‘ভোটের অনাস্থায় ইভিএম অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিতর্ক এমন জায়গায় এসেছে যে, জনগণ ভোটও দিতে যাচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে, ইভিএম মানুষের মনে এমন একটা প্রশ্ন রেখেছে যে, আজকে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, মানুষ ভোট দিতেও যাচ্ছে না। কারণ পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর অনাস্থা সৃষ্টি করার জন্য ইভিএমের অনেক বড় ভূমিকা। এবং সেটা আজ প্রমাণিতও হয়েছে।’
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যে এক শতাংশ ভোট প্রিজাইডিং অফিসার অথবা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ওভাররাইট করতে পারে, যদি আঙুলের ছাপ না মিলে, তাহলে তাঁকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ওভাররাইট করার জন্য- আমরা পরবর্তী সময়ে দেখলাম তা তুলে দেওয়া হয়েছে।’
‘ইভিএম যে কী অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে তা আজকেও প্রমাণিত হয়েছে। চট্টগ্রামে যে উপনির্বাচন হয়েছে সেখানেও প্রমাণিত হয়েছে। চট্টগ্রামটা ছিল পাইল-প্রজেক্ট আর আজকে এটাকে পুরোপুরি ফাইনাল করা হয়েছে’ যোগ করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের বিভিন্ন অভিযোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে আমীর খসরু এই মন্তব্য করেন।
এ সময় বিএনপি নেতা ইভিএম নিয়ে আরো বলেন, ‘আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হয়তো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা টিপে দিচ্ছে, না হয় দলের অন্য কেউ নিজেদের প্রতীকে ভোট দিয়ে দিচ্ছে। ভোটররা বাইরে এসে কিন্তু বলেছে, আমার কাছ থেকে আঙুলের ছাপ নিয়ে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
এ সময় বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরো অভিযোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একজন মেয়র প্রার্থীকে পাশে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য এবং উনার প্রার্থীর পক্ষে উনার দলের পক্ষে প্রার্থীকে পাশে রেখে দেশের প্রধানমন্ত্রী এটা যে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয় এটা একটা রাজনৈতিকভাবে খুব খারাপ একটা উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে নির্বাচনকে যদি এভাবে প্রভাবিত করা হয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে না। প্রধানমন্ত্রী মেয়র প্রার্থীকে পাশে নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন, ভোট চেয়েছেন, যে কথাগুলো বলেছেন- এরপরে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনসহ কারো কোনা ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই।’
বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে ১২ নারী এজেন্টকে বের করে দিয়েছে। পারতপক্ষে এজেন্ট তো ঢুকতেই পারেনি। যারা ঢুকেছে তাদের মারধর করে বের করে দিয়েছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আর সাংবাদিকরা যারা গেছেন আপনারা দেখেছেন তাদের কীভাবে অসম্মান করা হয়েছে। কীভাবে তাদের অপদস্ত করা হয়েছে, ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিকের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। মারধর করেছে। এমনকি অনেক জায়গায় সাংবাদিকদের একসেস দেওয়া হয়নি।’
নির্বাচনের ফল আপনারা মেনে নেবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে, ‘কথা হলো বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে কি না। দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে।’