নাটোরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২

নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপির মতবিনিময় সভায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল শনিবার (১০ মে) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উপজেলার চাঁচকৈড় শিক্ষা সংঘ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে শর্টগানের গুলিতে বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজের সমর্থক পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুফি মো. আবু সাঈদ ও বিএনপিকর্মী আফতাব হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল থেকে শিক্ষা সংঘের মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপি কমিটির কার্যক্রমে গতিশীলতা ও দলকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে একটি মতবিনিময় সভা চলছিল। সভার শেষ পর্যায়ে জেলা বিএনপির ১নং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বক্তব্যের শেষের দিকে জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল গ্রুপের নাজমুল করিম নজু প্রতিবাদ জানায়। এ সময় উভয় পক্ষই উত্তেজিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু বলেন, আমাদের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকারের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার বলেন, জেলা বিএনপির ১নং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ বিএনপি নেতাদের নাম উল্লেখ্য করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বক্তেব্যের শেষদিকে প্রতিবাদ জানান আমাদের সমর্থক নাজমুল করিম নজু। তখন উত্তেজিত হয়ে তাদের লোকজন আমাদের লোকজনের ওপরে হামলা করে। গুলিবর্ষণের অভিযোগ সত্য নয়। তাছাড়াও আমি নেতৃবৃন্দের সাথে সভাস্থলেই ছিলাম।
জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি কমিটির কার্যক্রমে গতিশীলতা ও দলকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে এর আগে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিলো হাসমারী এলাকায়। সেই স্থান পরিবর্তন করে শনিবার শিক্ষাসংঘ মাঠে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়েছিল। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক মতবিনিময় সভা শেষের দিকে এসে আমাদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। আমাদের কোনো সমর্থক গুলিবর্ষণের সাথে জড়িত নয়।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ বলেন, ওই সভায় সভাপতিত্ব করছিলাম আমি। সভায় বক্তব্য দেওয়ার শেষ দিকে হঠাৎ আমার ওপর উত্তেজিত হয়ে পরেন নাজমুল করিম নজু। এ সময় আমার সমর্থকরা প্রতিবাদ জানাতে গেলে আরও উত্তেজিত হয়ে পরেন তারা। তারপর কি হয়েছে আমার জানা নেই। কারণ, আমি সভাস্থলের মধ্যেই ছিলাম। বাইরে কি হয়েছে বলা সম্ভব নয়।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, বিএনপির মতবিনিময় সভায় নিজেদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছে পুলিশ ২ রাউন্ড শর্টগানের খোসা উদ্ধার করেছে। বর্তমানে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।