Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

ভিডিও
নাটক : প্রেমিক কৃষক
নাটক : প্রেমিক কৃষক
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫৫
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৭
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪৩
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪৩
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮২
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
আপডেট: ০০:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
আরও খবর
ড. জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টায় হামলাকারীর যাবজ্জীবন
হৃদয় মণ্ডলকে মুক্তি দিন, নইলে আমাকেও গ্রেপ্তার করুন : জাফর ইকবাল
সফলতা লাভে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই : জাফর ইকবাল
‘শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামানোর প্রক্রিয়াগুলো নিষ্ঠুর ও দানবীয়’
অবশেষে অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

সাদাসিধে কথা

বই লেখার গল্প

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
আপডেট: ০০:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আমাদের বইমেলাটি নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ ব্যাপার। পৃথিবীর অন্যান্য বইমেলায় শুধু বই বেচাকেনা হয়। একুশের বইমেলা দেখলে মনে হয় এখানে বই বেচাকেনাটি বুঝি মূল লক্ষ্য নয়। মূল লক্ষ্য হচ্ছে উৎসব! বইমেলার কোন একটা কোণায় গালে হাত দিয়ে বসে মেলায় আসা মানুষগুলোকে দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দেয়া যায়।

বইমেলায় কত রকম স্টল, আর তার ভেতর কত রকম বই। যারা বইগুলো নেড়েচেড়ে দেখেন তারা হয়ত কখনও কল্পনাও করতে পারেন না যে এর প্রত্যেকটা বইয়ের পেছনে লেখকের একটা গল্প আছে। এখন বই ছাপানো খুব সোজা হয়ে গেছে, যে কেউ চাইলেই গ্রন্থকার হতে পারে, যখন বিষয়টি এত সোজা ছিল না তখনও আমাদের পরিবারে গ্রন্থকারের জন্ম হয়েছে, তাই আমরা খুব ভাল করে জানি একটা বইয়ের পেছনে কত রকম গল্প থাকতে পারে।

আমার পরিবারের প্রথম গ্রন্থকার ছিলেন আমার বাবা। সেই ছোট থেকে দেখেছি, সময় পেলেই উবু হয়ে লিখছেন। নানা রকম পত্রপত্রিকায় সেই লেখা ছাপা হতো। পুলিশে চাকরি করতেন, আমার ধারণা, যারা পুলিশের চাকরি করে তারা হয়ত মানব চরিত্রের বিচিত্র উদাহরণগুলো সবচেয়ে বেশি দেখার সুযোগ পায়। তাই আমার বাবার লেখা অনেকগুলো গল্প ছিল এই পুলিশ জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে। আমার বাবা যখন বগুড়ায় ছিলেন তখন তার ইচ্ছা হলো যে তার লেখা গল্পগুলো নিয়ে একটা বই বের করবেন।

আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে একটা বই ছাপানো ছিল রীতিমতো একটা চ্যালেঞ্জ! বাবার পরিচিত একজন প্রেস মালিক ছিলেন, তিনি আগ্রহ নিয়ে বই ছাপানোর ব্যবস্থা করলেন। বাসার কাছে পরিচিত একজন শিল্পী বইয়ের কভার করে দিলেন। বাবা পুলিশে চাকরি করেন, সময়টা পাকিস্তানী আমল তাই নিজের নামে বই ছাপানো যাবে না, একটা ছদ্মনামে বই ছাপানো হলো! একদিন বাঁধাই হয়ে বই বাসায় এলো, তখন আমাদের কী উত্তেজনা! তারপর কত ঝড় ঝাপটার ভেতর দিয়ে গিয়েছি, পরিবার কতবার কতভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, তার পরেও কীভাবে কীভাবে জানি বাবার লেখা বইয়ের দুটি কপি রক্ষা পেয়েছে। একটির বেশিরভাগ উই খেয়ে ফেলেছে, অন্যটা মলাটবিহীন অবস্থায় অক্ষত আছে। আমরা সময় পেলে মফস্বলের একটা প্রেসে ভাঙ্গা টাইপে, নিউজপ্রিন্টে ছাপানো সেই বইটা সস্নেহে নেড়েচেড়ে দেখি!

মজার ব্যাপার হচ্ছে মাঝে মাঝেই নামী-দামী প্রকাশকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তারা আমার বাবার বইটা পুনঃমুদ্রণ করতে চান! আমরা কখনও দেইনি তার কারণ প্রকাশকরা আসলে বইটি আমার বাবার বই হিসেবে ছাপতে চান না, হুমায়ূন আহমেদের বাবার বই হিসেবে ছাপতে চান!

আমার বাবা তার প্রকাশিত বইটি প্রথমবার হাতে নিয়ে কী রকম আনন্দ পেয়েছিলেন সেটি এখন আর আমরা কোন দিন জানতে পারব না। কিন্তু আমার মায়ের অভিজ্ঞতাটুকু আমি জানি। আমার মা খুব বেশি লেখাপড়ার সুযোগ পাননি কিন্তু অসম্ভব বই পড়ার নেশা ছিল। আমার বাবার উৎসাহে এক-দুই বার ছোটখাটো গল্পও লিখেছিলেন। কিন্তু তার প্রথম সত্যিকারের লেখাটি লিখেছিলেন আমেরিকাতে বসে। আমি তখন আমেরিকা থাকি, আমার মা বেড়াতে এসেছেন নাতি-নাতনির সঙ্গে সময় কাটানো ছাড়া অন্য কোন কাজ নেই। আমি তাকে কম্পিউটারে বাংলা টাইপ করা শিখিয়ে দিয়েছি! তখনও বাংলায় কম্পিউটারে টাইপ করার প্রচলন হয়নি। তাই আমার মায়ের কম্পিউটারে বাংলা লেখা দেখে দেশে সবাই রীতিমতো বেকুব হয়ে গেল!

তখন একদিন আমার স্ত্রী আমার মাকে বলল, তার বিস্ময়কর জীবনের ঘটনাগুলো লিখে রাখতে। আমার মা তখন সত্যি সত্যি লিখতে শুরু করলেন, আমি সেগুলো কম্পিউটারে টাইপ করে দিতাম। দেশে ফিরে আসার সময় আমি আমার মায়ের কাছে পা-ুলিপিটি দিয়ে দিলাম, ইচ্ছা করলে কোন প্রকাশককে যেন দিতে পারেন। সেই পা-ুলিপি কখনও কোন প্রকাশককে দেয়া হয়নি, বই হিসেবেও প্রকাশ হয়নি।

তারপর বহুকাল কেটে গেছে। আমি দেশে ফিরে এসেছি এবং কয়েক বছর পর হঠাৎ করে আমার মায়ের লেখা সেই পা-ুলিপিটির কথা মনে পড়ল। আমি সেটার খোঁজ করতে লাগলাম এবং শেষ পর্যন্ত সেটা খুঁজে পাওয়া গেল। উই পোকা বেশ খানিকটা খেয়ে ফেলেছে, কিন্তু তার পরও সেটা পড়া যাচ্ছে। আমি সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তিনি খুব আগ্রহ নিয়ে বইটি ছাপতে রাজি হলেন।

বইয়ের ছাপার কাজ যখন শেষের দিকে, বইটি বাঁধাই হওয়ার অপেক্ষা তখন হঠাৎ আমার মায়ের কাছ থেকে আমি একটা ফোন পেলাম। মা খুব অসুস্থ, ভাল করে কথা বলতে পারেন না। ফোন করে আমাকে বললেন, ‘বাবা তোকে একটা কথা বলার জন্যে ফোন করেছি।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী কথা?’ মা বললেন, ‘বাবা, যদি কখনও ভুল করে তোদের মনে কোন কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে মাফ করে দিস।’ আমি ভয়ানক চমকে উঠলাম, ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি এসব কথা বলছেন কেন?’ আমার মা প্রশ্নের উত্তর দিলেন না, আমার থেকে বিদায় নিয়ে ফোন রেখে দিলেন।

আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল! মানুষ মৃত্যুর আগে এই ভাষায় কথা বলে। তাহলে কী আমার মা বুঝতে পেরেছেন তিনি আর বেঁচে থাকবেন না?

আমি খানিকক্ষণ হতবুদ্ধি হয়ে বসে রইলাম তারপর সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম আমার মায়ের বইটি এখন কোন্ পর্যায়ে? তিনি বললেন, ছাপাছাপির কাজ শেষ, বই বাঁধাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। আমি বললাম, যেভাবেই হোক এই মুহূর্তে দুটো বই বাঁধাই করে আমার মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। খুবই জরুরী।

ফরিদ আহমেদ আমার অনুরোধটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে নিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রথম দুটি বই বাঁধাই করে রীতিমতো ছুটতে ছুটতে আমার মায়ের কাছে গিয়ে দুটি বই তার হাতে তুলে দিলেন। আমার ‘মৃত্যুপথযাত্রী’ মা বই দুটি হাতে নিলেন এবং পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলেন!

এই ঘটনাটি নিয়ে আমরা সবাই আমার মাকে অসংখ্যবার হাসি-তামাশা করেছি, আমার মা সেই হাসি-তামাশা মেনে নিয়েছেন, না মেনে উপায় কী? একজন নতুন লেখকের প্রথম প্রকাশিত বইয়ের প্রথম কপিটি হাতে নেয়ার যে তীব্র আনন্দ সেটি সেই লেখক ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ অনুভব করতে পারবে না!

আমাদের পরিবারের সত্যিকারের প্রথম গ্রন্থকার ছিল আমার অগ্রজ হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশের কত মানুষ তার কত লেখা কতবার পড়েছে কিন্তু আমি রীতিমতো অহঙ্কার করে বলতে পারি তার প্রথম লেখাটি সবার আগে পড়েছিলাম আমি। হুমায়ূন আহমেদ তখন মোহসিন হলে থাকে, আমি থাকি সূর্যসেন হলে। (পরে আমি ফজলুল হক হলে চলে গিয়েছিলাম!)

যাই হোক, একদিন ভোরবেলা হুমায়ূন আহমেদ আমার হলে এসে আমার কাছে খবর পাঠাল, আমি নিচে নেমে এলাম। সে আমাকে হাতে লেখা কিছু কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলল, ‘কাল রাতে আমি এটা লিখে শেষ করেছি। পড়ে দেখ!’

আমি কাগজগুলো নিয়ে ছয়তলায় নিজের রুমে গেলাম। ছোট একটি উপন্যাস কিছুক্ষণের মাঝে পড়া শেষ হয়ে গেল এবং আমি অনেকক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম। উপন্যাসটির নাম নন্দিত নরকে এবং সেটি পড়ে আমি বুঝতে পারলাম আমাদের পরিবারে একজন অসাধারণ সাহিত্যিকের জন্ম হয়েছে!

আমার ধারণা সত্যি প্রমাণিত হলো। আহমেদ ছফা হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসটি বই হিসেবে প্রকাশ করে দেয়ার ব্যবস্থা করলেন! সেটি ছিল হুমায়ূন আহমেদের প্রথম বই এবং দেখতে দেখতে সে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন লেখক হিসেবে পরিচিত হয়ে গেল।

আমার ধারণা, বেশিরভাগ মানুষ জানে না হুমায়ূন আহমেদের প্রথম বই ‘নন্দিত নরকে’র প্রচ্ছদটি এঁকেছিলাম আমি এবং ভাস্কর শামীম সিকদার!

এবারে আমি আমার নিজের বইয়ের গল্পগুলোর কথা বলতে পারি! সবাই তো তার প্রকাশিত বইয়ের গল্প বলে, আমি অপ্রকাশিত বইগুলোর গল্প বলি।

আমি প্রথমবার গ্রন্থকার হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম যখন আমি ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ি। একটা কিশোর উপন্যাস লেখা শেষ করে কী করব বুঝতে না পেরে সেটা একটা খামে ভরে একজন ‘লেখক-প্রকাশক’ এর কাছে পাঠিয়ে দিলাম, তার পরিচয় দিলে সবাই চিনবে তাই সেটা আর বলছি না। আমার পা-ুলিপির প্যাকেট পাওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে চিঠি লিখলেন, চিঠিতে তিনি লিখলেন আমার উপন্যাসটি তার পছন্দ হয়েছে, তবে আমি যদি কাগজের দামটি দিই তাহলে তিনি বই হিসেবে প্রকাশ করবেন। কাগজের দাম কত সেটাও তিনি লিখে দিলেন, তিন শ’ টাকা! টাকার পরিমাণ এখন খুব মনে না হলেও তখন আমার কাছে সেটা অনেকÑ কাজেই সেই টাকা দেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। তাই আমার সেই কিশোর উপন্যাসটি আর বই হিসেবে প্রকাশিত হলো না। তবে সেটি নিয়ে আমার খুব দুঃখ ছিল না কারণ সেই লেখক-প্রকাশক চিঠিতে আমাকে একটা ভবিষ্যদ্বাণী লিখে পাঠিয়েছিলেন, বলেছিলেন, আপনি বড় হলে একজন সত্যিকারের শিশুসাহিত্যিক হতে পারবেন! তার সেই ভবিষ্যদ্বাণীতেই আমি খুব খুশি হয়েছিলামÑ চিঠিটা বুক পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াই এবং বন্ধু-বান্ধবদের দেখাই, তারা হিংসার দৃষ্টিতে ভবিষ্যতের শিশুসাহিত্যিকের দিকে তাকিয়ে থাকে!

মজার ব্যাপার হলো বেশ কয়েক বছর পর কীভাবে কীভাবে জানি আমার বাবা জানতে পারলেন যে তিন শ’ টাকা কাগজের দাম দিলেই আমার একটা বই বের হয়ে যেত। আমার বাবা খুব অবাক হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি সেটা কোনদিন তাকে বলিনি কেন? তাহলে বাবা আমাকে সেই টাকা দিতেন!

আমি কোন সদুত্তর দিতে পারিনি, কিন্তু উত্তরটা আসলে খুব সহজ। যত ছোটই হই না কেন, তবুও তো আমি লেখক! লেখক কেন নিজের টাকা দিয়ে বই ছাপাবে?

আমার দ্বিতীয় যে পা-ুলিপিটা কোনদিন বই হিসেবে তার চেহারা দেখাতে পারেনিÑ সেটা আমি লিখেছিলাম যখন আমি ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। সেটি কী নিয়ে লিখেছিলাম এতদিন পরে আমার আর মনে নেই। আমার ভাইবোনের কোন একজন সেই পা-ুলিপিটার একটুখানি পড়ে সেটা নিয়ে কোন একটা মন্তব্য করল! মন্তব্যটা আমার পছন্দ হলো না তাই আমি একটা ম্যাচ একটা মোমবাতি এবং উপন্যাসের পা-ুলিপিটা নিয়ে ছাদে গেলাম। মোমবাতিটি জ্বালিয়ে উপন্যাসের একটা একটা পৃষ্ঠা মোমবাতির শিখায় ধরতে লাগলাম এবং সেটা দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগল! যতদূর মনে পড়ে আমার সঙ্গে ছোট আরও একজন ছিল এবং আগুন দিয়ে একটা উপন্যাস জ্বালিয়ে দেয়ার ব্যাপারে তার উৎসাহের সীমা ছিল না!

তৃতীয় যে বইটি প্রকাশিত হতে পারেনি সেটি খুবই সাম্প্রতিক ঘটনা। বাংলা একাডেমিতে হে ফেস্টিভ্যালে আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছি, সেখানে একজন ভারতীয় মানুষের সঙ্গে দেখা। তিনি আমাকে খুঁজে বের করে বললেন, আমার কিছু বই ইংরেজীতে অনুবাদ করে কোন একটা বড় প্রকাশনী থেকে বিদেশী পাঠকের জন্য প্রকাশ চান। আমি আনন্দের সঙ্গে রাজি হলাম, ভদ্রলোক আমার কাছে কোন একটা বইয়ের নাম জানতে চাইলেন, আমি তাকে মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা আমার কিশোর উপন্যাস ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ এর নাম বললাম।

কিছু দিনের ভেতরেই সেই বিখ্যাত প্রকাশনী থেকে একজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। অনুবাদটি তারা গ্রহণ করলেন এবং চুক্তিপত্র হিসেবে ছোট ছোট টাইপে লেখা কাগজপত্র পাঠাতে শুরু করলেন। আন্তর্জাতিক মানের বড় প্রকাশনী থেকে বই বের করতে হলে কত রকম পত্র প্রস্তুত করতে হয় তখন সেটা আমি জানতে পারলাম।

যখন আমরা চুক্তির একেবারে শেষ মুহূর্তে পৌঁছেছি তখন সেই বিখ্যাত আন্তর্জাতিক প্রকাশনীর একজন কর্মকর্তা আমাকে ই-মেইল পাঠালেন। তিনি লিখলেন তারা বইটির দুটি পরিবর্তন করতে চান। ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ নামটি খুব সাদামাটা। তারা এর পরিবর্তে আরও জমকালো একটা নাম দিতে চান। এছাড়াও ‘রাশেদ’ নামটি খুব প্রচলিত নাম নয় তারা সেই নামটির পরিবর্তন করে ‘রশীদ’ করে দিতে চান!

খুব স্বাভাবিকভাবেই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া হলো সেই আন্তর্জাতিক প্রকাশনীর বড় কর্মকর্তাকে কিলিয়ে ভর্তা করে দিই! সেটি বাস্তব জীবনে করা সম্ভব নয় তাই আমি পাল্টা ই-মেইলে তাদের সঙ্গে আমার চুক্তি বাতিল করে দিয়ে বললাম, ‘আপনাদের আমার বই প্রকাশ করতে হবে না! আমার দেশের ছেলেমেয়েরা এই বইটি পড়লেই আমি খুশি!’ শুধু এইটুকু লিখেই অবশ্যি আমি তাদের ছেড়ে দিইনি, একজন লেখককে কী বলা যায় এবং কী বলা যায় না তার ওপরে অনেক লম্বা লম্বা উপদেশ দিয়েছিলাম!

আমার ই-মেইল পেয়ে তারা নড়েচড়ে বসে ক্ষমা চেয়ে আমার কাছে আরও লম্বা ই-মেইল পাঠিয়ে বইটি ছাপানোর জন্য চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করার জন্য অনেক ঝুলোঝুলি করেছিল! আমি আর রাজি হইনি!

আন্তর্জাতিক প্রকাশনী থেকে বিদেশী ভাষায় অনুবাদ হয়ে আমার বই বিদেশী পাঠকের কাছে পৌঁছাতে হবে কে বলেছে? আমাদের দেশের একটা ছেলে বা মেয়ে আমার লেখা একটা বই পড়লেই আমি খুশি!

একজন মানুষ তার একটি জীবনে এর থেকে বেশি আর কী চাইতে পারে?

লেখক: কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ১২০ কোটির প্রস্তাব ফেরালেন আমির, ওটিটিতে মুক্তি দেবেন না সিনেমা?
  2. মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে মুম্বাই এসেছিলেন দিশা পাটানি
  3. অক্ষয় কুমারের ‘ওয়েলকাম টু দ্য জাঙ্গল’ সিনেমায় কী ঘটছে?
  4. ডিভোর্স হলেই মেয়েরা অর্ধেক টাকা নিয়ে নেয় : সালমান খান
  5. মাকে কি ভৌতিক সিনেমাতে দেখে নারাজ কাজলের ছেলে-মেয়ে?
  6. বড় বিপর্যয়ে হাউজফুল-৫, শুক্রবার বক্স অফিসে সর্বনিম্ন আয়
সর্বাধিক পঠিত

১২০ কোটির প্রস্তাব ফেরালেন আমির, ওটিটিতে মুক্তি দেবেন না সিনেমা?

মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে মুম্বাই এসেছিলেন দিশা পাটানি

অক্ষয় কুমারের ‘ওয়েলকাম টু দ্য জাঙ্গল’ সিনেমায় কী ঘটছে?

ডিভোর্স হলেই মেয়েরা অর্ধেক টাকা নিয়ে নেয় : সালমান খান

মাকে কি ভৌতিক সিনেমাতে দেখে নারাজ কাজলের ছেলে-মেয়ে?

ভিডিও
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮২
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
গানের বাজার, পর্ব ২৩৬
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
ফাউল জামাই : পর্ব ১০১
ফাউল জামাই : পর্ব ১০১

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x