মঙ্গল-বুধবার হরতালের ডাক জামায়াতের

মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার প্রতিবাদে আগামী মঙ্গল ও বুধবার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, সরকার জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। এর ‘প্রতিবাদে এবং এ মুহূর্তে তাঁর মুক্তির দাবিতে ৭ ও ৮ এপ্রিল মঙ্গল ও বুধবার দেশব্যাপী দুদিনের সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা’ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন, ‘সরকার জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে। মিথ্যা, সাজানো বায়বীয় অভিযোগে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সরকার ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে। দলীয় লোকদের দ্বারা সাক্ষ্য প্রদান করিয়ে সরকার মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে হত্যা করার জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার ব্যবস্থা করে।’
অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জামায়াতে ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, ‘দেশবাসী আশা করেছিল রিভিউ আবেদনে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। আজ মাননীয় আদালতের প্রদত্ত রায়ে দেশবাসী হতাশ হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।’
এর আগে আজ সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন। এতে করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল থাকল।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ায় ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
কামারুজ্জামানের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির রায়ের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, কামারুজ্জামান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না, সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।