মাস্টার্সের অবিবাহিত ছাত্রীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা!

বেগম বোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) মাস্টার্সের শেষ বর্ষের অবিবাহিত ছাত্রীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা! সেই টাকা যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী সদস্যের জামাতার নগদ অ্যাকাউন্টে। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোছা. নুরনাহার বেগমের সুপারিশে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে নুরনাহার বেগমের সুপারিশে ইউনিয়নের তালেব মেম্বারপাড়ার মৃত আব্দুল ওহাবের মেয়ে আক্তারিনা আক্তারকে (বেরোবির ছাত্রী) গর্ভবতী দেখিয়ে মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করা হয়। আবেদনপত্রে স্বামীর নাম দেওয়া হয় ‘পায়েল’ এবং একটি গর্ভধারণের সনদপত্রও সংযুক্ত করা হয়। এরপর তা অনুমোদন পেয়ে প্রতি মাসে ৮০৫ টাকা করে ভাতা যাচ্ছে ওই ইউপি সদস্যের জামাতার নগদ অ্যাকাউন্টে। ইউপি সদস্যের জামাতা তার স্ত্রীর নাম আক্তারিনা দাবি করলেও প্রকৃত নাম সুরাইয়া আক্তার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আক্তারিনা আক্তার বেরোবিতে পড়াশোনার পাশাপাশি এক প্রতিবন্ধী ভাইয়ের দেখভাল করেন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ভালনারেবল উইমেন বেনেফিট (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রমের আওতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে আবেদন করার পর তার নামে আগে থেকে মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে বেরোবির শিক্ষার্থী আক্তারিনা বলে, ‘আমি অবিবাহিত, এই ভাতা সম্পর্কে কিছুই জানি না। যারা এটি করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’
স্থানীয়দের দাবি, এমন জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকৃত উপকারভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। অনিয়মে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগম বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। আমার মেয়ে অসহায়, তার বয়স কম হওয়ায় অন্যজনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর দিয়ে কার্ড করেছি।’
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা মোস্তারি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অবিবাহিত তরুণীর নামে হওয়া ভাতা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন অনৈতিক কাজ অপ্রত্যাশিত। তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’