শ্রমিকদের অমানবিক জীবনের অবসান ঘটাতে চাই : জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমিকরা মেশিন নয়, তারা মানুষ। শ্রমিকদেরও আমাদের মতোই শরীর। তাদেরও কাজের চাপে ক্লান্তি আসে, তাদেরও বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, পরিবারকে সময় দিতে হয়। কিন্তু তাদের জীবন অমানবিক জীবন। আমরা এই অমানবিক জীবনের অবসান ঘটাতে চাই।
বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর পল্টন মোড়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, শ্রমিকরা রক্ত পানি করে যে অর্থ উপার্জন করে তা হালাল। সুতরাং তাদের গায়ের ঘামটা আমার কাছে আতরের মতো। আমি যখন কোথাও কোনো শ্রমিকের সংস্পর্শে যাই, কেউ কেউ তাদের সঙ্গে হাত মেলানো থেকে দূরে থাকে আর আমি টান দিয়ে বলি আসো ভাই তোমার সঙ্গে একটু বুক মিলাই। কারণ তোমার বুকের ঘামটা আমার জন্য আতর, সুগন্ধি ও সৌভাগ্যের কারণ।
‘আমরা চাই না মালিক-শ্রমিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলুক, আমরা চাই মালিক পক্ষ এটা বুঝবে, শ্রমিক বাঁচলে আমার শিল্প বাঁচবে, আমার ব্যবসা বাঁচবে। শ্রমিক যদি না বাঁচে আমার ব্যবসা এবং শিল্প বাঁচবে না। আবার শ্রমিকেরও বুঝতে হবে উদ্যোক্তা-মালিক বা শিল্পপতি যারা আছেন তারা যদি বাঁচে আমরাও বাঁচবো। কারণ আমার কর্মস্থল যদি ধ্বংস হয়ে যায় আমি দাবিটা করবো কার কাছে। এই জন্য মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষেরই এখানে দায় আছে দায়িত্ব আছে’, যোগ করেন শফিকুর রহমান।

জামায়াত আমির বলেন, সত্যিকার অর্থে আমরা যদি একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়তে চাই, শান্তির বাংলাদেশ গড়তে চাই তাহলে পরস্পর পরস্পরের হাতে হাত ধরে এগিয়ে যেতে হবে। যেদিন মালিকরা শ্রমিকদের সম্মান দিবেন, মন ভরে আদর করবেন তারা নিশ্চিত থাকতে পারেন শ্রমিক তাদের ষোলো আনা শক্তি উজাড় করে মালিকের পাশে থাকবে। আর শ্রমিক যতদিন অনুভব করবে—আমার মালিক তো আমাকে মানুষই অনুভব করে না তাহলে আপনি ধরে নিবেন সে আপনার শিল্পের দায়িত্বও কিছু মনে করবে না। এতে আমরা উভয় পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
সমাবেশে আগত অন্য বক্তারা বলেন, আমরা গত ১৭ বছর শ্রমিক সমাবেশ করতে পারিনি। আমাদের শ্রমিকরা নির্মম বঞ্চনা, হত্যার শিকার হয়েছেন। আজ সেই সুযোগ হয়েছে। তাই এখনি সময় শ্রমিকদের অধিকার সুসংগঠিত করার। আমরা এমন এক শ্রমনীতি কায়েম করতে চাই, যা চলবে ইসলামের আইন অনুযায়ী। যেখানে মালিক-শ্রমিক কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, যে আইনে কোনো শ্রমিক না খেয়ে থাকবে না। তাই কোরআনের বিধান অনুযায়ী ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলসহ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।