‘বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগও পিএসসির মতো’

বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকার শিক্ষক নির্বাচন ও নিয়োগ সংক্রান্ত আইনে কিছু সংশোধনী আনতে যাচ্ছে। মূলত রাজনৈতিক প্রভাব ও অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতোই কয়েক ধাপে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যোগ্যরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
এ জন্য বছরভিত্তিক শূন্যপদের সংখ্যা নির্ধারণ এবং এর ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচনসহ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নন-গভর্নমেন্ট টিচার্স রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন অথরিটি (এনটিআরসিএ) ‘হোল্ডিং অব নন-গভর্নমেন্ট টিচার্স রেজিস্ট্রেশন এক্সাম অ্যান্ড সার্টিফিকেশন রুলস ২০০৬’-এর কিছু সেকশনে সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এনটিআরসিএ নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী জাতীয়ভাবে মেধা তালিকা করে শিক্ষকদের নিয়োগ ও প্রার্থী নির্বাচন করার বিষয়টি বিবেচনা করছে।
এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান আশিষ কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা পিএসসির মতো তিন পর্যায়ে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে প্রার্থী নির্বাচন ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেবে।’
শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, এসএমসি/জিবি নেতা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে অনেকগুলো সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে শিগগিরই সংশোধনী কার্যকর হবে বলেও বার্তা সংস্থা বাসসকে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, দেশব্যাপী ১৯ হাজার বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, তিন হাজার ৫০০ কলেজ এবং নয় হাজার ৫০০ মাদ্রাসা রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধাবী প্রার্থী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন।
শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান (এন আই খান) বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি সময়োপযোগী করার জন্য ‘হোল্ডিং অব নন-গভর্নমেন্ট টিচার্স রেজিস্ট্রেশন এক্সাম অ্যান্ড সার্টিফিকেশন রুলস ২০০৬’-এ সংশোধনী আনা হচ্ছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন যোগ্য শিক্ষক এবং কেবলমাত্র মেধাভিত্তিক শিক্ষক নির্বাচন ও নিয়োগই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।’
শিক্ষা সচিব আরো বলেন, ‘বর্তমান পরীক্ষা বিধিমালা অনুযায়ী পৃথকভাবে প্রার্থীরা দুটি বিষয়ে ৪০ শতাংশ নম্বর পেয়ে নির্বাচিত হয়ে আসতে পারেন। এর ফলে বিদ্যমান শূন্যপদের বিপরীতে প্রার্থীসংখ্যা বেড়ে যায়। শূন্যপদের সংখ্যা সীমিত, অনেক কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী প্রায়ই অবৈধ উপায়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যান।’