যুক্তরাষ্ট্রের ‘চুক্তি লঙ্ঘন’, পরমাণু যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে ইরান!

পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধজাহাজ তৈরি করতে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ করে এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো ১০ বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সময়ই এর কঠোর সমালোচনা করে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের যে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব ছিল এই সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন বলে মন্তব্য করে তারা।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে রুহানির এই নির্দেশ পড়ে শোনানো হয়। সেখানে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সামুদ্রিক পরিবহনের জন্য পরমাণু শক্তি এবং জ্বালানি তৈরির প্রস্তুতি নিন।’
যুক্তরাষ্ট্রকে আইনিভাবে চ্যালেঞ্জ করতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশও দিয়েছেন এই নেতা।
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এই বছরেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়াচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এমন ঘোষণা দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের সদস্যরা বলছেন, শুধু পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে এই নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হচ্ছে না। বরং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেচনায় তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শিগগিরই এই নিষেধাজ্ঞায় সই করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করার শর্ত মেনে নেওয়ায় ইরানের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর আগে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সই করে দেশটি। এ চুক্তি অনুযায়ী ইরান অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারবে না।
এর আগে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তি যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে সমঝোতা হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের জব্দ করা ইরানের সম্পদ ছেড়ে দেওয়া হবে এবং দেশটি বিশ্ববাজারে তেল বিক্রি করতে পারবে।
তবে চুক্তি সইয়ের কয়েক ঘণ্টা পরেই আবার ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি এই যুক্তি দেখিয়ে সে সময় নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। চলতি মাসের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয় মার্কিন সিনেট।