সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরও কেন ভোটারদের অংশগ্রহণ কম, প্রযুক্তিবান্ধব তরুণ প্রজন্মের সাড়াও কেন কম ছিল এই প্রযুক্তিবান্ধব ভোটে এবং কেন সাড়া মেলেনি আশানুরূপ ভোটারের, তা নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত বলে মনে করছেন ভোট দিতে আসা বিশিষ্টজনরা।

টানা ২১ দিনের প্রচারণার ডামাডোল নগরবাসীকে যতটা নাড়া দিয়েছিল, ততটা সাড়া পড়েনি ভোটের দিনে। আজ শনিবার সকাল থেকেই কেন্দ্রমুখী ভোটারের মধ্যে কম ছিল তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি। বিশেষ করে ঢাকা উত্তরের অভিজাত এলাকাগুলোতে তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।

এ ব্যাপারে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ইসি ইয়াং ভোটারদের ওপর ডিপেন্ড করছে যে তাদের সংখ্যা বেশি হবে, হয়নি তো, কোথাও হয়নি কিন্তু এটা।’

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভোটের প্রচার বাড়াতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের যদি টার্গেট থাকে, এবার যদি তারা ততটা সাফল্য নাও দেখাতে পারে, এটা থেকে কিছু শিক্ষা নিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যেন ইয়াং ভোটারদের কাছে কীভাবে ইভিএম মেশিন চালাতে হয় কিংবা ভোট নিয়ে তাদের একটা প্রচেষ্টা নিশ্চয়ই চালাতে হবে।’

ইভিএমে ভোট দিতে খুব সমস্যা না হলেও ভোটের আগে এই প্রযুক্তির ভীতি ছিল অনেক ভোটারের মধ্যে। যারা কেন্দ্রে গিয়েছেন, তাদের উপলদ্ধি এমন হলেও ভোটারের সেই দীর্ঘ লাইন কখনোই চোখে পড়েনি কেন্দ্রগুলোতে।

ইভিএম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যেমন বুঝি না, সাধারণ মানুষ কিন্তু খুব চতুর, খুব চালাক। সবাই তো মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনের চেয়ে এটা অনেক সহজ। আমার নামটা এলো, ছবিটা এলো, আমি আশ্বস্ত হলাম। ভেতরে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর নিশ্চিত হলাম ভোট দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে ভালো আর কোনো পদ্ধতি হতে পারে না। আমি আশা করি, যারা ভোটার আছেন, এ পদ্ধতিতে বিশ্বাস বাড়বে।’

অর্থনীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘যে রকম মানুষ দেখা যায়, সে রকম তো দেখতে পাচ্ছি না। মানুষ যদি ভোট না দেয়, ডেমোক্রেসি তো চলতে পারে না।’

এদিকে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতে প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, এই নির্বাচন তারও ভাবনার খোরাক জুগিয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।

নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা ভোট কেন্দ্রগুলোতে পরিদর্শনে গেলেও গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেননি তাদের পর্যবেক্ষণ।