রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সম্মিলিত পরিষদ কাজ করবে

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সংকট, ডলারের অস্থিরতা ও এলডিসি উত্তরণ-উত্তর বাণিজ্য বাস্তবতায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিখাত পোশাক শিল্প নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিল্পবান্ধব নীতি সহায়তা আদায়ে এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কাজ করবে সম্মিলিত পরিষদ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক মিট দ্য প্রেসে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নির্বাচনি জোট সম্মিলিত পরিষদের নেতারা এসব কথা বলেন। এতে বক্তব্য দেন সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, পরিষদের প্যানেল লিডার আবুল কালাম ও সমন্বয়ক ফারুক হাসান। তাদের বক্তব্যে সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে সব সদস্যকে নির্বাচনমুখী হতে এবং একটি আধুনিক, শক্তিশালী বিজিএমইএ গঠনে মতামত জানানোর আহ্বান জানানো হয়।
মিট দ্য প্রেসে মনিরুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ীরা যাতে কোন মামলার কারণে হয়রানির শিকার না হয়, তার জন্য আলোচনা হয়েছে। আগের মতো এখন আর হয়রানি হচ্ছে না। যাদের নামে মামলা হয়েছে, এদের মধ্যে ক্লিন ইমজের কেউ থাকলে, তারা মামলা থেকে বের হয়ে যাবে। এনিয়ে ক্লোজ মনিটরিং হচ্ছে। কাজ হচ্ছে। যাতে সবাই মিলে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি।
দ্বায়িত পেলে চাটুকারমুক্ত বিজিএমইএ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক ব্যবসায়ীর গত সরকারের নির্লজ্জ চাটুকারিতা করেছেন, এটা আমরা দেখেছি। সামনে তাদের চাটুকারিতা আরও দেখতে চাই না। অতীতে আমরা দেখেছি, আমাদের অনেক ব্যবসায়ী এমন চাটুকারিতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমরা বিব্রত হয়েছি। অবশ্য এগুলো তারা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে করেছে। এজন্য সব জায়গায় দলীয়করণ করা হয়েছিল। নির্বাচিত হলে আমরা আগামীতে এগুলো প্রতিহত করব।
সংকটে আমরা সামনে থাকি জানিয়ে মনিরুজ্জামান বলেন, এটা আমরা বারবার প্রমাণ করেছি। নেতৃত্বের জন্য এই পরিষদ গত ২০ বছর ধরে বিজিএমইএর আস্থার প্রতীক হয়ে আছে। সরকারি অনেক কাজ আমরা করে থাকি। যেমন ইউডি প্রদানের দায়িত্ব বিজিএমইএ কাছে আনা, দৃষ্টিনন্দন অফিস তৈরি ইত্যাদি। এটি আমাদের সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্বে করেছিলাম। অতীতের মতো আগামীতে আমরা এভাবে পোশাক খাতের উন্নয়নে কাজ করব।
বিজিএমইএর নেতৃত্বে আমরা খুব দায়িত্ববান মন্তব্য করে মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা অতীতে যেভাবে সংকটে বিজিএমইএকে নেতৃত্ব দিয়েছি, ভবিষ্যতেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। এই সংগঠন কেবল পোশাক রপ্তানিকারকদের নয়, এটি দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই এর নেতৃত্বে দায়িত্ববান, পরীক্ষিত ও কার্যকর লোকের প্রয়োজন।
সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, বিশ্বব্যাপী চরম প্রতিযোগিতার এই সময়ে প্রয়োজন অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ও গভীর বোঝাপড়ার। আমরা বিজিএমইএকে এমন এক আধুনিক ও সেবাকেন্দ্রিক সংগঠনে রূপ দিতে চাই, যেখানে সদস্যদের প্রয়োজনই হবে নীতিনির্ধারণের মূল ভিত্তি।
মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ২১ মে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। সেখানে উঠে আসবে বিজিএমইএর ডিজিটাল রূপান্তর, সদস্যদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস, নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা, এসএমই কারখানাগুলোর টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা, নবায়নযোগ্য জ্বালানির (সোলার) ব্যবহার বাড়ানো, মেড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিংকে জোরদার করা। আমরা গত দুই দশক ধরে বিজিএমইএর সদস্যদের স্বার্থে মাঠে থেকেছি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও সেবামুখী বিজিএমইএ গঠনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নবীন উদ্যোক্তা ও এসএমই কারখানার উন্নয়ন আমাদের অগ্রাধিকার।
সমাপনী বক্তব্যে মুস্তাজিরুল শোভন ইসলাম বলেন, এই নির্বাচন শুধু নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সময় নয়, বরং বিজিএমইএকে নতুন যুগে প্রবেশ করানোর দিকনির্দেশক মুহূর্ত।