মেট্রোরেলের ৪ কোচ, ২ ইঞ্জিন নিয়ে মোংলা বন্দরে ভেনাস ট্রাইয়াম্ফ

মেট্রোরেলের ষষ্ঠ লাইনের শেষ চালানের চারটি কোচ ও দুটি ইঞ্জিন নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে বিদেশি জাহাজ এমভি ভেনাস ট্রাইয়াম্ফ। জাপানের কোবে বন্দর থেকে আসা এ জাহাজটি আজ রোববার (১২ মার্চ) বিকেল ৪টায় মোংলা বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে ভিড়ে।
এমভি ভেনাস ট্রাইয়াম্ফের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনশিয়েন্ট স্টিম শিপ কোম্পানির ব্যবস্থাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, মেট্রোরেলের চারটি কোচ ও দুটি ইঞ্জিন নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জাপানের কোবে বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি ভেনাস ট্রাইয়াম্ফ। এরপর আজ বিকেল ৪টায় বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে ভিড়ে এ জাহাজটি। জাহাজটিতে কোচ ও ইঞ্জিনসহ ৭৮ প্যাকেজের ৩৫৬ দশমিক ৮৬১ মেট্রিক টন মেশিনারি সরঞ্জামাদি রয়েছে। এসব পণ্য খালাসের সঙ্গে সঙ্গেই নদী পথে বার্জে (নৌযান) করে পাঠানো হবে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মেট্রোরেলের ডিপোতে।
মো. ওয়াহিদুজ্জামান আরও জানান, এ পর্যন্ত (১২ মার্চ) জাপান থেকে ১৫টি জাহাজে করে মেট্রোরেলের ২৪টি সেটে ১৪৪টি কোচ ও দুটি ইঞ্জিন এসেছে মোংলাবন্দরে। মোট ১৪৪টি কোচ-ইঞ্জিনের মধ্যে কোচ ৯৬টি আর ইঞ্জিন হলো ৪৮টি।
ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রথম চালান আসে গত বছরের ২৮ মার্চ। প্রথম চালানে এসেছিল ৬টি রেলওয়ে কোচ। আর চলতি বছরের ১২ মার্চ চারটি কোচ ও দুটি ইঞ্জিন আসার মধ্যদিয়ে শেষ হলে মেট্রোরেলের ষষ্ঠ লাইনের শেষ চালানের পণ্যের আমদানি, খালাস ও পরিবহণ।’
শিপ কোম্পানির ব্যবস্থাপক আরও বলেন, ‘ঢাকায় মেট্রোরেলের লাইন হবে ছয়টি। ছয়টি লাইনের কোনোটি উত্তরা, কোনোটি মতিঝিল, কোনোটি মিরপুর ও কোনোটি বারিধারাসহ অন্যান্য জায়গায় যাবে। এই ছয়টি লাইনের মধ্যে ষষ্ঠ লাইনের ১৪৪টি কোচ-ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির শেষ চালান এসেছে আজ। এর মধ্যদিয়ে ষষ্ঠ লাইনের সব পণ্য আমদানি সম্পন্ন হয়েছে। এর পরও বাকি থাকছে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম লাইনের কোচ- ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি আমদানির কাজ।’
তবে চলতি মাসেই প্রথম ও পঞ্চম লাইনের মালামাল আমদানির আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের কথা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন শিপ কোম্পানির ব্যবস্থাপক। এ টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর আবারও মোংলা বন্দর দিয়ে আসবে মেট্রোরেলের বাকি সব লাইনের মালামাল। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাকি লাইনের মালামাল নিয়ে কবে নাগাদ বিদেশি জাহাজ আসবে মোংলা বন্দরে, তা তিনি নিশ্চিত জানাতে পারেননি। তবে মেট্রোরেলের মালামাল শুধু মোংলা বন্দর দিয়েই আমদানি, খালাস ও পরিবহণ হয়ে আসছে। বাকি মালামালও মোংলা বন্দর দিয়েই আসবে বলে জানান ওয়াহিদুজ্জামান।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, ‘মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রজেক্টের পণ্য আসছে মোংলা বন্দর দিয়েই। যেমন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর মালামাল আসছে মোংলা বন্দর দিয়েই। এর আগে পদ্মা সেতুর মালামালও এসেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সমুদ্র বন্দর দিয়েই। বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দিনকে দিন মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা। এ ছাড়া পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এতে স্বল্প সময়ে ও কম খরচে মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ বন্দরের কর্মচাঞ্চল্য ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সময়মতো প্রয়োজনীয় সব ধরনের সেবা নিশ্চিতে প্রস্তুত রয়েছেন মোংলা বন্দরের সব বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।’