Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

কানে নজরকাড়া লুকে জাহ্নবী কাপুর

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

ভিডিও
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৪৯
নাটক : প্রেম আমার
নাটক : প্রেম আমার
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৭
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
এই সময় : পর্ব ৩৮২৭
এই সময় : পর্ব ৩৮২৭
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১৭
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১৭
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
সলিমুল্লাহ খান
১১:৫৩, ০১ ডিসেম্বর ২০১৭
সলিমুল্লাহ খান
১১:৫৩, ০১ ডিসেম্বর ২০১৭
আপডেট: ১১:৫৩, ০১ ডিসেম্বর ২০১৭
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

অভিমত

শিক্ষা ব্যবসায় ও সাধুসমাজ

সলিমুল্লাহ খান
১১:৫৩, ০১ ডিসেম্বর ২০১৭
সলিমুল্লাহ খান
১১:৫৩, ০১ ডিসেম্বর ২০১৭
আপডেট: ১১:৫৩, ০১ ডিসেম্বর ২০১৭

 খোদ শিক্ষা ব্যবসায়ীকেই শিক্ষাদান করিতে  হইবে।

–কার্ল মার্কস

বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে যে সংবিধান গ্রহণ করা হইয়াছিল তাহাতে ‘শিক্ষাব্যবস্থা’ বলিয়া একটা কথা আছে। যেখানে এই কথাটা লেখা হইয়াছিল সেখানে ঘোষণা করা আছে এই বিষয়ে রাষ্ট্র দুইটা কাজ করিবেন। এক নম্বরে তাঁহারা একটা শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করিবেন যাহার বিশেষণ হইবে তিনটা—‘একই পদ্ধতির’, ‘সার্বজনীন’ ও ‘গণমুখী’। আর রাষ্ট্রের দুই নম্বর কাজ হইবে ‘আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত’ সকল বালক-বালিকাকে বিনা বেতনে শিক্ষাদান করা। সঙ্গে সঙ্গে আর একটা কথাও বলা হইয়াছিল—রাষ্ট্রের দেওয়া শিক্ষালাভ করাটা সকল বালক-বালিকার জন্য ‘বাধ্যতামূলক’। বুঝা গিয়াছিল শিক্ষাদান করাটা যেমন রাষ্ট্রের কর্তব্য তেমনি শিক্ষালাভ করাটাও বালক-বালিকার কর্তব্যস্বরূপ।

এই বিষয়ে সেইদিন আরো দুইটা কথা জুড়িয়া দেওয়া হইয়াছিল। তাহাতে রাষ্ট্র কেন শিক্ষাদানের গুরুভার নিজের কাঁধে তুলিয়া লইলেন তাহার আভাস পাওয়া যায়। প্রথম আভাস অনুসারে সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করিতে হইবে। শিক্ষাদান করিবার দ্বিতীয় কারণটা আরও পরিষ্কার। ‘সমাজের প্রয়োজন’ সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে ‘যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক’ সৃষ্টি করিতে হইবে। ইহার সহিত যোগ করা হইয়াছিল রাষ্ট্র ‘আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে’ নিরক্ষরতা দূর করিবেন। এই ছিল শিক্ষাব্যবস্থার সারকথা।

পাঠিকা লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন, এই সংবিধানের কোথায়ও ‘শিক্ষা ব্যবসায়’ কথাটা পাওয়া যায় না। মানুষ মাত্রেই শিক্ষিত, কিন্তু শিক্ষা সকলের ব্যবসায় বা পেশা নহে। সমাজের কিছুসংখ্যক মানুষ মাত্র শিক্ষাকে ব্যবসায় বা পেশাজ্ঞানে কবুল করিয়া থাকেন। বাংলাদেশের সংবিধানে যাহাকে ‘শিক্ষাব্যবস্থা’ বলা হইয়াছে তাহা প্রকৃত প্রস্তাবে এক প্রকারের শিক্ষা ব্যবসায় মাত্র। যাহারা জীবনের একটা বড় অংশ শিক্ষালাভ ও শিক্ষাদানের কাজে খাটাইয়াছেন তাহাদিগকে শিক্ষা ব্যবসায়ী বলিলে খুব বেশি বলা হয় না। আমি নিজেও—ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়—জীবনের একটা বড় অংশ এই ব্যবসায়ে কাটাইয়াছি।

আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা লইয়া কোন কথা বলার আগে আমি শিক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে সারা দুনিয়ায় বর্তমানে যে ধারণা চালু আছে সে বিষয়ে দুইটা কথা বলিতে চাই। এমন একটা যুগ ছিল যখন লোকে বলিত, শিক্ষা এক ধরনের সম্পদ অর্থাৎ লেখাপড়া করিলে ধন-সম্পত্তির মালিক হওয়া যায়। আমাদের যুগে আরেকটা ধারণা চলিতেছে। বর্তমান যুগকে বলা হয় গণতন্ত্রের যুগ। এই যুগের ধারণা অনুসারে শিক্ষালাভ করাটা সকল মনুষ্য সন্তানের একটা হক বা অধিকার। মনুষ্য প্রজাতির অন্তর্গত সকলেরই—জাতি ধর্ম বর্ণ নারী-পুরুষভেদ এমনকি শ্রেণি নির্বিশেষে সকলেরই—কিছু শিক্ষালাভের অধিকার রহিয়াছে। যাহা একের অধিকার তাহা অপরের কর্তব্য। এখানে অপর বলিতে আমরা রাষ্ট্র বুঝিতেছি। শিক্ষালাভকে নাগরিকের অধিকার গণ্য করিলে শিক্ষাদানের কর্তব্যটা রাষ্ট্রের উপরই বর্তায়। ১৯৪৮ সালে সম্মিলিত জাতিসংঘের উদ্যোগে গৃহীত ‘মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা’ নামক দলিলে পরিষ্কার ভাষায় জানান হইয়াছিল, ‘শিক্ষালাভের হক সকলেরই আছে।’

হক কথাটা হকই আছে। কিন্তু সে হক কাঁহার কাছে গচ্ছিত আছে? সে হক কাঁহার কাছে আদায় করিবেন আপনি? বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে যে সংবিধান গ্রহণ করা হইয়াছিল তাহাতেও অঙ্গীকার করা হইয়াছে, রাষ্ট্র ‘আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য’ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। দুঃখের বিষয়, সেই কার্যকর ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয় নাই। বাংলাদেশে সকল বালক-বালিকা দূরের কথা, মাত্র প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সকল বালক-বালিকার অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষালাভের কার্যকর ব্যবস্থাও আজ পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয় নাই।

‘মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা’ নামক দলিলে আরো বলা হইয়াছে, ‘অন্তত প্রাথমিক ও বুনিয়াদী পর্যায়ে’ শিক্ষাটা অবৈতনিক হইবে। অধিক কি— ‘প্রাথমিক শিক্ষা’ হইবে বাধ্যতামূলক বা অবশ্যকরণীয়—এই ঘোষণার একটা ক্ষীণ, অস্ফূট প্রতিধ্বনি বাংলাদেশের সংবিধানেও পাওয়া যাইবে। আগেই বলিয়াছি, এই সংবিধানে ঘোষণা করা হইয়াছে ‘আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত’ সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদান করা হইবে। তবে ‘আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর’ বলিতে কোন স্তর পর্যন্ত বুঝিব তাহা নির্ধারণের কোন উদ্যোগই অদ্যাবধি গ্রহণ করা হয় নাই।

এখানে আর একটা কথা না তুলিলেই নয়। ‘প্রাথমিক ও বুনিয়াদী শিক্ষা’ কিংবা শুদ্ধ ‘প্রাথমিক’ শিক্ষা বলিতে কি বুঝাইতেছে তাহা কিন্তু কোথাও ভাঙ্গিয়া কি বানান করিয়া বলা হয় নাই। একদিন ‘প্রাথমিক শিক্ষা’ বলিতে আমরা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা বুঝিতাম। সম্প্রতি—মানে ২০১০ সাল নাগাদ—প্রচারিত ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’তে জানান হইয়াছে ‘প্রাথমিক’ শিক্ষা বলিতে প্রচলিত বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনাই বুঝাইবে। ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ বলিয়া প্রচারিত দলিলটিও একপ্রস্ত সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ বিশেষ। ইহা আইনের পর্যায়ভুক্ত বলিয়া গণ্য হয় না। এককথায় বলিতে হইবে, বাংলাদেশে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কর্তব্যটা রাষ্ট্র এখনও সর্বান্তঃকরণে গ্রহণ করে নাই। ফলে ‘শিক্ষালাভের অধিকার সকলের রহিয়াছে’—কথাটা এখনও একটা ফাঁকাবুলির অধিক পরিগণিত হয় না।

এক্ষণে আরেক দফা ফাঁকির কথাও বলিতে হইবে। এই ফাঁকি অনুসারে, বাংলাদেশে শতকরা প্রায় একশত ভাগ বালক-বালিকা নানাপ্রকার প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হইয়া থাকে। একটি সরকারি দলিল অনুসারে, ১৯৯০ সালে এদেশে ভর্তি হওয়ার উপযুক্ত তাবৎ বালক-বালিকার মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হইয়াছিল শতকরা মাত্র ৬০.৫ জন। এই সংখ্যাটা বাড়িয়া ২০০৫ সাল নাগাদ দাঁড়াইয়াছিল ৮৭.২ জন আর ২০১২ সাল নাগাদ ইহা আরও বাড়িয়া হয় ৯৬.৭ জন। আরেকটা সরকারি দলিল মোতাবেক, সংখ্যাটা ২০১১ সালে ৯৮.৭ জন পর্যন্ত উঠিয়াছিল। দেখা যাইতেছে, এই দেশে শতে প্রায় একশত ভাগ বালক-বালিকাই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হইতেছে। বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার একমাত্র না হইলেও সেরা সাফল্য বলিয়া প্রচার করা হইয়া থাকে এই খবরটুকুই।

কিন্তু চাঁদের একটা অন্যপিঠও আছে। প্রথম শ্রেণিতে দাখিল হওয়া বালক-বালিকাদের বড় একটা অংশ পঞ্চম শ্রেণিতেও উঠিতে পারে না—তাহার আগেভাগেই তাহারা বিদ্যালয় হইতে নীরবে বিদায় লয়—সরকারি ভাষায় ‘ঝরিয়া পড়ে’। ২০০৫ সালে—সরকারি হিশাব মোতাবেক—একশত জনের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণিতে পৌঁছিবার আগেই ঝরিয়া পড়িয়াছিল গোটা ৪৭.২ জন। ২০০৬ সালের গণনা অনুসারে সংখ্যাটা বাড়িয়া শতকরা ৫০.৫ জন মত হইয়াছিল। ২০০৭ সালেও দেখা গিয়াছিল সংখ্যাটা দাঁড়াইয়া আছে আগের বছরের সমতলে, একই জায়গায়—অর্থাৎ শতে ৫০.৫ জনে। ঝরিয়া পড়ার হারটা ২০০৮ সালে অল্প কমিয়া দাঁড়াইয়াছিল ৪৯.৩ জনে। এই সংখ্যাটা ২০০৯ সালে আরও খানিকটা নামিয়া ৪৫.১ পর্যন্ত গড়ায়। এই প্রগতির হার অব্যাহত থাকিল ২০১০ সালেও—সংখ্যার মান হইল ৩৯.৮ জন। ২০১১ সাল আর ২০১২ সালের খবর অনুসারে ঝরিয়া পড়ার হার কমিতে কমিতে যথাক্রমে শতে ২৯.৭ ও ২৬.২ পর্যন্ত পৌঁছিয়াছিল।

ইহা হইতেছে পুরাতন ‘প্রাথমিক’ শিক্ষার চিত্র। এখন আমরা নতুন ‘প্রাথমিক’ শিক্ষা অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ কতজনে করে তাহার খবর সংগ্রহ করি তো অবস্থা দেখা যাইবে আরো বেগতিক। একজন বিশেষ জ্ঞানীপণ্ডিত হিশাব করিয়া দেখাইয়াছেন, ২০১২ সনে যদি পঞ্চম শ্রেণিতে পৌঁছিবার আগে শতকরা ২৬.২ জন ঝরিয়া পড়িয়া থাকে তো অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পৌঁছিবার আগেই ঝরিয়া পড়িয়াছিল শতকরা ৪৬ জন বালক-বালিকা। এখানে বালক ও বালিকার ঝরিয়া পড়িবার সংখ্যাটা মোটেও একরকম নহে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দেখি বালক বেশি ঝরে, আর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিশাব করিলে দেখা যায় বালিকা বেশি ঝরে। তবে আজিকার আলোচনায় এই বৈষম্য লইয়া অধিক কিছু না বলিলেও চলিবে। আজ আমরা কথা বলিতেছি মোটাদাগে।

এককথায় বলিতে, এখনও বাংলাদেশে সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন সম্ভব হয় নাই। অথচ অনেক সাধুলোককে বলিতে শোনা যায় হালফিল এদেশে শিক্ষার বিস্তার যথেষ্ট হইয়াছে। এক্ষণে শুদ্ধ শিক্ষার মান আর গুণবিচার করিলেই চলিবে। তবে প্রশ্ন উঠিতেই পারে, প্রাথমিক শিক্ষার গুণবিচার করিবেন কোন মানদণ্ডে? সাধুরা বলিবেন, শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি করিলে হয়তো এই শিক্ষার গুণেমানে উন্নতি ঘটিবে। এই চেষ্টাই বর্তমানে চলিতেছে। দেশের সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থা এই চেষ্টার পথ ধরিয়া চলিলে ফল কি দাঁড়াইবে তাহা বলিবার সময় এখনও বোধ করি হয় নাই। যাহাদের শক্তি-সামর্থ্য আছে তাহারা আপনাপন আত্মীয়স্বজনের শিক্ষার ভার বিদেশের উপর ছাড়িয়া দিতেছেন। অনেকে দেশের মধ্যস্থলে ছোট ছোট অনেকগুলি বিদেশ রচনা করিতেছেন। ফলে নতুন একটা উপসর্গ দেখা যাইতেছে।

সাধুদের প্রায় সকলেই বলিয়া থাকেন, দেশে বর্তমানে যে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা চালু রহিয়াছে তাহার গুণ ও মান দুইটাই খুব নিচু পর্যায়ের। সরকার কর্তৃক সংগ্রহ করা ২০১১ সালের তথ্য অনুসারে, যে সকল বালক-বালিকা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা শেষ করিয়াছিল তাহাদের মধ্যে শতকরা ৬৭ জন বাংলা বিষয়ে মাত্র তৃতীয় শ্রেণির সমান শিক্ষালাভের যোগ্যতা অর্জন করিতে পারিয়াছিল। গণিত বিষয়ে এই যোগ্যতা অর্জন করিয়াছিল আরো কম—শতকরা ৫০ জন। আর পঞ্চম শ্রেণি শেষ করিয়াছে এমন বালক-বালিকার মধ্যে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষালাভের যোগ্যতা উপায় করিয়াছিল বাংলা বিষয়ে শতে মাত্র ২৫ জন আর গণিতে ৩৩ জন। অথচ সেই বছর পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক বা সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করিয়াছিল শতকরা ৯৭.৩ জন। মানে পরীক্ষা পরীক্ষাই। তাহার সহিত ছাত্রছাত্রীর প্রকৃত যোগ্যতা অর্জনের কোন যোগ নাই।

এই অবস্থা হইতে উদ্ধার পাইবার পথ কি? পথের অনেক পরামর্শই দেওয়া হইয়াছে। একটা পথ প্রচলিত প্রাথমিক স্তরে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ান। ২০১০ সালের গড় হিশাব অনুসারে, প্রাথমিক স্তরে প্রায় ৬০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষক ছিল মাত্র একজন। ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’তে বলা হইয়াছে, এই সংখ্যাটা অনেক নামাইয়া আনিতে হইবে। নতুন সংখ্যাটা হইবে প্রতি ৩০  জনের জন্য একজন। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জিত হইতে এখনও অনেক বাকি। মক্কার পথ সত্যই লম্বা।

আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় আরো সুন্দর একটা ফাঁকি আছে। আমরা যাহাকে বলি ‘মাধ্যমিক’ —এমনকি ‘উচ্চ-মাধ্যমিক’ —শিক্ষা তাহাও প্রকৃত প্রস্তাবে এক ধরনের প্রাথমিক শিক্ষাই। ‘মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র’ অনুযায়ী এই শিক্ষাকে বড়জোর বলিতে পারেন ‘বুনিয়াদী শিক্ষা’। এই ঘোষণাপত্র অনুসারে এই বুনিয়াদী শিক্ষাটার ‘বাধ্যতামূলক’ না হইলেও কমসেকম ‘অবৈতনিক’ হওয়ার কথা। ২০১০ সালে প্রচারিত ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাকে ‘প্রাথমিক শিক্ষা’ বলিয়া বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়াছে। মনে রাখিতে হইবে, পৃথিবীর সকল দেশেই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকেই বুনিয়াদী শিক্ষা গণ্য করা হয়। আমাদের সংজ্ঞাটা মোটেও ধ্রুব সংখ্যা নহে। লোকের চোখে ধুলা ছিটাইবার জন্যই ইহার আমদানি করা হইয়াছে।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়া শিক্ষা শেষ হইয়াছে বলার মধ্যে এক প্রকারের লোক-ঠকানোর চেষ্টা আছে। যতদিন পর্যন্ত পড়াশুনা না করিলে মনুষ্য সন্তান কোন পেশা বা ব্যবসায়ে প্রবেশ করিবার যোগ্য হয় না তাহাকেই প্রাথমিক শিক্ষা বলে। প্রাচীন কাল হইতেই এই সংজ্ঞাটা চলিয়া আসিতেছে। দ্বাদশ বর্ষ গুরুগৃহে থাকিয়া বিদ্যাভ্যাসের কাহিনী এখনও অচল হয় নাই। দ্বাদশ বর্ষ পর্যন্ত বিদ্যাশিক্ষাকে আমরা শৃঙ্খলার প্রয়োজনে প্রাথমিক, নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক প্রভৃতি নানান স্তরে ভাগ করিয়াছি। শত ভাগাভাগির পরও প্রাথমিকের প্রাথমিক দশা ঘোচে নাই।

আমাদের দেশে সকল বালক-বালিকার জন্য প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাও অবৈতনিক বা বাধ্যতামূলক হয় নাই। সুতরাং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা সম্পূর্ণ অবৈতনিক হওয়া উচিত—এ কথা বলিয়া লজ্জা দিবার দরকার নাই। কথাটা নিতান্ত উঠিল বলিয়াই বলা। আমাদের সংবিধানে ঘোষিত ‘একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার’ বাসনা আজ পর্যন্ত বাসনাই রহিয়া গিয়াছে। এখানে বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ নাই। শুদ্ধ একটি কথাটাই বলিব—বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ‘সার্বজনীন’ তো নয়ই, একে ‘গণমুখী’ বলাও সত্যের অপলাপ। আর ইহাকে ‘একই পদ্ধতির শিক্ষা’ বলাটা তো একটি কথার কথা আর ছাড়া কিছুই নয়।

কয়েক দশক আগে সাধুলোকেরা গরিবের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের জন্য আরেক ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চালু করিবার উদ্যোগ নিয়াছেন। ইহাকে ‘গোদের উপর বিষফোড়া’ বলিয়া দেখা যাইতে পারে। এই শিক্ষার বাহারি নাম অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা নহে, ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা’। বলা হইয়াছে, বালক-বালিকা মাত্র চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করিলেই এই শিক্ষা সমাপ্ত হইবে। এই শিক্ষাও ‘গণতান্ত্রিক’ বলিয়া প্রচার পাইতেছে। এই শিক্ষা দেশে প্রচলিত পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত যে প্রাথমিক শিক্ষার বন্দোবস্ত আছে তাহার মাপেও প্রাথমিক শিক্ষা নহে। অথচ শ্রেণিভেদে ইহাকেও শিক্ষা বলিয়া ছাড়পত্র দেওয়ার চেষ্টা হইতেছে। এহেন বেপরোয়া নীতিকে গরিব-দরদি গণতন্ত্রের তকমা পরান ছাড়া সাধুসমাজের আর কোন পথ কি আছে?

৩০ নবেম্বর ২০১৭

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি
  2. যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ
  3. মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল
  4. রহস্য নিয়ে আসছে অজয়ের ‘দৃশ্যম ৩’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
  5. বলিউডের স্মরণীয় জুটি
  6. সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’ মুক্তির নতুন তারিখ ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত

‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি

যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ

মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল

রহস্য নিয়ে আসছে অজয়ের ‘দৃশ্যম ৩’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা

বলিউডের স্মরণীয় জুটি

ভিডিও
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬০
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬০
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫১
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫১
এই সময় : পর্ব ৩৮২৭
এই সময় : পর্ব ৩৮২৭
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৪৯
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১২
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০০
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০০
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৬
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৯
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৯

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x
ইউনিজয়
ফনেটিক
English

By using this site you agree to our Privacy Policy