দারুচিনির অণু

দারুচিনির সুগন্ধে মাতাল হয় মন! স্বাদেও অনন্য এটি। ‘দারু’ শব্দের অর্থ কাষ্ঠ। স্বাদে মিষ্টি বলেই এর নাম হয়েছে দারুচিনি। দারুচিনি দ্বীপের কথা বলেছেন জীবনানন্দ দাশ। সেই দ্বীপ ঠিক কোথায়, আমরা জানি না। খুব সম্ভবত শ্রীলঙ্কার কোনো দ্বীপ হতে পারে। কারণ, শ্রীলঙ্কাতেই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দারুচিনি উৎপন্ন হয়। মোহনীয় সুবাসের কারণে দারুচিনি জনপ্রিয় সারা পৃথিবীতেই। এই মোহনীয় গন্ধের উৎসটা কী তবে?
প্রকৃতিতে এই যে বিচিত্রময় রং, গন্ধ কিংবা স্বাদ—এর সবই অণুর জন্য। বিভিন্ন অণু বিভিন্ন বর্ণ দেয়, সুবাস দেয়। অসংখ্য অণুর জন্যই প্রকৃতি এত বৈচিত্র্যময়। এই অণুগুলোর গঠন সব একই রকম নয়। কিছু অণু গঠনে সরল, কিছু অণু গঠনে জটিল। দারুচিনির এই যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সৌরভ, সেটাও এক অণুর জন্যই। আমরা জানব সেই অণুর কথা, যে অণু এমন মোহনীয় গন্ধ দেয়।
দারুচিনির ইংরেজি শব্দ ‘সিনেমন’ (Cinnamon)। ইংরেজি শব্দটা জানলে এর অণুর নামটা সহজে মনে রাখা যায়। কারণ যে অণুটি দারুচিনির গন্ধের জন্য প্রধানত দায়ী, সে অণুর নাম সিনামালডিহাইড (Cinnamaldehyde)। গঠনে খুবই সরল একটি অণু এটি। এই অণুটিকে আমরা খালি চোখে দেখি না, কারণ অণু অসম্ভব ক্ষুদ্র একটি বস্তু। অণুদের গঠন নির্ণয় করতে পারি আমরা। অণুর সৌন্দর্য ও বিস্ময় এটাই—যা অদৃশ্য অথচ সত্য।
লেখক : গবেষক, স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেন।
ই-মেইল : redoxrouf@yahoo.com