাপোকা ডানা মেলে ওড়াউড়ি শুরু করেছে। তেলাপোকা উড়লে আমার ভয় করে। এই বুঝি গায়ে এসে বসল। লোম খাড়া হয়ে যায়।
দুই দরজার কাঠের পাটাতনে পোতা পেরেকে একটি রশি টাঙানো। ওতে লুঙ্গি ও গামছা ঝুলছে। আমি চারদিকে খিলবিল করে দেখছি।
বসো। হাতের তালাটা টেবিলে রেখে বলল।

বসলাম।
টেবিলে একটি ব্যাগ। খোলা। তাতে কিছু কাপড়। আর কিছু বিছানায়। ছড়ানো ছিটানো। শাদি করতে যাওয়ার সময় নিশ্চয় তাড়াহুড়া করেছে।
ঘরটা অগোছালো। ব্যাচেলার মানুষ তো। এখন তুমি এসেছ সব ঠিক হয়ে যাবে। কথাগুলো বলে থামল বাকিউল।
রশিতে ঝুলানো লুঙ্গিটা টান দিয়ে নিল। গায়ের পাঞ্জাবিটা খুলল। আর অমনি কালো ভুড়িটা সামনের দিকে বেরিয়ে এলো।
পায়জামা পাল্টে লুঙ্গি পরল। পাল্টানো জামাগুলো বিছানায় ছুড়ে ফেলল।
বাকিউলকে ব্যাটা ব্যাটা লাগছে। অনেকটা কাকাবাবুদের মতো। রশিতে ঝুলানো গামছাটা টান মেরে কাঁধে নিয়ে ভেতর ঘরের দিকে গেল বাকিউল।
ঘরটা খুঁটে খুঁটে দেখছি। জানালায় খয়েরি রঙের একটা নোংরা তেলচিটে পর্দা ঝুলছে। গোড়ার দিকটা আবার কুচকানো। কেনার পর মনে হয় সাবান-জলের পরশ পায়নি।
দরজার কোনায় কয়েকটা সিগারেটের গোড়ালি। ব্যাটা তাহলে সিগারেটও খায়। হুঁ। ভেতর থেকে পেট গুলিয়ে যেন বমি এলো। সিগারেটের ধোঁয়া আমার কাছে অসহ্য। বাকিউল কি আমার পাশে শুয়ে সিগারেট টানবে? ব্যাপারটা ভাবতেই গা কেঁপে উঠল।
মেঝেতে বেশ ধুলোবালি। জুতোর তলায় ঘষা লেগে কচকচ করছে। টেবিল ক্লথেও তাই। কয়েকটা জায়গায় পোড়া ক্ষত। দেখেই বোঝা যাচ্ছে সিগারেটের আগুন পড়েই এ অবস্থা।
চকিতে পা ঝুলিয়ে বসে আছি। বাকিউল এখনো আসেনি। বাথরুমে মানুষ এত সময় নেয়। ছি! বাথরুমে বেশি সময় নেওয়াটাও আমার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়।

বাকিউলের কোনো ভালো গুণই আমার চোখে পড়ছে না। রাত কটা হলো বুঝতে পারছি না। দেয়ালে কোনো ঘড়ি নেই। ঘড়ি থাকবে সেটা আমি ভাবছিও না। যার ঘরে গোডাউনের মতো বিশ্রী অবস্থা, তার দেয়ালে আবার ঘড়ি!

থাক। বাকিউল উদাম গা টা মুছতে মুছতে এলো। মনে হয় স্নান সেরে এসেছে। ঘন মাথা ভর্তি চুল ভেজা। দেয়ালের কাছে গিয়ে ফ্যানের রেগুলেটার ঘুরিয়ে দিল। ফ্যানের গতি বেড়েছে। সাথে গড় গড় শব্দের মাত্রাও। অন্যান্য আসবাবপত্রের মতো ফ্যানটাও বেশ পুরোনো।

চেয়ার টেনে বসল বাকিউল। গা মোছা শেষ হয়েছে। এবার পরনের লুঙ্গিটা হাঁটু পর্যন্ত উঠিয়ে পা মুছছে। কালো পা দুটো লোমে ভর্তি। আমাদের গাঁয়ের মহিষের কথা মনে পড়ল। ওদের পাগুলো কালো কুচকুচে লোমে ভরা। এক পলক তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।
যাও। হাত-মুখ ধুঁয়ে এসো। রাত অনেক হলো। বলল বাকিউল।
কিছুই না বলে বসে রইলাম।
যাও। পুনরায় বলল বাকিউল।
যাওয়ার জন্য উঠছি। তক্ষুনি বলল দাঁড়াও।
দাঁড়ালাম।
বাকিউল ব্যাগ থেকে পাতলা একটা জামা বের করল। বলল এটা পরে এসো। ঢিলেঢালা আছে। ভালো লাগবে।
জামাটা হাতে নিলাম। সাথে একটা তোয়ালে। বাথরুমের দিকে গেলাম। সামনের ঘর থেকে একটু ভেতর দিকে গেলেই বাথরুম। পাশে ছোট্ট রান্নাঘর।
রান্নাঘরের এক কোনায় একটি কেরোসিনের স্টোভ। পাশে কয়েকটা হাঁড়ি-পাতিল। কালচে। ময়লাটে। কখনো ছালি আর সাবানের ছোঁয়া লেগেছে বলে মনে হয় না।
যাক। বাথরুমটা সেরে আসি।

ওমা একি। বাথরুমের যে দরজা নেই। পাশে টয়লেট। ওটার দরজা আছে। কাঠের। বেশ কয়েক জায়গায় ঘুণ পোকায় খাওয়া। ফোটরও আছে বেশ।
বাথরুমের একটা চাপ অনুভব করছিলাম বেশ আগে থেকেই। সেরে নিই। বাথরুম আর টয়লেট মিলে একটা কম পাওয়ারের বাতি।
ওপরে ভ্যান্টিলেশন আর দরজার ফুটো দিয়ে যেটুকু আলো আসছে তা কিঞ্চিৎ। পা-দানি দুটো আবছা দেখা যাচ্ছে। প্রথম বাঁ পা দিয়ে পাদানিতে দাঁড়ালাম। সেলোয়ারের ফিতা খুলে যেই না বসতে যাব, তখনই চোখে পড়ল ঝাঁকে ঝাঁকে তেলাপোকা। ভয়ে আমার টয়লেটের চাপ থেমে গেল। লোম খাড়া হয়ে গা শির শির করছে। কোনো রকম সেলোয়ার উঠিয়ে হাতে কুচকে ধরে লাফিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
ফোপাতে ফোপাতে চলে এলাম সামনের ঘরে।
বাকিউল উদাম শরীরে শুয়ে আছে। আমাকে হাফাতে দেখে চমকালো বাকিউল।
কী হয়েছে?
কিছুই বলতে পারছি না। বাকিউলের চোখ পড়ল আমার বুকে।
টের পেলাম ওড়না না নিয়েই আমি চলে এসেছি।
কী হয়েছে? ভয় পেয়েছ? বলল বাকিউল।
না। বললাম আমি।
তাহলে?
তেলাপোকা।
কোথায়?
টয়লেটে। একটা-দুটো নয়। শত শত।
ও...। তেলাপোকা! তোমাকে কিছু করবে না। তুমি নিশ্চিন্তে কাজ সেরে আসতে পার।
না। আমার ভয় করে।
আমি তো সেরে এলাম।
বাকিউলের চোখ বারবার চক্কর দিয়ে যাচ্ছে আমার বুকে।
ভয়ে ওড়না আনতেও যেতে পারছি না। দাঁড়িয়ে কাঁপছি। কাঁপুনিটা বাকিউল ঠিক বুঝতে পারছে না।
চকি থেকে নামল বাকিউল।
চলো। ধপাধপ হাঁটা দিল।
পিছু নিলাম আমি। গিয়ে বাথরুমের দরজায় ঝোলানো ওড়নাটা নিয়ে বুক ঢাকলাম। তারপর চলে এলাম সামনের ঘরে।
চকিতে পা ঝুলিয়ে বসলাম। এখনো হাতের লোম খাড়া হয়ে আছে।
বাথরুম থেকে ধপাস ধপাস জল ছিটানো আর শলার ঝাড়ুর শপাং শপাং শব্দ আসছে। নিশ্চয় বাকিউল তেলাপোকাগুলোকে ঝাড়ুপেটা করছে। করুক। শত শত তেলাপোকা সেখানে গিজ গিজ করছে। একটা অন্যটার ওপর চড়ে বসে আছে। সেখানে বসে কি টয়লেট সারা যায়? এখনো আমার বুকের ধুঁকফুকানি কমেনি। মাথার ওপর পাখাটি ঘুরছে। তারপরও মনে হয় আমার গা দিয়ে ঘাম ঝরছে।

ভেতর দিকে জল ছিটানো আর ঝাড়ুপেটার শব্দ থেমেছে। জড়োসড়ো হয়ে বসলাম। ফিরে এলো বাকিউল।
যাও। পরিষ্কার করে দিয়েছি। দুই-একটা তেলাপোকা থাকলেও ভয়ের কারণ নেই। বলল বাকিউল।
গামছায় উদাম গা মুছতে মুছতে চকিতে বসল।
পরিষ্কার মনে হচ্ছে। তারপরও দু-একটা তেলাপোকা ঈষৎ ওড়াউড়ি করছে। জোরে একটা নিশ্বাস নিয়ে বুকে সাহস সঞ্চয় করলাম। তারপর ঢুকে পড়লাম টয়লেটে।

ফিরে এসে দেখি বাকিউল নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা আমার কাছে বেশ বিশ্রী এবং বিরক্তিকর। চেয়ারে বসলাম। ভোর হয়ে আসছে। কোথায় শুবো ভাবছি। বাকিউলের পাশে একটি বালিশ আছে। আমি কি ওপাশে শুয়ে যাব? কারো পাশে শুতে আমার ভালো লাগে না। ঘুমই আসে না। দরজার কোণায় একটা ছেড়া মাদুর দেখতে পাচ্ছি। সেটা বিছিয়ে বালিশ নিয়ে শুয়ে পড়ি। আজ বাকিউলের সাথেই তো আমার বিয়ে হয়েছে। 

মোচড়ানো মাদুরটা এনে যেই খুলছি তখুনি কয়েকটা তেলাপোকা ফড়ফড়িয়ে বেরিয়ে পড়ল। মাদুরটা দরজার কোনায় ছুড়ে ফেলে চেয়ারে এসে বসলাম। এ ঘরের সব জায়গায় শুধু তেলাপোকা আর তেলাপোকা।
পাশ ফিরতে গিয়ে বাকিউলের ঘুম ভাঙল। আমাকে চেয়ারে বসা দেখে চোখ বড় করল।
এখনো বসে আছো? ভোর হয়ে গেল তো। এসো। শুয়ে পড়। বলল বাকিউল।
কারো পাশে শুলে আমার ঘুম আসে না।
আমি তো অন্য কেউ নই। আর স্বামীর পাশেই তো স্ত্রীকে শুতে হয়।
চুপ থেকে নিজ মনেই বললাম কে আমার স্বামী আর আমিই বা কার স্ত্রী। আমার তো বিয়েই হয়নি।
চুপ করে আছো কেন? আসো। সকালে আমার অফিস আছে।
জ্বি আচ্ছা। বললাম আমি।
জ্বি আচ্ছা মানে কি? বললাম শুয়ে পড়। মানে সকালে অফিস আছে। শুবে না?
মা ছাড়া কারো সাথে শুতে পারি না।
বেশ। একাই শো।
বলেই বাকিউল একটা বালিশ নিয়ে চকি থেকে নেমে পড়ল। তেলাপোকায় ভরা মাদুরটা নিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ল।

(চলবে)

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ফের বক্স অফিসে ব্যর্থ হচ্ছেন আমির খান?
  2. করণ জোহরের শো থেকে বাদ পড়লেন চার প্রতিযোগী
  3. ১২০ কোটির প্রস্তাব ফেরালেন আমির, ওটিটিতে মুক্তি দেবেন না সিনেমা?
  4. মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে মুম্বাই এসেছিলেন দিশা পাটানি
  5. অক্ষয় কুমারের ‘ওয়েলকাম টু দ্য জাঙ্গল’ সিনেমায় কী ঘটছে?
  6. ডিভোর্স হলেই মেয়েরা অর্ধেক টাকা নিয়ে নেয় : সালমান খান
সর্বাধিক পঠিত

ফের বক্স অফিসে ব্যর্থ হচ্ছেন আমির খান?

করণ জোহরের শো থেকে বাদ পড়লেন চার প্রতিযোগী

১২০ কোটির প্রস্তাব ফেরালেন আমির, ওটিটিতে মুক্তি দেবেন না সিনেমা?

মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে মুম্বাই এসেছিলেন দিশা পাটানি

অক্ষয় কুমারের ‘ওয়েলকাম টু দ্য জাঙ্গল’ সিনেমায় কী ঘটছে?

ভিডিও
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
এই সময় : পর্ব ৩৮৩২
এই সময় : পর্ব ৩৮৩২
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৮
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৮
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৭
গানের বাজার, পর্ব ২৩৬
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫৯

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x
ইউনিজয়
ফনেটিক
English

By using this site you agree to our Privacy Policy