পৌর মেয়রসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়ার সান্তাহারে দুটি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পৌর মেয়রসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার সকালে আদমদীঘি থানায় এই মামলা করা হয়।
সংঘর্ষে নিহত সান্তাহার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলামের বড় ভাই সান্তাহার সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি নূর ইসলাম বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সান্তাহার পৌরসভার মেয়র ও সান্তাহার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টুকে প্রধান আসামি করে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টু, আদমদীঘি উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এন এইচ মিলন, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস হাসান সুমন, সান্তাহার পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুল লতিফ, সান্তাহার পৌর যুবলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা সুটু, ইজিবাইক ব্যবসায়ী আঙ্গুর হোসেন, জাতীয় পার্টির নেতা শিবলীসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত হিসেবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আদমদীঘি থানার উপপরিদর্শক(এসআই) মো. শাহীন রেজা জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টু, সান্তাহার পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুল লতিফ ও জাতীয় পার্টির নেতা সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য জোর তৎপরতা ও বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এদিকে আজ সকালেও শফিকুল হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সান্তাহার রেল স্টেশন এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতে শান্তাহার শহরের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরে নিহত শফিকুলের পরিবারের পক্ষ থেকে শহর ও আশপাশের এলাকায় মাইকিং করে এসব ঘটনাকে গুজব বলে অভিহিত করে তাতে কান না দিয়ে স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনাসহ সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরে ওই সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলামের লাশ দাফনের আগে শহরে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নওগাঁ ৪৩ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। দিনব্যাপী শহরের বিভিন্ন স্থানে বিজিবিকে টহল দিতে দেখা গেছে।
শুক্রবার দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক মালিক-শ্রমিক বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনায় যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, তাঁর ছোট ভাই বাসেদুল ইসলাম বাদশা, সিএনজিচালিত অটোটেম্পো শ্রমিক সোহাগ হোসেনসহ ১০ জন আহত হন। আহতদের নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুলকে মৃত ঘোষণা করেন। বাদশাকে রাজশাহী ও সোহাগকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল শনিবার সকালে সেখানে সোহাগের মৃত্যু হয়।