আ.লীগ নিষিদ্ধের ক্ষমতা সরকারের হাতেই আছে : অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সরকারের হাতেই আছে। বিদ্যমান আইনেই নিষিদ্ধ করা সম্ভব। ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের করা কালো আইনের ১৯ ধারায় বিষয়টি স্পষ্ট করা আছে।’
আজ শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বণিক সমিতি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছরে ৭০০ মানুষ গুম হয়েছে। সাড়ে চার হাজার মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ৬০ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা ও গয়েবি মামলা হয়েছে। সব অপরাধই মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। জাতিসংঘের তদন্তে গুম খুন গণহত্যার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়েছে। এসব অপরধের বিচার হতে হবে। তা না হলে দিনের ভোট রাতে করার বিরুদ্ধে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তারা আমাদের অভিশাপ দেবেন। সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আসামিরা যত শক্তিশালী হোক না কেন, আইনের হাত অনেক শক্তিশালী।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আওয়াজ উঠেছে। হত্যা-খুনের বিচার হবে। গায়েবি মামলা থেকে মুক্তি পাবে। চাঁদাবাজি থেকে মুক্তি পাবে। লুটেরাদের কবর রচনা হবে। বাংলাদেশের ভোটাধিকার ফেরানোর জন্য সবকিছু করা হবে। আমাদের স্লোগান, ‘আমার ভোট আমি দেব—যাকে ইচ্ছে তাকে দেব’। আমাদের দায়িত্ব হলো আপনাকে ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে পৌঁছে দেওয়া। আপনি ইচ্ছেমতো পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।’
‘গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর একজন মানুষও গুমের শিকার হয়নি’ উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পুলিশ একটি মিথ্যা মামলা করেনি। বাংলাদেশকে একটি বসবাসযোগ্য আবাসভূমি হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার পালনে কাজ করা হচ্ছে। আইন পরিবর্তন করার এখনই সময়।’
চাঁদাবাজি, লুটপাট, মাদক, ঘুষ, কমিশন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের শুধু বদলি নয়, একটি করে মামলা ধরিয়ে দেওয়া হবে। বিরোধীদলে কারও কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হলেই ব্যবস্থা। সরকার জনগণের ট্যাক্সের টাকায় উন্নয়নকাজ করে থাকে। সেই উন্নয়নকাজে দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, জেলা চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, শৈলকুপা বণিক সমিতির সভাপতি আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর সবুর খান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন বাবর ফিরোজসহ অন্যান্যরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
সভায় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সমস্যাসহ দাবি তুলে ধরেন। অ্যাটর্নি জেনারেল দাবিগুলো পূরণে উপস্থিত ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মীদের আশ্বস্ত করেন।
প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যেও সভায় ব্যবসায়ীরা ছাড়াও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল নেতাকর্মী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে উপস্থিত হন।