আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। এ ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়।
এদিকে, প্রথম ধাপের নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক উপজেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে ইসি।
এ ছাড়া ভোটের আগের দুদিন, ভোটের দিন ও পরদিনও প্রতি উপজেলায় তিনজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হবে। একইভাবে এই চারদিন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও দায়িত্ব পালন করবেন। গত বৃহস্পতিবার প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। নির্বাচনী এলাকাগুলো পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। অনেক এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ আসছে।
ইউপি নির্বাচনে প্রচারণায় জনসভা-শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা থাকছে। এমনকি পথসভা ও ঘরোয়া সভা করতে হলেও ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান ও সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির পাশাপাশি সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়ররাও প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। অপেক্ষা শুধু ভোটের। সুই-সুতা থেকে শুরু করে সব নির্বাচনী মালামাল সংগ্রহ শেষ হয়েছে। চলছে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ। যদিও আগেভাগে সাধারণ সদস্য প্রার্থীদের ব্যালট ছাপানোর কাজ এগিয়ে রেখেছিল ইসি। একইভাবে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে নির্বাচনী কাজের বিষয়ে। চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্যদের জন্য ভোটার সংখ্যার তিনগুণ হিসেবে প্রথম ধাপের প্রায় সোয়া কোটি ব্যালট পেপার ছাপবে ইসি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবার ২০১১ সালের চেয়ে একদিন বেশি থাকলেও কেন্দ্রপ্রতি নিরাপত্তা সদস্য কম দেওয়া হচ্ছে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স বরাবরের মতো রাখা হলেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানো হচ্ছে।
মাইক্রোফোনের ব্যবহার : প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল পথসভা ও নির্বাচনী প্রচারণার কাজে প্রতি ওয়ার্ডে জন্য একটি বেশি মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রচারণা দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
মিছিল বা শোডাউন : নির্বাচনে যেকোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউন নিষিদ্ধ। প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কেউ যেকোনো প্রকারের মিছিল বা মশাল মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না। ইসি অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো যান চালাতে পারবেন না।
সভা-সমিতি নিষেধ : পথসভা বা ঘরোয়া সভা ছাড়া কোনো সভা করতে পারবেন না। তবে ঘরোয়া সভা-পথসভা করতে হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে তা অবহিত করতে হবে। আর পথসভা কোনো স্থানে এমনভাবে করা যাবে না, যাতে জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা হয়। এ ছাড়া অন্য প্রার্থী কোনো পথসভা বা ঘরোয়া সভায় বাধা দিতে পারবেন না।