চবির সমাবর্তনে ড. ইউনূসকে উল্লাস-উষ্ণতায় বরণ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার (১৪ মে) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হলে স্নাতক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আবেগপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় উভয় পাশ থেকে উল্লাসের ঢেউ ওঠে। ব্যাপক উৎসাহ ও গর্বে উদ্ভাসিত স্নাতকরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা করতে থাকেন।
চবির অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অনুষদ সদস্য ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের ক্যাম্পাসে আগমন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে তাকে স্বাগত জানানো হয়।
ড. ইউনূসের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লেটারস (ডি লিট) ডিগ্রি প্রদান করে।
আবেগঘন ঐতিহাসিক পুনর্মিলনীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস তার সমাবর্তন ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার স্মৃতিগুলো স্মরণ করেন। ক্ষুদ্রঋণের যাত্রা কীভাবে শুরু করেছিলেন তাও তুলে ধরেন তিনি। স্নাতকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক পুনর্মিলনী। একটি বড় অধ্যায় শেষে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বহু বছর পর আবার এই ক্যাম্পাসে ফিরে আসা তার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
নোবেল শান্তি বিজয়ী ইউনূস স্নাতকদের বড় স্বপ্ন দেখতে ও দেশে অবদান রেখে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি নতুন বিশ্ব গড়ার ক্ষমতা আছে।’
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফয়েজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহিয়া আখতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, জ্বালানি উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, এস ডি জি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূস আজ সকালে তার নিজ জেলা চট্টগ্রাম সফর শুরু করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার প্রথম সফর। প্রায় ১২ ঘণ্টা অবস্থানের সময় টানা ব্যস্ততায় সফরটি শেষ করেন তিনি।
সমাবর্তনের পর অধ্যাপক ইউনূস হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে তার পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন করেন।
এই সমাবর্তন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। বিশ্ববিদ্যালয়টির ২২ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ৪২ জন পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত ও ৩৩ জন এমফিল গবেষককে সম্মানিত করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহিয়া আখতার সমাবর্তনকে ‘একটি একাডেমিক উদযাপন ও যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য একটি সর্বোচ্চ মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায় এক দশক ধরে এই অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।