‘যোগব্যায়াম বিরোধিতাকারীদের পাকিস্তান যাওয়া উচিত’

বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে বিভিন্ন সময়েই গণমাধ্যমের আলোচনায় ছিলেন ভারতের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) নেত্রী সাধ্বী প্রাচী। সংঘাত উসকে দেয় অভিযোগ করে মার্চে আমির খান ও শাহরুখ খানের ছবি বয়কটের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এবার যোগব্যায়াম বিরোধিতাকারীদের পাকিস্তান চলে যেতে বলে নতুন বিতর্ক উসকেছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার এক বক্তব্যে সাধ্বী প্রাচী আন্তর্জাতিক যোগব্যায়াম দিবসে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির যোগ না দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, রোববার দিল্লির রাজপথে প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করা হয়েছিল। সেখানে কোনো রাজনীতিকের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়নি যে সেখানে আসার জন্য আনসারিকে আমন্ত্রণপত্র পাঠাতে হবে।
সাধ্বীর এই মন্তব্যের পর দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগব্যায়াম দিবস পালন করে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কিন্তু যোগব্যায়াম চর্চাকে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে এতে মুসলমানদের সম্পৃক্তির বিরুদ্ধে আপত্তি জানায় কিছু সংগঠন।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের মতে, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের সাংবিধানিক নিয়মকানুনকে তোয়াক্কা না করে বর্তমান সরকার হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) গোঁড়া নীতি অনুসরণ করছে, যা দেশের জন্য অকল্যাণকর।
ল বোর্ডের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ওয়ালি রহমানির দাবি, সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার যা করছে, তা স্পষ্টত ভারতের সংবিধান লঙ্ঘন। দেশের একাধিক মুসলিম সংগঠনকে যোগ দিবস পালনের চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে উদ্যোগ, তা মূলত আরএসএসের নীতি অনুসরণের নামান্তর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কিন্তু ল বোর্ডের এসব বিরোধিতার সমালোচনা করে সম্প্রতি একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিসহ (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিভিন্ন সংগঠন।
বিজেপির আইনপ্রণেতা যোগী আদিত্যনাথ সম্প্রতি বলেন, যাঁরা সূর্য প্রণামের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের সমুদ্রে ডুবে মরা উচিত। এবার একই সুরে ভিএইচপি নেত্রী সাধ্বী প্রাচী বলেন, সব ভারতীয়র উচিত ভারতের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া। এখানে কোনো বিরোধিতার জায়গা নেই। যাঁরা যোগচর্চার বিরোধিতা করছেন, তাঁদের এখনই পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত। কারণ, তাদের ভারতে থাকার কোনো অধিকার নেই। সাধ্বী আরো বলেন, ভারতের অন্ন গ্রহণ করবে আর পাকিস্তানের হয়ে গান গাইবে, এটা চলতে পারে না। গণতন্ত্র কখনই দেশের ঐতিহ্যকে না মেনে চলার শিক্ষা দেয় না।