ওসি সালাহউদ্দিনের পরিবারে মাতম

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন গোপালগঞ্জ শহরের মানুষের কাছে ‘লুই’ নামেই পরিচিত ছিলেন। এলাকায় এলে প্রতিবেশী ও পরিচিত মানুষদের খোঁজখবর নিতেন। তাদের ভালো-মন্দ দেখতেন। সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন সবাইকে সহযোগিতা করার। প্রতিবছর ঈদের সময় গরিব মানুষকে নতুন কাপড় ও টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতেন।
কিন্তু এবার ঈদে আর সেই সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলেন না ওসি সালাহউদ্দিন। গতকাল শুক্রবার রাতে গুলশানে রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় দায়িত্ব পালন করার সময় গুলিতে নিহত হন চৌকস এ পুলিশ কর্মকর্তা।
লুইয়ের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়ায় তাঁদের নিজ বাসায় আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী ছুটে আসেন। বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ভিড় করেন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। তাঁরা শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার সময় নিজেরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সালাহউদ্দিনের বাবা আবদুল মান্নান খান ছিলেন গোপালগঞ্জ এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সাত ভাই আর চার বোনের মধ্যে লুই ছিলেন পঞ্চম। বাবার মৃত্যুর পর তিনিই পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। পুরো পরিবারটিই ছিল তাঁর ওপর নির্ভরশীল।
কাঁদতে কাঁদতে ওসি সালাহউদ্দিনের বড় ভাই বলেন, ‘আমার ভাইয়ের লক্ষ্য ছিল নিরপরাধ মানুষদের উদ্ধার করা। সেখানে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁকে জীবন দিতে হলো। মিরপুরের দায়িত্ব পালনকালে তিনি একটি মসজিদ নির্মাণে সাহায্য করেছিলেন। আমি আল্লার কাছে এই হত্যার বিচার চাই।’
সকালে বাসায় আসা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, ওসি সালাহউদ্দিন ছিলেন গোপালগঞ্জ শহরের গর্ব। তাঁর মৃত্যুতে এ শহরের মানুষ একজন সজ্জন ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে হারিয়েছে।
বাসায় গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। খবর পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয়স্বজনরা আসছেন।