কিশোরগঞ্জে পরিবহন শ্রমিকদের একাংশের ডাকে গতকাল শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বাস ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। এবার জেলার পরিবহন মালিক সমিতির ডাকে আজ রোববার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে জেলা সদরের গাইটাল ও বত্রিশ আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাস ধর্মঘট অব্যাহত থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

এর আগে অবিলম্বে মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের দাবিতে শনিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু হয়। জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন অংশ এ ধর্মঘট ডেকেছিল। রাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার সকাল থেকে ওই ধর্মঘট স্থগিত করা হয় বলে জানান শ্রমিক ইউনিয়নের বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন মিয়া।

অন্যদিকে গতকাল ধর্মঘটের ডাক দেওয়া শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তারসহ বিচারের দাবিতে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আজ রোববার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট আহ্বান করে।

এর আগে শনিবার রাতে মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সভা হয়। সেখানে জেলা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (আরটিএ) না জানিয়ে হঠাৎ করে একতরফা বাস ধর্মঘট ডাকায় শ্রমিকদের সমালোচনা করা হয়। সভায় ধর্মঘট আহ্বানকারী শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানানো হয়।

জেলার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সমস্যাসহ পরিবহন সংক্রান্ত বিষয়াদি সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও মালিক-শ্রমিক নেতাদের অংশগ্রহণে জেলা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি কমিটি রয়েছে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ওই কমিটির সভাপতি। জেলা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন।

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মুরাদ রেজা বলেন, শ্রমিকদের একটি অংশ নিয়ম মোতাবেক আরটিএকে না জানিয়ে অন্যায়ভাবে গতকাল বাস বন্ধ রেখেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন মিয়া বলেন, ‘ধর্মঘট আহ্বান করে আমরা কোনো অন্যায় করিনি। যথাসময়ে নির্বাচন হওয়াটা আমাদের অধিকার। কিন্তু মালিক সমিতির একটি অংশের ব্যর্থতার কারণে নির্বাচন হচ্ছে না।’

কাঞ্চন মিয়া আরো বলেন, মালিক সমিতি কখনোই শ্রমিকদের স্বার্থ দেখে না, সব সময়ই শোষণ করে আসছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় একাধিকবার দাবি জানানোর পরও শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে চায় না এবং নিয়মিত মজুরি দেয় না।

জেলা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম আলম জানান, উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।