আমিরকে ঘিরে পাকিস্তানে বিদ্রোহের আগুন

২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ আমির। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এ বছর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন পাকিস্তানের এই প্রতিভাবান বাঁহাতি পেসার। তাঁর সামনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরারও যথেষ্ট সম্ভাবনা। আগামী মাসে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য ঘোষিত প্রাথমিক দলে আছে আমিরের নাম। কিন্তু এতে বেজায় চটেছেন পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক আজহার আলী ও মোহাম্মদ হাফিজ। আমিরের সঙ্গে অনুশীলন করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে চলমান ক্যাম্প বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন দুজন।
বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা বিপিএলে দারুণ নৈপুণ্য ছিল আমিরের। যদিও স্পট ফিক্সিংয়ের মতো অনৈতিক কাজে জড়ানো আমিরের সঙ্গে এক দলে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিপিএল বয়কট করেছিলেন হাফিজ। এবার জাতীয় দলেও না খেলার হুমকি দিয়েছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। হাফিজের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ‘আমির ক্যাম্পে ডাক পাওয়ার পর থেকেই হাফিজ আপত্তি জানিয়ে আসছিল। কোচ ওয়াকার ইউনিসকে হাফিজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আমিরের উপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে ক্যাম্পে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়।’
হাফিজকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন আজহার। পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়কের বক্তব্য, ‘ক্যাম্পে আমিরের উপস্থিতি আমি আর হাফিজ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এ ব্যাপারে আমরা একেবারে অনড় অবস্থানে। অবশ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে আমরা প্রস্তুত।’
আজহার ও হাফিজের ক্যাম্প বয়কটের কথা নিশ্চিত করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘আমিরের কারণে আজহার ও হাফিজ অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেয়নি। তবে আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের অপরাধে পাকিস্তানের সে সময়ের অধিনায়ক সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফ ও আমির সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। আমির পেয়েছিলেন পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি। তবে আইসিসির পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ম্যাচ পাতানোর বিরুদ্ধে তদন্তে সাহায্য করার পুরস্কার হিসেবে শাস্তি তিন মাস কমে যায় তাঁর। গত এপ্রিলে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার পর থেকেই আমিরের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কায়দে আযম ট্রফির বাছাইপর্বের চার ম্যাচে ৩৪ উইকেট নেওয়ার পর মূল প্রতিযোগিতায় নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট। এরপর বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে নয় ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে প্রমাণ করেছেন, নিষেধাজ্ঞা তাঁর আগুন-ঝরানো বোলিংকে ম্লান করে দিতে পারেনি।