৭ দফা দাবিতে বিএমইউতে মেডিকেল কমিউনিটির প্রতীকী কর্মবিরতি

রেসিডেন্সি ও নন-রেসিডেন্সি সংস্কারে সাত দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত প্রতীকী কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) বটতলায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ইতোপূর্বে বাংলাদেশ মেডিকেল কমিউনিটির পক্ষ থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (রেসিডেন্সি ও নন-রেসিডেন্সি) পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি সম্পর্কে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের পর নতুন বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হলেও চিকিৎসক সমাজ অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছে, বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞ তৈরির অন্যতম মাধ্যম রেসিডেন্সি ও নন-রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
চিকিৎসক ও মেডিকেল স্টুডেন্টদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘বাংলাদেশ মেডিকেল কমিউনিটি (বিএমসি)’ রেসিডেন্সি ও নন-রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম সংস্কারে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (রেসিডেন্সি ও নন-রেসিডেন্সি) ধ্যমে নিম্নোক্ত সাত দফা দাবি উত্থাপন করছে। দাবিগুলো হলো—
১. রেসিডেন্সি ও নন-রেসিডেন্সি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুজন রেসিডেন্ট ও দুজন নন-রেসিডেন্টসহ কমিটি গঠন করে যৌক্তিক সংস্কার সাধন করতে হবে।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোর্স কারিকুলাম আপডেট করে ট্রেইনিদের হাতে কলমে ইন্টারভেনশন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি শেখার সুযোগ দিতে হবে। বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য ই-লগবুক নিশ্চিত করতে হবে। সব প্রতিষ্ঠানে সব রেসিডেন্টদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, থিসিস গ্র্যান্ট, বুক গ্রান্ট, ট্রেনিং মডিউলসহ সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্টদের সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো প্রণয়ন করে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস, ট্রেনিং, ব্লকের অভিন্ন মান নিশ্চিতকরণে অবিলম্বে ‘কোয়ালিটি অ্যাশুরেন্স টিম’ গঠন করতে হবে।
কোর্স ডিউরেশনের ব্যাপারে পূনর্বিবেচনা করতে হবে। ট্রেনিংয়ের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং উক্ত ট্রেনিং অন্য যেকোনো পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
২. সেগমেন্টাল পাস নিশ্চিত করতে হবে। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সেগমেন্টাল পাসের একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে জানুয়ারি ২০২৫ সেশনে যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের থেকেই কার্যকর করতে হবে।
৩. পরীক্ষা পদ্ধতির যুগোপযোগী সংস্কার করতে হবে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরীক্ষা পদ্ধতি পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে। প্রতিটি পরীক্ষায় ডিপার্টমেন্ট ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পাস রেটের অসামঞ্জস্যতা দূর করে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষা, ফেইজ-এ ও ফেইজ-বি পরীক্ষার মার্ক পরীক্ষার পর দ্রুততম সময়ে প্রকাশ করতে হবে। এক্সামিনার ও ট্রেইনারদের জন্য রিভিউ সিস্টেম এবং জবাবদিহিতা চালু করতে হবে। বিএমইউ ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউটে পরীক্ষার আয়োজন করা যেতে পারে।
৪. ভর্তি পরীক্ষার ফি কমিয়ে এক হাজারের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষায় অংশ নিতে ইন্টার্ন শেষ হওয়ার পর এক বছর সম্পন্ন হওয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল করতে হবে। ন্যূনতম তিনটি সাবজেক্ট চয়েসের ব্যবস্থা করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ওয়েটিং লিস্ট ও মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।
৫. ফেইজ-এ, ফেইজ-বি ও ডিপ্লোমা ফাইনাল পরীক্ষার ফি কমিয়ে পাঁচ হাজারের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। ভর্তি ফি সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন হবে এবং তা ১০ হাজারের মধ্যে হতে হবে।
৬. যেকোনো পরীক্ষায় ফেল করলে পরিক্ষার্থীর জন্য ন্যূনতম একবছর ক্যারি অন সিস্টেম চালু করতে হবে।
৭. ডিপ্লোমা ডিগ্রির নাম পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নাম দিতে হবে। গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে।