বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত রক্তদাতা-রক্তগ্রহীতা মিলনমেলায়  বাংলাদেশ গড়তে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজকর্মীরা।

আজ বুধবার (১৪ জুন ২০২৩) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগী ও দুই শতাধিক স্বেচ্ছায় রক্তদাতার ব্যতিক্রমী এক মিলনমেলা বসে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএসএমএমইউর মেডিসিন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ।

এ মিলনমেলায় থ্যালাসেমিয়া রোধে বাহকে-বাহকে বিয়ে বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোধে রক্ত পরীক্ষার বিকল্প নেই। পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ার বাহক নির্ণয় ও তালিকাকরণ জরুরি। বিশেষ করে বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় রক্ত পরীক্ষার সনদ বাধ্যতামূলক করতে পারলে দেশকে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত করার ক্ষেত্রে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সফলতা আসবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ থ্যালাসেমিয়া রোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরবেন বলে আশ্বাস দেন।

স্বেচ্ছায় রক্তদাতারা নীরবে তাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রক্ত দান করে যান। রক্তদানের সময় তাঁরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জানেন না, তাঁর রক্ত কোন মানুষটির শরীরে বইবে। একইভাবে রোগীদের কাছেও অচেনা থেকে যান রক্তদাতারা।

দেশে প্রথমবার রক্তদাতা-গ্রহীতার এ মেলবন্ধনে রক্তগ্রহীতারা স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। আবেগাপ্লুত হয়ে সজল নয়নে ধন্যবাদ জানান। রক্তদাতারাও নিজেদের দায়িত্ববোধ আর ভালো লাগার কথা জানিয়ে বলেন, রক্তদানের মাধ্যমে এ সেবা দিতে পেরে তাঁরা গর্বিত ও আনন্দিত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের উপদেষ্টা সৈয়দ দীদার বখত। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে বলেন, বিয়ের আগে রক্তপরীক্ষার কারণে তাঁরা থ্যালাসেমিয়াকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছে। অদূর ভবিষ্যতে একইভাবে বাংলাদেশও একদিন থ্যালাসেমিয়ামুক্ত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অপর বিশেষ অতিথি হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. এ কে মো. মোস্তফা আবেদীন তার বক্তব্যে দেশের সব থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় এবং তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক (মোটিভেশন) এম রেজাউল হাসান। এ সময় ৪১ বারের স্বেচ্ছা রক্তদাতা উম্মে সালমা মৌসুমী ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রক্তগ্রহীতা মায়িশা বিনতে শাহাদৎ তাদের অনুভূতি ও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারী।