ভোলায় দুই গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ

ভোলায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন দুই গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ও সকাল ৮টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার দুটি গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।
দুই গৃহবধূকেই ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত এক গৃহবধূর বাবা মো. সেলিম জানান, ভোরে সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চরকালী গ্রামে তাঁর মেয়েকে মামাশ্বশুর, দেবর ও শাশুড়ি মিলে ঘরের দরজা বন্ধ করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। তিনি (সেলিম) নির্যাতনের খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মেয়েকে উদ্ধার করে অচেতন অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সেলিম আরো জানান, তাঁর মেয়ের কাছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সেই টাকা দিতে না পারায় নাতি মো. হৃদয়কে ভোলা শহরে নিয়ে যান মেয়ের শাশুড়ি। নাতিকে দেখতে গেলে আজ ভোরে ঘরের দরজা বন্ধ করে তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
ওই গৃহবধূর মা ময়ফুল বেগম বলেন, যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় তাঁর মেয়ের শরীর গরম পানি দিয়ে ঝলসে দিয়েছে জামাতা ফারুক। ঝলসে দিয়েছে ডান হাত। এখন সেই ঘাঁ না শোকাতেই আবার হামলার শিকার হয়েছে তাঁর মেয়ে।
ময়ফুল বেগমের অভিযোগ, বর্তমানে অচেতন অবস্থায় তাঁর মেয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। অথচ হাসপাতালের চিকিৎসকরা কোনো চিকিৎসা দিচ্ছেন না।
এদিকে সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার চর সামাইয়া ইউনিয়নের বড় চর সামাইয়া গ্রামের চৌকিদার বাড়িতে গৃহবধূরকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিন সন্তানের জননী ওই নারী অভিযোগ করেন, তাঁকে পিটিয়ে আহত করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁর একটি চোখ নষ্ট হওয়ার পথে।
ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুজনের ছবি তুলতে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজিয়া সাংবাদিকদের বাধা দেন। একই সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করে রোগী না দেখেই তাঁর কক্ষে গিয়ে বসে থাকেন। এ সময় তাঁকে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকজনের সঙ্গে আলাপরত অবস্থায় দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলার সিভিল সার্জন মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এরা কীভাবে রোগীদের সেবা দিবে বলতে পারছি না। ডাক্তার রোগীর সেবা না দিয়ে যদি ভালো ব্যবহার না করে, তাহলে কীভাবে চিকিৎসা দিবে?
সিভিল সার্জন পরবর্তী সময়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শরীফকে ডেকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে দুপুর ১টা পর্যন্ত সব ধরনের ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশ নিষেধ করে দেন।
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় মামলা নেওয়া হচ্ছে। অপরাধীদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে।