ইতিহাস গড়ে পিএসজি এখন ‘ইউরোপের রাজা’
এমন এক রাতের অপেক্ষায় ছিল গোটা প্যারিস। প্রেমের নরী প্যারিসের ক্লাব পিএসজির সব ছিল। অর্থবিত্ত কিংবা দেশের মাটিতে শ্রেষ্ঠত্ব, কমতি ছিল না কিছুরই। তবু, লোকে তাদের ফার্মার্স লিগ বলে নাক সিঁটকাতো। আজ রোববার (১ জুন) রাতের পর পিএসজিকে খাটো করে দেখার দুঃসাহস নেই। রাজার সামনে অন্যরা কি দুঃসাহস দেখাতে পারে? ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে এখন সেরাদের সেরা পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই।
মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্রথম বাঁশি থেকে শেষ বাঁশি পর্যন্তরা দর্শকরা দেখেছে পিএসজি শো। দলগত পারফরম্যান্সের অনন্য নজির স্থাপন করে আধিপত্য বিস্তার করেছে সবুজ ঘাসে। ম্যাচে একবারের জন্যে মনে হয়নি, পিএসজিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে ইন্টার। উল্টো লজ্জায় পড়েছে ইন্টার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে প্রথম দল হিসেবে হজম করেছে ৫ গোল। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে ফাইনাল হারের লজ্জা।
শিরোপা জয়ের পথে পিএসজি তাই গড়েছে নতুন রেকর্ড। রেকর্ড গড়েছেন পিএসজি কোচ লুইস এনরিকেও। সপ্তম কোচ হিসেবে দুটি আলাদা ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছেন তিনি। প্রথমবার জিতিয়েছিলেন বার্সেলোনাকে।
২ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে পিএসজি। বিরতির পর আরও ক্ষুরধার হয় লুইস এনরিকের শিষ্যরা। ৬৩ মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পায় তারা। দুই ফুটবলারের পায়ের ফাঁক গলে ব্যাক ফ্লিক করেন উসমান দেম্বেলে। সেখান থেকে বল পান ভিতিনহা। তার দুরন্ত দৌড়ে ছিটকে ফেলে ইন্টারের রক্ষণকে। বল পান ডিসায়ার ডুয়ি। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করতে ভুল করেননি এই ফরোয়ার্ড।
৭৩ মিনিটে দলের পক্ষে চতুর্থ গোলটি করেন কাভারাৎসখেলিয়া। নিজেদের অর্ধ থেকে বল পেয়ে প্রবল গতিতে ইন্টারের ডি-বক্সে ঢুকে যান তিনি। আক্রমণকে পরিণত করেন গোলে। ম্যাচের বাকি সময় অপেক্ষা ছিল রেফারির বাঁশির। এর আগে ইন্টারের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন মায়ালু। ৮৭ মিনিটে তার গোলে পঞ্চমবারের মতো এগিয়ে যায় পিএসজি। হতাশায় নিমজ্জিত হয় ইতালিয়ান ক্লাবটি।
প্রথমার্ধে ইন্টারকে গুছিয়ে ওঠার সুযোগ না দিয়ে রক্ষণে ব্যস্ত করে তোলে পিএসজি। ফল আসে ১৩ মিনিটে। গোছালো এক আক্রমণে প্রথমে ভিতিনহা, তারপর ডিসায়ার ডুয়ির পা হয়ে বল পান আশরাফ হাকিমি। ইন্টারের রক্ষণে জটলা থাকলেও হাকিমি ছিলেন অরক্ষিত। পায়ের আলতো টোকায় খালি জালে বল জড়াতে বেগ পেতে হয়নি তাকে।
লিড নিয়ে পিএসজির ধার যেন আরও বেড়ে যায়। ২০ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে বল টেনে আনেন উসমান দেম্বেলে। বাম প্রান্ত থেকে ক্রস করেন ডুয়ির উদ্দেশে। প্রথম গোলের সহায়ক এবার নিজেই নাম লেখালেন স্কোরশীটে। দারুণ এক শটে পরাস্ত করেন ইন্টারের রক্ষণ ও গোলরক্ষককে।