হঠাৎ গিয়ে সাবেক স্ত্রী-শাশুড়িকে এলোপাতাড়ি কোপ

গোপালগঞ্জে সাবেক স্ত্রী ও শাশুড়িকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছেন এক ব্যক্তি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চার-পাঁচজন সহযোগী নিয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার টুঠামান্দ্রা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তিনি এই ঘটনা ঘটান।
আহত ব্যক্তিরা হলেন টুঠামান্দ্রা গ্রামের সিলভা বিশ্বাস (২৩) ও তাঁর মা নির্মলা বিশ্বাস। সিলভাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে।
ঢাকায় পাঠানোর আগে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলভা বিশ্বাস এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁর বাবা বেঁচে নেই। ২০০৮ সালে কাশিয়ানী উপজেলার সুকান্ত সরকারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, সুকান্ত ঢাকায় হত্যা, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুকান্ত ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে থেকে এসব অপকর্ম করত। মাঝেমধ্যে কাশিয়ানীতে শ্বশুরবাড়িতে তাঁর কাছে আসত। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ওই বাড়ির বাথরুমের ড্রামে এক ব্যক্তির খণ্ডিত লাশ দেখতে পান। পরদিন তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর সুকান্ত বিভিন্ন সময় তাঁকে নিয়ে যেতে আসেন। কিন্তু অপরাধজগৎ না ছাড়ায় ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে তিনি সুকান্তের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেন। এর পর থেকে সুকান্ত বিভিন্ন সময় তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে।
সিলভা বিশ্বাস জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি টুঠামান্দ্রা গ্রামের বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন। ওই সময় সুকান্ত চার-পাঁচজন সন্ত্রাসী নিয়ে হাজির হয়। সবার হাতে ছিল অস্ত্রশস্ত্র। তিনি ভয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। সুকান্ত দরজা ভেঙে তাঁকে বাইরে বের করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময় তাঁর মা নির্মলা বিশ্বাস রক্ষা করতে এলে তাঁকে কুপিয়ে আহত করে। পরে সুকান্ত ও তার সহযোগীরা চলে যায়।
খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা এসে সিলভা ও তাঁর মাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. এ এস এন জুলফিকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সিলভার বাঁ হাতের তিনটি আঙুলে আঘাত হয়েছে। একটি আঙুলের শিরা কেটে গেছে। বাঁ পা, মাথার তালু ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন আছে। ওর মায়ের পিঠে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন আছে। সিলভাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওর মা নির্মলা বিশ্বাসকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হামলার ব্যাপারে সুকান্ত সরকারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, হামলার খবর পেয়ে রাতে তিনি হাসপাতালে গিয়ে সিলভা ও তাঁর মাকে দেখে এসেছেন। তাঁদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের আটকের চেষ্টা চলছে।