ডেঙ্গুর হটস্পট রাজধানীর মিরপুর

ঢাকার তিন এলাকা থেকে ডেঙ্গু রোগী বেশি আসছে। এর মধ্যে হটস্পটে পরিণত হয়েছে মিরপুর। এরপর রয়েছে উত্তরা, মুগদা, কেরাণীগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর ও বাসাবো এলাকা।
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির এসব তথ্য জানান।
ড. আহমেদুল কবির বলেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সব হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিক, ম্যানপাওয়ার ও স্পেসগুলো তৈরি রাখার কথা বলা হয়েছে। কারণ, হাসপাতালগুলোতে ঠিক কী সংখ্যক রোগী আসবে, তা আগাম বলা যাচ্ছে না। সেজন্য প্রস্তুতিটা আমাদের রাখতে হবে। যাতে কোনো রোগী ফিরে না যায়।’
আহমেদুল কবির আরও বলেন, ‘আমরা আজ সব বড় বড় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বসেছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুগদা, মিটফোর্ড, সোহরাওয়ার্দী, কুর্মিটোলা, রাজশাহী, সিলেটসহ বিশেষায়িত ও সদর হাসপাতাল নিয়ে বসেছি।’
ডেঙ্গুতে ঢাকার বাইরেই বেশি মৃত্যু হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এতে নারীদের মৃত্যুহার পুরুষের তুলনায় বেশি। আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মাঝেই ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছেন আক্রান্তরা।’
ডা. কবির বলেন, ‘ডেঙ্গুর যে রোগী আসছে, তা ভালোভাবেই ম্যানেজ করা যাচ্ছে। তবে, যদি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তাহলে লজিস্টিক সাপোর্টের প্রস্তুতি রাখতে হবে। কারণ, ডেঙ্গু সব সময় জটিল ও ক্রাইসিসের। এটাকে রুটিনভাবে দেখলে হবে না। ব্লাড বা প্লাটিলেটের অভাব যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।’
অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির আরও বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে যেসব রোগী আছে তা ম্যানেজেবল। যেসব বেসরকারি হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে, তাদের আমরা এর আগেও ট্রেনিং দিয়েছি, আমরা তাদের একটা গাইডলাইন দেব। গাইডলাইন মেনেই যাতে তারা রোগী ভর্তি করেন। যাতে অকারণে রোগীকে হয়রানি করা না হয়। ডেঙ্গু চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় ক্রাইসিস হচ্ছে, এবার দেখছি—হাসপাতালে এসেই খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। যখন রোগী মনে করছে আমি ভালো হয়ে যাচ্ছি, তখনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। সবাই কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় রিকভারির দিকে গিয়ে রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে।’
‘প্রথম পাঁচদিনে রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই’ উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘ডেঙ্গু সিজনাল কিছু না। সারা পৃথিবীতেই যেহেতু আরবানাইজেশন হচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যেখানে জন্ম ও বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে ধ্বংস করা দরকার। এটা নিয়ে জনসচেতনতাই বেশি জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমন্বয়ের কোনো একটা জায়গায় গ্যাপ হচ্ছে, সেটা আমাদের পূরণ করতে হবে। কারণ, সিটি করপোরেশন বাইরে কাজ করছে। বাসায় নিজের পরিচ্ছন্নতা নিজেকেই করতে হবে। আরবানাইজেশনের কারণে ডেঙ্গু সারা দেশেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। সুতরাং, সচেতনতার বিকল্প নেই।’