গবেষণায় এআই নিয়ে বিইউপি-পাইজারে সেমিনার

সারাবিশ্বে এআই প্রযুক্তির নানা প্রেক্ষিত তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে ডিপসিক, গুগল জেমিনি বা ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টুলস ব্যাপক ব্যবহার বেড়েছে। বিভিন্ন পেশাখাতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা ব্যবহার করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষায় এআইয়ের বহুমাত্রিক ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এআই ব্যবহারকে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে ও সর্বোত্তম ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে এআই নির্ভর শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ তৈরির পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে। সেই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে (পাইজার) একটি সেমিনার গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
‘এআই ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার নতুন সুযোগ’ শীর্ষক এই সেমিনারে বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগ নিয়ে আলাপ করা হয়।
সেমিনারে এআই কিভাবে জ্ঞানচর্চা ব্যবহার করা হচ্ছে, আবার এআই ব্যবহার করে জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে কি কি সংকট তৈরি হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। গুগল জেমিনি, ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন এআই টুলস বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণায় কিভাবে উপস্থিত হচ্ছে সেই বিষয় নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার্স বিভাগের এমফিল গবেষক জাহিদ হোসাইন খান এআই ও গবেষণার নানান প্রেক্ষিত সম্পর্কিত প্রবন্ধ সেমিনারে সামনে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০২০ পরবর্তী সময় থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বৈশ্বিক গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অন্বেষণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন এআই প্রযুক্তি বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা ব্যবহারে উৎসাহ দেয়া উচিত। এআই প্রযুক্তি যে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে সেখানে অনেক বিশেষজ্ঞ নতুন ডিজিটাল বৈষম্য তৈরির আশঙ্কা করছেন। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞান চর্চা ও গবেষণার সুযোগ নিতে হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তির ভালোমন্দ নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন টুলস প্রাথমিক শ্রেণি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাইজারের অডিওলোজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ফাতিমা আলম বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন নয়া বাস্তবতা। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার জন্য এখন এআই ও এআই নির্ভর প্রযুক্তির ব্যবহার সারাবিশ্বেই বাড়ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সামনে এআইকে চ্যালঞ্জ হিসেবে দাঁড় করানো যাবে না। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন নতুন গবেষণার সুযোগ তৈরি করতে হবে। চিরায়ত বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে নতুন নতুন জ্ঞান ও উদ্ভাবনে এআই বিশ্বের বড় বড় গবেষণাগার ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে এআইকে ব্যবহারের সুযোগ। শিক্ষার্থী ও গবেষকদের পাশাপাশি শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এআই প্রযুক্তিমুখি হওয়া প্রয়োজন। সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা এআই বিষয়ক একটি সেমিনার আয়োজন করেছি।
সেমিনারে বিভিন্ন টুলসের মাধ্যমে গবেষণার ডেটা সংগ্রহ, ডেটা বিশ্লেষণের মত বিভিন্ন বিষয় হাতেকলমে শেখানো হয়।
পাইজারের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. নুর উল্লাহ জুয়েল পিএসসি বলেন, পশ্চিমা দুনিয়াতে গবেষণার ব্যাপক বিস্তৃতি দেখা যায়। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সামনে এআই নতুন সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। এআইকে ব্যবহার করে গবেষণার অসাধারণ সুযোগ তৈরি হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে তুলে ধরতে আমরা বিশেষ এই লেকচার সেমিনার আয়োজন করেছি। স্বাস্থ্য কিংবা জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছি।
সেমিনারে এআই ভবিষ্যতের গবেষণা ও ক্যারিয়ারে কতটা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শতাধিক শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা অংশ নেন।