বাবা-মায়ের যেসব ভুলে শিশু হয়ে ওঠে জেদি, দ্রুত অভ্যাস বদলে ফেলুন

প্রত্যেক বাবা-মা সবসময় তাদের সন্তানদের জন্য সর্বোত্তমটাই চান। জীবনদর্শন শেখানোর চেষ্টাও করেন। কারও কারও সন্তান আবার বেশ বাধ্য হয়, কিন্তু কোনো কোনো বাচ্চার মধ্যে দেখা যায় বাঁধনছাড়া জেদ। বাবা-মায়েরা তাদের লালন-পালনের ক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করেও, কখনো কখনো তাদের কিছু অভ্যাস শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জেদি বাচ্চারা তাদের জিদের কারণে কারও কথা শোনে না এবং এর কারণে তাদের বাবা-মা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩ থেকে ৭ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে জেদ সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। এই সময়ে যদি সঠিকভাবে শিশুদের পরিচালনা করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হবে। ভবিষ্যতে বাচ্চারা এতটাই জেদি হয় যে, কোনোভাবেই বাবা-মায়ের কথা শুনতে চায় না। কিছু না পেলেই হাত-পা ছুড়ে কান্নাকাটি। তাই আজ আমরা আপনাকে সেই অভ্যাসগুলো সম্পর্কে বলব, যা আপনার সন্তানকে জেদি করে তুলতে পারে। তাহলে আসুন জেনে নিই বাবা-মায়ের এমন কী কাজ, যা তাদের সন্তানদের জেদি করে তোলে।
রাগ করা
বাবা-মায়ের কোনো কারণ ছাড়াই বারবার রেগে যাওয়া বাচ্চাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর হতে পারে। ফলে সন্তানের তার বাবা-মায়ের প্রতি টান কমতে শুরু করে। এ ছাড়াও ঘন ঘন রাগের কারণে বাচ্চারা তাদের চিন্তাভাবনা আপনার কাছে প্রকাশ করতে পারে না। তাই রাগ না করে বুঝিয়ে বলুন।
প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ
যখন বাচ্চাদের সমস্ত ইচ্ছা সহজেই পূরণ হয়ে যায়, তখন তারা ভাবতে শুরু করে যে তারা যা চাইবে এবং যখনই চাইবে তখনই পাবে। এজন্য সন্তানের প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ করা তাদের আরও জেদি করে তোলে। এই ধরনের শিশুরা অন্যদের সমস্যা বুঝতে পারে না এবং তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য যেকোনো কিছু করতে শুরু করে।
সবার সামনে সমালোচনা করা
প্রত্যেক বাচ্চার আত্মসম্মান জ্ঞান থাকে। তবে অনেক বাবা-মা সেই নিয়ে কোনো ভাবনা চিন্তাই করেন না। ফলে সবার সামনেই সন্তানের নিন্দা করা, অন্যের সঙ্গে তুলনা করার মত কাজগুলো করে ফেলেন। এমনকি খুব খারাপভাবে সমালোচনাও করতে পিছপা হন না তারা। কিন্তু আপনার এই ভুলই সন্তানের মনে প্রভাব ফেলে এবং সে ধীরে ধীরে জেদি হয়ে ওঠে। আপনার এই কাজে সে মনে মনে অপছন্দ করতে শুরু করে। তাই সচেতন হন ও সমালোচনা করা বন্ধ করুন।
ভুল উপেক্ষা করা
বাবা-মায়ের ভুল উপেক্ষা করা সন্তানদের জেদি করে তুলতে পারে। যখন শিশুরা ভুল করে এবং বাবা-মায়েরা তা উপেক্ষা করে, তখন শিশুটি মনে করে যে তাদের ভুলের কোনো পরিণতি বা শাস্তি হবে না। এটি শিশুর আচরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করা এবং তাদের ভুলের পরিণতি বোঝানো।
মারধর করা
অনেক সময় বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের ভুল করলে মারধর শুরু করে। এটি শিশুর আত্মবিশ্বাসের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মারধরের কারণে শিশুরা জেদি হয়ে উঠতে শুরু করে। তাই এবার থেকে আপনাকেও হতে হবে শান্ত ও সচেতন।
শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাচ্চাদের সৌজন্য প্রকাশ করতে শেখানো উচিত। তার কাছে যেটি রয়েছে এবং সে যা পাচ্ছে, তার পরিবর্তে তাকে ধন্যবাদ জানাতে শেখাতে হবে। এতে করে দেখবেন আপনার শিশু অনেকটাই শুধারবে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই