বৃষ্টি কমতেই ঢাকার বাতাসে দূষণের হানা

লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিন সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকাতেও টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আজ শনিবার (৩১ মে) সকাল থেকে বৃষ্টির পরিবর্তে চলছে মেঘের সঙ্গে সূর্যের লুকোচুরি। বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর বায়ুমানে দারুণ উন্নতি দেখা দিলেও রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ফিরেছে দূষণ।
আজ শনিবার (৩১ মে) সকাল ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৫, অর্থাৎ বায়ুমান ছিল মাঝারি। তবে বেলা ১১টায় তা আরও অবনতি হয়ে ৮৮-তে দাঁড়িয়েছে, যা সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর সূচক থেকে মাত্র ১২ পয়েন্ট দূরে।
এই সময়ে ১৯১ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে তালিকার শীর্ষস্থান অধিকার করে রেখেছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। আর ১৫৯, ১৫৮ ও ১৩৫ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে চীনের বেইজিং, পাকিস্তানের লাহোর ও মিসরের কায়রো।
ঢাকার বাতাসের মান গত কয়েকদিনের চেয়ে খারাপ হলেও আজ দূষিত শহরের তালিকার ২০তম স্থানে ঠাঁই হয়েছে শহরটির।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘মাঝারি’, আর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
একিউআই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদ্রোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।