তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে আগামীকাল রোববার (৪ মে) গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ পর্যন্ত এই গণপদযাত্রায় নদীপাড়ের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অংশ নেবেন। পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

আজ শনিবার (৩ মে) দুপুরে রংপুরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু। 

সংবাদ সম্মেলনে আসাদুল হাবীব বলেন, ভারত বাংলাদেশের ভালো চায় না। তারা তিস্তার পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে এ দেশের উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমি করে তুলেছে। বিগত সরকারের সময় তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। ফলে প্রতি বছর তিস্তার আগ্রাসনে হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারা হচ্ছে। তিস্তাপাড়ের মানুষের আর্তনাদে এ অঞ্চলের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। তাই তিস্তাকে রক্ষা করা আমাদের জরুরি। এ অঞ্চলের মানুষ জেগে উঠেছে। নিজস্ব অর্থায়নে হলেও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

আসাদুল হাবীব আরও বলেন, “তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন রোডমার্চ, মানববন্ধন, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও বিগত সরকারের আমলে কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তবে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তিস্তাপাড়ের মানুষজন এ বছরের ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার ১১ পয়েন্টে তাঁবু খাটিয়ে একযোগে কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এই কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেন। তা সত্ত্বেও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি আমলে নেয়নি।’

ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির সময় ঘোষণা করা হয়েছিল, ‘যতদিন তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে।’ সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল রোববার গণপদযাত্রা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।

গণপদযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজুন্নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ভরসা ও রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেকসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।