‘শান্ত কেন্দ্রে’ পুলিশের গুলি, এনটিভির সাংবাদিক আহত!

ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুরে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের সময় পুলিশের গুলিতে আহত ভোলায় এনটিভির স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আফজাল হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হচ্ছে।
ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও অর্থোপেডিক সার্জন ডা. শরীফুল ইসলামের পরামর্শ অনুযায়ী আজ শনিবার তাঁকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
urgentPhoto
গত ৩১ মার্চ দ্বিতীয় দফার ইউপি নির্বাচনে ৪ নম্বর রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত হন আফজাল। এ বিষয়ে সে সময় ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, দুই মেম্বার পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হচ্ছিল। ঘটনাস্থলেই ছিলেন সাংবাদিক আফজাল হোসেন। এ সময় পুলিশের শটগানের গুলি ‘আনফরচুনেটলি’ তাঁর পায়ে গিয়ে লাগে।
ওসি আরো বলেন, আসলে তখন দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হচ্ছিল। তারা ভোটকেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়ই পুলিশের শটগানের গুলি কোনোভাবে ওই সাংবাদিকের পায়ে লেগে গেছে।
ঘটনার দিনই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আফজাল হোসেনের পায়ের মাংস থেকে গুলিটি বের করেন ডা. শরীফুল ইসলাম। তবে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে সাংবাদিক আফজাল হোসেন জানান, নির্বাচনের দিন বিকেল ৫টার এনটিভির দেশের খবরে নিজ এলাকার খবর সরাসরি প্রচারের কথা ছিল তাঁর। সে জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় জুলহাস নামের এক পুলিশ কনস্টেবলকে শটগানে গুলি ভরতে দেখেন তিনি। হঠাৎ একটি গুলি এসে তাঁর পায়ে লাগে। প্রথমে তিনি কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি, ভেবেছিলেন বোমা হামলা হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে থাকা এক বিডিআর সদস্যের চিৎকারে বুঝতে পারেন বোমা নয়, তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা ক্যামেরাপারসন ও পরিচিত একজন আনসার সদস্য দ্রুত তাঁকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনার পর এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি আফজালের। এ ছাড়া ঘটনার সময় ওই কেন্দ্রে কোনো সংঘর্ষ বা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর আজ শনিবার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, নির্বাচনের দিন সাংবাদিক আফজাল হোসেন রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর পাশেই ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ওই সময় পাশের কেন্দ্রের গণ্ডগোল হয়। তখন গণ্ডগোল থামাতে গুলি করলে একটি গুলি আফজাল হোসেনের পায়ে লাগে।
এই ঘটনা তদন্তে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মামুন অর রশিদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন।
তদন্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে মামুন অর রশিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, নির্বাচনের পর বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা অব্যাহত থাকায় এখনো আফজাল হোসেনকে গুলির ঘটনা তদন্ত করা শুরু হয়নি। খুব শিগগির তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
নির্বাচনের দিন রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহিংসতা হয়নি বলে জানালে মামুন অর রশিদ বলেন, ৩১ মার্চ ইউপি নির্বাচনের দিন প্রত্যেক কেন্দ্রেই কম-বেশি সহিংসতা হয়েছে। রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র কতটুকু সহিংস অবস্থায় ছিল তা তদন্ত করলেই বের হয়ে যাবে। তখন গুলি করার কারণও জানা যাবে।’