সাইবার হামলায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্য চুরি

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেটা সিস্টেমে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর তথ্য চুরি হয়েছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছিল। চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো- একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক মনিটরগুলোতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাসিমুখের ছবি ভেসে ওঠে।
গত ২৪ জুনের এই সাইবার হামলার কারণে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ব্যাপক নেটওয়ার্ক বিভ্রাট দেখা দেয়। এর ফলে কয়েক ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থী ও কর্মীরা তাদের ইমেল অ্যাকাউন্ট, কোর্সওয়ার্ক ও ভিডিও কনফারেন্স সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেননি। ম্যানহাটন ক্যাম্পাসের বেশ কয়েকটি পাবলিক মনিটরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি প্রদর্শিত হওয়ায় ঘটনাটি আরও কৌতূহল সৃষ্টি করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা এই হামলাকে অত্যন্ত পরিশীলিত একজন হ্যাকারের কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হ্যাকারের উদ্দেশ্য ছিল একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত রেকর্ডে প্রবেশাধিকার লাভ করা। যদিও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এই হামলার পেছনের সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেছেন, তবে ট্রাম্পের ছবি প্রদর্শনের সঙ্গে ডেটা চুরির সম্পর্ক আছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে তিনি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা দৃশ্যত এই চুরির পরিধি তদন্ত করছি। আমাদের অনুসন্ধানের ফলাফল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি যাদের ব্যক্তিগত তথ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চলমান টানাপোড়েন
এই সাইবার হামলা এমন এক সময়ে ঘটল যখন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া সমালোচনার মুখে রয়েছে। ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এই বিষয়ে একটি সম্ভাব্য নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে রাজি হয়েছে, যার মধ্যে তাদের মধ্যপ্রাচ্য অধ্যয়ন বিভাগকে নতুন তত্ত্বাবধানে রাখা এবং বিক্ষোভ ও শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত নিয়মাবলী পুনর্গঠন করার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।

গত মার্চ মাসে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও একটি সাইবার হামলা হয়েছিল। যেখানে শিক্ষার্থীদের ভর্তির রেকর্ড সাময়িকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। অবশ্য সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিলেন একজন অনলাইন হ্যাকার।