অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড তদন্তে এফবিআইকে স্বাগত জানাল বাংলাদেশ

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের তদন্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছে সরকার। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী আজ রোববার সরকারের এ সম্মতির কথা জানিয়েছেন।
আজ বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের অবহিত করার সময় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মাহমুদ আলী। সেখানে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
আজ বার্তা সংস্থা ইউএনবি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির উল্লেখ করে জানায়, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল, তাদের খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআই যে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে তা সরকার ইতিবাচকভাবে নিয়েছে এবং তা এরই মধ্যে কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনীতিকদের জানান, গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। তিনি এই সহিংসতা ও নির্বিচার হামলা থেকে মানুষকে রক্ষায় সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথাও জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও অহিংস আদর্শকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করতে বিএনপি-জামায়াত জোট সহিংসতা চালাচ্ছে।’ গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যানবাহনে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যাকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের সহিংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সসহ অন্য কূটনীতিকরা। দেশগুলোর পক্ষ থেকে একটি যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ইউএনবি।
বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, পররাষ্ট্রসচিব ও মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পরদিন শুক্রবার এই হত্যার তদন্তে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করে এফবিআই। এ জন্য তদন্ত সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অভিজিতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
গতকাল শনিবার ওয়াশিংটনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তদন্তে আগ্রহের কথা জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে একদল দুর্বৃত্ত। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান অভিজিৎ।