কাতালান গণভোট অবৈধ

স্পেনের কাতালোনিয়ায় স্বাধীনতার দাবিতে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে দেশটির রাজা ষষ্ঠ ফেলিপ বলেছেন, কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার প্রশ্নে ভোটের আয়োজকরা নিজেদের আইনের বাইরে নিক্ষিপ্ত করেছেন। এ গণভোট অবৈধ। মঙ্গলবার টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজা বলেন, স্পেনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
গত রোববার কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন করে স্থানীয় নেতারা। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাধা দেয় এবং হামলায় প্রায় ৯০০ জন আহত হয়। এর প্রতিবাদে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে।
মাদ্রিদে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, এ গণভোট অবৈধ।
ভাষণে স্পেনের রাজা বলেন, যেসব কাতালান নেতা এ গণভোটের আয়োজন করে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রতি অসম্মান করেছেন। তারা আইনের শাসনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ভেঙেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ কাতালান সমাজ বিভক্ত হয়ে পড়েছে।’ এ ভোট দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়ার অর্থনীতিকে এবং পুরো স্পেনকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
তবে ফেলিপ বলেন, স্পেন এসব কঠিন সময় উতরাতে সক্ষম হবে।
পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনাতেই সাত লাখ মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার তা নিশ্চিত করেনি।
বার্সেলোনার ৫০টির বেশি সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষোভকারীরা। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন সূত্র জানিয়েছে, শহরের সমুদ্র বন্দর স্থবির হয়ে পড়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বার্সেলোনার বৃহত্তম পাইকারি খাদ্যের বাজার মার্কাবার্না লোক সমাগম শূন্য। এখানে দিনভর ৭৭০টি খাবার দোকান বন্ধ রয়েছে।
শহরের স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল বন্ধ হয়ে পড়েছে বা ন্যূনতম পর্যায়ে কার্যক্রম চলছে। রোববার গণভোটে পুলিশি বাধার বিষয়টি বিক্ষোভকারীরা অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘন হিসেবেই দেখছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাহোয় বলেছেন, এই ভোট গণতন্ত্রের উপহাস। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুয়ান ইগনাচিও জোইদো বলেন, ‘আমরা দেখেছি, কীভাবে দিনের পর দিন কাতালোনিয়ার সরকার জনগণকে অতল গহ্বরে ফেলছে এবং রাস্তায় বিদ্রোহে উসকানি দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার হয়রানি বন্ধে সব পদক্ষেপ নেবে।
গত রোববার ২২ লাখের বেশি মানুষ ভোট দেয় বলে জানা গেছে। কাতালান সরকার বলেছে, স্বাধীনতার পক্ষে ৯০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক ফলাফল জানানো হয়নি।