ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, দুর্গত এলাকায় ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ১৫টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভাঙার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও পানিবন্দি অনেক মানুষ এখনও শুকনো খাবার বা বিশুদ্ধ পানি পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনা, অলকা, শালধর এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুর, দেড়পড়া, দৌলতপুরসহ অন্তত ১৫টি স্থানে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় তীব্র স্রোতের পানিতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। নিরুপায় মানুষ উঁচু জায়গা বা পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
মুন্সিরহাট গাইনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আছমা আক্তার বলেন, রাতেই ঘরে পানি ঢুকেছে। কিছু জিনিস ওপরে তুলতে পেরেছি। খাবার-দাবার কিছুই নেই, পানি খেতেও ভয় লাগছে। এখনও কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি।
নাপিতকোনা গ্রামের জাহানারা বেগম বলেন, গতকাল বাঁধ রক্ষা করতে স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করেছি, লাভ হয়নি। এখন প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয়ে আছি, কিন্তু খাবার-পানি নেই। বিদ্যুৎ-নেটওয়ার্ক না থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকায় শুকনো খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট পাঠানো হয়েছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন, তাদের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। তবে বুধবার বৃষ্টিপাত কিছুটা কমেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার জানান, মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। তিনি বলেন, উজানে বৃষ্টি বন্ধ না হলে ভাঙনের ঝুঁকি থাকবে।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফুলগাজী ও পরশুরামে ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। রান্না করা খাবারও সরবরাহ করা হচ্ছে।