ঈদের পর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইশরাকের

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথের দাবিতে চলমান আন্দোলন আপাতত পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য শিথিলের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপিনেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এর মধ্যে তার শপথের ব্যবস্থা না করলে ফের আন্দোলনে নামবেন।
আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল ৩টার পর নগর ভবনে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এমন ঘোষণা দেন ইশরাক হোসেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা ঈদের জন্য আজ থেকে আন্দোলন শিথিল ও বিরতি দিচ্ছি।’
ঈদের পর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘অনতিবিলম্বে শপথ আয়োজন করা না হলে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথ আয়োজন করা হবে। মেয়রের চেয়ারে কে বসবে, তা নির্ধারণ করবেন দক্ষিণের বাসিন্দারা। নগর ভবনে বহিরাগতদের কোনো ঠাঁই হবে না।’
ইশরাক হোসেন শপথ আয়োজনের দাবিতে নগর ভবনের ফটকে গত ১৫ মে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এতে কার্যত বন্ধ রয়েছে ডিএসসিসির সব ধরনের সেবা কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে আছে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা।
ডিএসসিসির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন। সে বছরেরই ৩ মার্চ নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে মামলা করেন ইশারাক।
এরপর গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার।
অন্যদিকে, চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর তাকে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
তবে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায় এবং ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ। সেই রিটের শুনানি নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে গত ২২ মে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে মেয়র ঘোষণা ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ২৬ মে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। পরের দিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে লিভ টু আপিলটি। শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে গত বৃহস্পতিবার আদেশ দেন আদালত। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন জানায়, বিএনপিনেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনার রায়ের কপি হাতে পেলে সে অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সেসবের কোনো কিছুই হাতে পায়নি ইসি।