রাখাইনের সবাইকে রক্ষার চেষ্টা করছি : সু চি

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা অং সান সু চি বলেছেন, বিদ্রোহে বিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যের সবাইকে রক্ষার চেষ্টা করছে তাঁর সরকার। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সু চি এই কথা বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ভারতীয় অংশীদার এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই)।
এমন একসময়ে সু চি এই কথা বললেন, যখন রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে ঢুকছে। জাতিসংঘের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার ১৮ হাজার রোহিঙ্গাসহ মোট এক লাখ ৪৬ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে।
তবে সু চি রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা নিয়ে কথা বললেও রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলাদা করে কিছু বলেননি। অথচ গত ২৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে ওই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারের শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চিকে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনের বিষয়ে কিছু না বলার জন্য বরাবরই অভিযুক্ত করে আসছে। এমনকি ১৯৯১ সালে জেতা তাঁর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়ে আসছে।
সু চি বলেন, ‘আমাদের সব নাগরিকের সুরক্ষার বিষয়ে ভাবতে হবে। সবাই যারা এই দেশে বাস করছেন; তাঁরা আমাদের দেশের নাগরিক হন বা না হন তাঁদের সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’
ইয়াংগুনে সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করার পর সু চি আরো বলেন, ‘অবশ্যই তাঁদের থাকতে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ নেই। কিন্তু এটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে সবাই আইনের সুরক্ষা পায়।’
সু চি মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রাখাইন রাজ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝির একটি বড় পর্বত’ তৈরির জন্য ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেন।
এর আগে মোদির সঙ্গে করা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সু চি বলেছিলেন, সন্ত্রাস যাতে দেশে বা প্রতিবেশী দেশের মাটিতে শেকড় গাড়তে না পারে তা সুনিশ্চিত করতে হবে দুই রাষ্ট্রকেই। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ঐক্য বজায় রাখতে মিয়ানমারে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। সু চি আরো বলেন, ‘যৌথভাবে আমরা নিশ্চিত করব আমাদের দেশ, মাটি বা প্রতিবেশী কোনো দেশে যাতে সন্ত্রাসবাদ শেকড় গাড়তে না পারে।’
মিয়ানমার ও ভারত দুই দেশের যৌথ অংশীদারত্বের মাধ্যমে মিয়ানমার ও এর মিত্র দেশগুলোতে শান্তি, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন সু চি।