Skip to main content
NTV Online

শিশু-কিশোর

শিশু-কিশোর
  • অ ফ A
  • জবর খবর
  • আজব
  • রহস্য
  • ধাঁধা
  • জানো কি
  • তোমাদের জন্য
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিশু-কিশোর
ছবি

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

কানে নজরকাড়া লুকে জাহ্নবী কাপুর

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

ভিডিও
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৩৮
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫২
রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১৭:১৯, ২৭ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ১৭:২১, ২৭ জুলাই ২০১৬
রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১৭:১৯, ২৭ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ১৭:২১, ২৭ জুলাই ২০১৬
আরও খবর
আমি মালালা বলছি: দীর্ঘাঙ্গী হওয়ার প্রার্থনা
আমি মালালা বলছি: আজব শান্তি
আমি মালালা বলছি: রক্তাক্ত চত্বর

আমি মালালা বলছি

মালালা কে?

রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১৭:১৯, ২৭ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ১৭:২১, ২৭ জুলাই ২০১৬
রোজা শাওয়াল রিজওয়ান
১৭:১৯, ২৭ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ১৭:২১, ২৭ জুলাই ২০১৬

গ্রীষ্মের শেষ দিকের এক সকালে স্কুলের জন্য তৈরি হওয়ার সময় বাবার চোখে পড়ল, করাচির স্কুল থেকে দেওয়া আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি এমন একটি ছবি রাতের বেলা নড়ে গেছে। ছবিটা তাঁর খুব পছন্দ ছিল এবং তিনি সেটা তাঁর বিছানার ওপর টাঙিয়ে রেখেছিলেন। ওটা ঝুঁকে থাকায় তিনি কেমন বিরক্ত বোধ করলেন। অস্বাভাবিক তীক্ষ্ণ কণ্ঠে তিনি মাকে বললেন, দয়া করে ওটা সোজা করে রাখো।

সেই সপ্তাহেই আমাদের গণিত শিক্ষিকা মিস শাজিয়া প্রায় হিস্টিরিয়াগ্রস্তের মতো স্কুলে এলেন। তিনি আমার বাবাকে বললেন, তিনি দুঃস্বপ্ন দেখেছেন যে আমি ভয়াবহভাবে পুড়ে যাওয়া পা নিয়ে স্কুলে এসেছি এবং তিনি সেটা রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তিনি বাবাকে অনুনয় করলেন, যাতে তিনি কিছু রান্না করা ভাত দরিদ্রের দেন, কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে গরিবদের ভাত দেওয়ার সময় সেখান থেকে যদি দুটি ভাত মাটিতে পড়ে, সেগুলো যদি পিঁপড়া ও পাখিতে খায়, তারাও আমাদের জন্য দোয়া করবে। বাবা খাওয়ানোর পরিবর্তে টাকা দিতে চাইলেন, তখন মিস বিহ্বল হয়ে বললেন যে দুটো ব্যাপার এক হলো না।

আমরা মিস শাজিয়ার এই স্বপ্ন দেখাকে হেসে উড়িয়ে দিলাম, কিন্তু এর পর আমি নিজেই দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলাম। বাবা-মাকে কিছুই বলিনি। কিন্তু যখনই বাইরে যেতাম, তখনই মনে হতো বন্দুকধারী তালেবান আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে বা আফগানিস্তানের মহিলাদের মতো আমার চেহারাও এসিডে ঝলসে দেবে। আমি বিশেষ করে ছেলেদের ঘোরাঘুরির জায়গাটাকে ভয় পেতাম। মাঝেমধ্যে আমার পেছনে কারো পায়ের আওয়াজ শুনতাম এবং কল্পনা করতাম, কোনো অবয়ব ছায়ার ভেতর অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।

বাবা সাবধানতা অবলম্বন করেননি, আমি তা করলাম। রাতে আমি সবাই ঘুমিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতাম। মা, বাবা, ভাই, অন্য পরিবারটি এবং গ্রাম থেকে আসা কোনো অতিথি ঘুমানোর পর প্রতিটি দরজা-জানালা পরখ করতাম। বাইরে গিয়ে নিশ্চিত হয়ে আসতাম যে সামনের ফটকে তালা দেওয়া আছে। আমার কক্ষটা ছিল সবার সামনে, অনেক জানালা ছিল এবং আমি পর্দা খুলে রাখতাম। আমি সবকিছু দেখতে চাইতাম। যদিও বাবা তা না করতে বলেছিলেন। তারা আমাকে মারতে চাইলে ২০০৯ সালেই মারতে পারত, আমি বললাম। কিন্তু আমি চিন্তিত ছিলাম যে কেউ একজন একটা মই দিয়ে দেয়ালের ওপর উঠে জানালা ভেঙে ঢুকে পড়বে।

এর পর আমি প্রার্থনা করতাম। রাতে আমি অনেক প্রার্থনা করতাম। তালেবান ভাবে আমরা মুসলমান নই, কিন্তু আরো বেশি আল্লাহকে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করি, তিনি আমাদের রক্ষা করবেন। আমি আয়াতুল কুরসি পড়তাম, কোরআনের দ্বিতীয় সুরা, সুরা বাকারার সিংহাসনের পঙক্তি। এটা খুবই বিশেষ একটি আয়াত, আমরা বিশ্বাস করি যে এটা তিনবার পড়লে রাতে বাড়ি শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে। পাঁচবার পড়লে রাস্তাটা এবং সাতবার পড়লে সম্পূর্ণ এলাকা নিরাপদ থাকবে। তাই আমি সাতবার বা তারও বেশি পড়তাম। এর পর আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম, আমাদের হেফাজত করুন। প্রথমে আমার বাবা এবং পরিবারকে, এর পর আমাদের সড়ককে, এর পর আমাদের পুরো মহল্লা এবং এর পর পুরো সোয়াতকে। এর পর আমি বলতাম, না, সব মুসলমানকে। তার পর না শুধু মুসলমানদের নয়, সব মানুষকে হেফাজত করুন।

আমি পরীক্ষার সময়েই সবচেয়ে বেশি প্রার্থনা করতাম। এটা এমন একটা সময়, যখন আমি এবং আমার সব বন্ধু দিনের পাঁচটি প্রার্থনার সবগুলোই করতাম, আমার মা যেমনটি চান। বিকেলেই কাজটা সবচেয়ে কঠিন মনে হতো, আমি টিভির সামনে থেকে নড়তেই চাইতাম না। পরীক্ষার সময় বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করলেও আমাদের শিক্ষকরা সাবধান করে দিতেন, তোমরা পরিশ্রম না করলে আল্লাহ তোমাদের নম্বর পাইয়ে দেবেন না। আল্লাহ তাঁর আশীর্বাদ আমাদের ওপর বর্ষণ করবেন, যদি আমরা সৎ থাকি।

তাই আমি বেশি পড়াশোনা করতাম। সাধারণত পরীক্ষার সময় আমি কী পারি, তা দেখিয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকে, তাই আমি পরীক্ষা পছন্দই করতাম। কিন্তু ২০১২ সালের অক্টোবরের দিকে পরীক্ষা ঘনিয়ে এলে আমি চাপে পড়ে গেলাম। গত মার্চের মতো মালকা-ই-নূরের কাছে পরাস্ত হয়ে দ্বিতীয় হতে চাইনি। তখন সে আমাকে আমাদের স্বাভাবিক ব্যবধান এক বা দুই মার্কে হারায়নি, পাঁচ মার্ক বেশি পেয়েছিল। ছেলেদের স্কুলের পরিচালক আমজাদ স্যারের কাছে অতিরিক্ত পড়া করছিলাম। পরীক্ষা শুরুর আগের রাতে আমি ৩টা পর্যন্ত জেগে আস্ত একটা পাঠ্যবই পুরোটাই একবার পড়ে ফেললাম।

৮ অক্টোবর সোমবার প্রথম পরীক্ষা ছিল পদার্থবিজ্ঞান, আমি পদার্থবিজ্ঞান ভালোবাসি, কারণ এটা সত্য দ্বারা গঠিত, তত্ত্ব এবং নিয়মের দুনিয়া, এটা আমার দেশের রাজনীতির মতো এলোমেলো বা পেঁচানো-ঘোচানো কিছু না, পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টার অপেক্ষায় থেকে আমি পবিত্র আয়াতগুলো পড়তে থাকলাম। পরীক্ষা শেষ করলাম, কিন্তু বুঝতে পারছিলাম শূন্যস্থান পূরণে একটা ভুল করে ফেলেছিলাম। নিজের প্রতি এত রাগ হলো যে আমি প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলাম। সেটা ছিল মাত্র এক মার্কের একটা প্রশ্ন; কিন্তু আমার মনে হলো যেন প্রলয়ংকরী কিছু একটা ঘটে যাবে।

বিকেলে বাসায় ফিরে আমার খুব ঘুম পাচ্ছিল। পরের দিন পাকিস্তান পরিচিতি পরীক্ষা। আমি আরো মার্কস হারানোর শঙ্কায় শঙ্কিত ছিলাম, তাই দুধ দিয়ে কফি বানিয়ে ঘুমের শয়তানকে তাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। মা এসে একটু কফিটা খেয়ে দেখলেন, পছন্দ করলেন এবং পুরোটাই গিলে নিলেন। আমি তো আর তাঁকে বলতে পারি না, দয়া করে থামো, ওটা আমার কফি। কিন্তু কাবার্ডে আর কফি ছিল না। আরো একবার আমি রাত জেগে আমাদের স্বাধীনতা ইতিহাস সম্পর্কে লিখিত পাঠ্যবই মুখস্থ করতে থাকলাম।

সকালে স্বাভাবিকভাবেই আমার বাবা-মা আমার ঘরে এসে আমাকে জাগিয়ে তুললেন। নিজে থেকে জেগেছি এমন স্কুলের দিন আমি মনে করতে পারি না। অন্যান্য দিনের মতই মা আমাদের নিয়মিত প্রাতরাশে চিনি দেওয়া চা চাপাতি এবং ডিমভাজি তৈরি করে দিলেন।

আমি, বাবা, মা, খুশাল ও অতল সবাই একসঙ্গে নাশতা করলাম। মায়ের জন্য সেটা একটা বিশেষ দিন, কারণ সেই বিকেলেই মা আমাদের কিন্ডারগার্টেনের পুরোনো শিক্ষক মিস উলফাতের কাছ থেকে লিখতে ও পড়তে শিখবেন।

বাবা অতলকে ক্ষেপাতে শুরু করলেন, ওর বয়স তখন আট এবং সে ভয়ানক দুষ্টু। দেখ, অতল, মালালা বড় হয়ে প্রধানমন্ত্রী হলে তুমি তার সচিব হবে। অতল খুব রেগে গেল। না, না, না সে বলল। আমি মালালার চেয়ে কিছু কম না, আমি প্রধানমন্ত্রী হব এবং সে হবে আমার সচিব। এমন ঠাট্টার ঝগড়া করতে করতে আমার এত দেরি হয়ে গেল যে আমি কেবল অর্ধেকটা ডিম খেতে পারলাম এবং গুছিয়ে ওঠারই সময় পেলাম না।

আমি যতটা ভেবেছিলাম, পাকিস্তান পরিচিতি পরীক্ষা তার চেয়ে ভালো হলো। জিন্নাহ কীভাবে প্রথম মুসলিম আদিনিবাস হিসেবে আমাদের দেশটাকে গড়ে তুলেছিলেন, এ ব্যাপারে প্রশ্ন এলো এবং বাংলাদেশের জন্মের জাতীয় ট্র্যাজেডির ব্যাপারেও প্রশ্ন হলো। ভাবতেই অবাক লাগে, হাজার মাইল পার্থক্য থাকার পরও এই বাংলাদেশ একসময় পাকিস্তানের অংশ ছিল। আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম এবং আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে পরীক্ষা ভালো হবে। পরীক্ষা শেষে আমি বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম। এবং স্কুলের দপ্তরি শের মোহাম্মদ বাবা স্কুলবাস আসার খবর জানিয়ে ডাক দেওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিলাম।

বাসটি প্রতিদিন দুবার ট্রিপে যায় এবং সেদিন আমরা দ্বিতীয় ট্রিপে ছিলাম। আমরা স্কুলে থাকতে পছন্দ করতাম এবং মানব বলল, পরীক্ষা দিয়ে আমরা ক্লান্ত। বাসায় যাওয়ার আগে একটু গল্প করে নেওয়া উচিত। পাকিস্তান পরিচিতি পরীক্ষাটা ভালো হাওয়ায় আমি হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলাম, তাই রাজি হলাম। সেদিন আমার কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না। আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম। কিন্তু ১৫ বছর বয়স হওয়ায় বাইরে রাস্তায় আমরা যেতে পারব না, তাই ছোট একটা মেয়ে আমার জন্য ভুট্টা কিনতে পাঠালাম। আমি এর অল্প একটু খেয়ে অন্য একটা মেয়েকে বাকিটা দিয়ে দিলাম।

বারোটার দিকে দপ্তরি বাবা লাউডস্পিকারে আমাদের ডাকলেন। আমরা দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামলাম। অন্য মেয়েরা দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাসে ওঠার আগে চেহারা ঢেকে নিল। আমি মাথায় ওড়না পরতাম, কিন্তু কখনোই চেহারা ঢাকতাম না।

দুজন শিক্ষকের জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমি উসমান ভাইজানকে কৌতুক বলতে অনুরোধ করলাম। তাঁর কাছে অসম্ভব হাসির কিছু গল্পের সংগ্রহ আছে। সেদিন তিনি গল্প বলার বদলে জাদুর কৌশলের মাধ্যমে একটা নুড়িপাথর অদৃশ্য করে দিলেন। কীভাবে করেছেন দেখান, আমরা সবাই শোরগোল করে উঠলাম, কিন্তু তিনি দেখালেন না।

সবাই তৈরি হলে তিনি তাঁর সঙ্গে সামনের সারিতে মিস রুবি এবং দুটো ছোট বাচ্চাকে বাসালেন। আরেকটা ছোট মেয়ে কান্নাকাটি করে বলল, সেও সেখানে বসতে চায়। উসমান ভাইজান না বললেন, সেখানে জায়গা ছিল না, তাকে আমাদের সঙ্গে পেছনেই থাকতে হবে। কিন্তু তার জন্য আমার খারাপ লাগায় আমি উসমান ভাইজানকে রাজি করলাম যেন তাকে সেখানে বসতে দেয়।

মা অতলকে আমার বাসে চড়তে বলে দিয়েছিলেন, তাই সে প্রাইমারি স্কুল থেকে হেঁটে এখানে আসত। সে পেছনের হাতল ধরে ঝুলতে পছন্দ করত, কিন্তু উসমান ভাইজান এতে রেগে যেতেন। সেদিন উসমান ভাইজান যথেষ্ট বকা দিলেন। অতল খান, ভেতরে বসো, নইলে আমি তোমাকে নেব না, তিনি বললেন। অতলের হঠাৎ জিদ চেপে গেল। তাই সে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে কিছু বলে বন্ধুর সঙ্গে হেঁটেই বাসায় গেল।

উসমান ভাইজান বাস চালু করলেন এবং আমরা রওনা দিলাম। আমি আমার ভালো বন্ধু জ্ঞানী মনিবার সঙ্গে কথা বলছিলাম, কোনো কোনো মেয়ে গান গাইছিল, আমি সিটের ওপর আঙুল দিয়ে তাল মেলাচ্ছিলাম। মনিরা আর আমি পেছনের খোলা দিকে বসতে পছন্দ করতাম, যাতে বাইরের সবকিছু দেখতে পাই, দিনের ওই সময়টায় হাজি বাবা রোডে, রঙিন রিকশা, পথচারী এবং স্কুটারে চড়া লোক—সব প্যাঁ প্যাঁ করতে করতে তালগোল পাকিয়ে থাকে। লাল ও সাদা পারমানবিক মিসাইল আঁকা ট্রাইসাইকেলে চড়ে এক আইসক্রিম বিক্রেতা ছেলে পেছনে পেছনে আসছিল, আর আমাদের দিকে হাত নাড়াচ্ছিল, এক শিক্ষিকা তাকে তাড়িয়ে দিল। এক লোক মুরগির গলা কাটছিল, রাস্তায় রক্ত ফোঁটায় ফোঁটায় পড়ছিল। আমি আঙুল দিয়ে তাল মেলালাম। ঘ্যাঁচ, ঘ্যাঁচ, ঘ্যাঁচ,। টপ, টপ, টপ। ব্যাপারটা মজার, ছোটবেলায় আমরা বলতাম যে সোয়াতিরা এত শান্তিপ্রিয় যে মুরগি জবাই করার মতো লোক পাওয়ায় কঠিন হতো।

বাবার আন্দোলনের পরও মানুষ সেই জলাশয়ে ময়লা ফেলত, সেই গন্ধের সঙ্গে বাতাসে ডিজেল রুটি এবং কাবারের গন্ধ ভেসে এলো। কিন্তু আমরা ময়লার গন্ধে অভ্যস্ত ছিলাম। তদুপরি শিগগিরই শীত আসবে। তুষার পড়বে, এতে সবকিছু পরিষ্কার এবং নিশ্চুপ হয়ে যাবে।

বাসটি মূল সড়ক থেকে সেনাবাহিনীর চেক পয়েন্টের দিকে ঘুরল। শামিয়ানা ঢাকা ছোট এক গোলা দোকানে পাগল পাগল চোখওয়ালা দাড়িওয়ালা এবং পাগড়ি পরা কয়েকটা লোকের ছবির নিচে ওয়ান্টেড টেররিস্ট লেখা পোস্টার ছিল। সবার ওপরের কালো পাগড়ি এবং দাড়িওয়ালা লোকটা ছিল ফজলুল্লাহ। সোয়াত থেকে তালেবান তাড়ানোর সাময়িক অভিযান শুরু হওয়ার তিন বছর পেরিয়েছে আগেই। আমরা আর্মির প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলাম, কিন্তু এখনো কেন সেনাবাহিনী বাড়ির ছাদে মেশিনগানের আখড়া বানিয়ে রাখছে বা চেক পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকে, সেটা ঝুঝতে পারতাম না। আমাদের উপত্যকায় প্রবেশ করতেও মানুষের প্রশাসনিক অনুমতি প্রয়োজন হতো।

ছোট পাহাড়ের ওপর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটা শর্টকাট। তারপরও এই রাস্তা খুব ব্যস্ত থাকে, কিন্তু সেদিন সেটা অদ্ভুতভাবে নীরব ছিল। সব মানুষ কই? আমি মনিবাকে জিজ্ঞেস করলাম। বাসের সব মেয়ে গান গাইছিল আর গল্প করছিল এবং আমাদের কণ্ঠ বাসের ভেতরই প্রতিধ্বনিত হতে লাগল।

এ রকম সময়ই, ছয় বছর বয়সে স্কুল ছাড়ার পর মা প্রথমবার স্কুলের দরজার ভেতর দিয়ে লেখাপড়া শিখতে ঢুকছিলেন।

আমি খেয়াল করিনি দুই তরুণ হঠাৎ রাস্তায় বেরিয়ে এসে ভ্যানটাকে থামিয়ে দিয়েছিল। তাদের একজন জিজ্ঞেস করল, মালালা কে? প্রশ্নের জবার আমি দিতে পারিনি, না হলে আমি তাদের বুঝিয়ে দিতাম কেন আমাদেরকে, মেয়েদেরকে এবং তাদের নিজের বোন এবং কন্যাসন্তানদেরও স্কুলে যেতে দেওয়া উচিত।

পরের দিনের পরীক্ষার জন্য কী কী পড়তে হবে, এটাই ছিল আমার সর্বশেষ ভাবনা। তিনটি বুলেটের দুম, দুম, দুম নয়। আমার মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছিল মুরগির মাথা কেটে এক এক করে সেগুলো নোংরা রাস্তায় ফেলে দেয়ার ঘ্যাঁচ, ঘ্যাঁচ, ঘ্যাঁচ, টপ, টপ, টপ শব্দ।

(চলবে)

 

আমি মালালা বলছি মালালা ইউসুফজাই

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. বক্স অফিস : ৪ দিনে ১৬০ কোটির ঘরে ‘হাউসফুল ৫’
  2. মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?
  3. আদিত্যের সঙ্গে প্রেমে শিক্ষা হয়েছে, কোন ভুলটা আর করতে চান না অনন্যা?
  4. ‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি
  5. যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ
  6. মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল
সর্বাধিক পঠিত

বক্স অফিস : ৪ দিনে ১৬০ কোটির ঘরে ‘হাউসফুল ৫’

মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?

আদিত্যের সঙ্গে প্রেমে শিক্ষা হয়েছে, কোন ভুলটা আর করতে চান না অনন্যা?

‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি

যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ

ভিডিও
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫১
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x
ইউনিজয়
ফনেটিক
English

By using this site you agree to our Privacy Policy