শুল্কারোপ নিয়ে চুক্তির জন্য চাপ বাড়াচ্ছেন ট্রাম্প

বেশকিছু দেশের ওপর নতুন করে উচ্চ শুল্কহার আরোপের সময়সীমা পরিবর্তনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের জন্য তোড়জোর শুরু করেছেন। ট্রাম্প তার আগ্রাসী বাণিজ্য নীতি বাস্তবায়নে এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহে সময় পার করছেন।
আজ সোমবার (৭ জুলাই) রাত থেকেই ১৫টি দেশের জন্য চিঠি পাঠাতে শুরু করছেন ট্রাম্প। এই চিঠিগুলো হচ্ছে এক ধরনের সতর্কবার্তা, যাতে বলা হয়েছে যেসব বিদেশি সরকার ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাবে না, তাদের জন্য মার্কিন শুল্ক আবার আগের মতো উচ্চ হারে নির্ধারণ করা হবে। খবর এএফপির।
তবে এ সপ্তাহের শেষ দিকে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছিলেন, আগস্ট মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত শুল্কহার পুনর্বহাল করা হবে না। তাই এই ধরনের সিদ্ধান্তকে বিশ্বের অন্য শক্তিধর অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য একটি নতুন সুযোগ তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত এপ্রিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সবগুলো বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে পণ্য আমদানিতে কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেন। এরমধ্যে কিছু ক্ষেত্রে যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য এই শুল্ক আরও বেশি হারে আরোপ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে সেই সময়ে এই ঘোষণার ফলে বাজার পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে। আর এজন্য ট্রাম্প উচ্চ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন, যার মেয়াদ গত বুধবার শেষ হয়ে যায়।
আজ সোমবার (৭ জুলাই) মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সিএনবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা আরও বেশকিছু ঘোষণা দিতে যাচ্ছি।’
স্কট বেসেন্ট আরও বলেন, ‘সমঝোতার জন্য আমরা বেশকিছু দেশের সুর নরম করতে দেখেছি। নতুন প্রস্তাব, নতুন সুযোগ নিয়ে আসা চিঠির কারণে আমার মেইলবক্স পূর্ণ হয়ে গেছে গত রাতে।’ তবে তিনি আবারও উল্লেখ করেন, ১ আগস্ট পর্যন্ত শুল্কারোপের হার আগের অবস্থায় যাবে না।
যদিও হোয়াইট হাউস থেকে গত বুধবারের পর সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিঠি পাঠানোর বিষয়ে যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে স্কট বেসেন্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করতে হলে বিভিন্ন দেশের জন্য কী পরিমাণ শুল্ক দিতে হবে তা জানাতেই এই ঠিঠি ইস্যু করা হচ্ছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সমঝোতায় পৌঁছে।
জুলাইয়ের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন বেশকিছু দেশের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাবে, এমন আগাম সংকেত দেওয়া হলেও তা হয়েছে খুব সীমিত আকারে। ব্রিটেন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি উন্মোচন হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তাদের পণ্যে শুল্ক হার কমানোর বিষয়ে সম্মত হয়, যা আগে তিন অঙ্কে পৌঁছে গিয়েছিল।
আজ সোমবার এ প্রসঙ্গে সিএনবিসিকে স্কট বেসেন্ট বলেন, তিনি আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই তার চীনা প্রতিপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকে বসবেন। যদিও এর আগে দুই দেশের মধ্যে জেনেভা ও লন্ডনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ওয়াশিংটন ও বেইজিং পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ স্থগিতের বিষয়টি মধ্য আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখার বিষয়ে একমত হয়েছিল।
গতকাল রোববার রাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, সোমবার (৭ জুলাই) থেকে তিনি এসব ‘শুল্ক চিঠি’ বা চুক্তির বিষয়বস্তু বিভিন্ন দেশকে পাঠাবেন।