দেব আনন্দের জন্ম আর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিন

আজ ২৬ সেপ্টেম্বর। এ দিনেই দুই বিখ্যাত মানুষ দেব আনন্দ আর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন ও মৃত্যুদিন। যাঁরা ছিলেন কার্যত একে অপরের পরিপূরক। যাঁদের মিলিত রসায়নে দর্শক থেকে শ্রোতা বারবার বিভোর হয়েছেন। বিমোহিত হয়েছেন প্রাণচঞ্চল অভিনয় আর জাদুস্পর্শী সুরের মূর্ছনায়।
এই দিনে জন্মেছিলেন হিন্দি ফিল্ম জগতের চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দ। ১৯২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মদিন দেব আনন্দের। আজ দেব আনন্দের ৯২তম জন্মদিন। অন্যদিকে, এই একই দিনে মারা যান কালজয়ী সংগীতশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ১৯৮৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ২৬তম প্রয়াণ দিবসও আজ। মজার বিষয় হলো, দেব আনন্দের লিপে যেসব জনপ্রিয় গায়ক কণ্ঠ দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
এ ছাড়া কাকতালীয় ঘটনা হলো, হিন্দি ফিল্মের ক্ষেত্রে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রথম সর্বাধিক জনপ্রিয় গানটি ছিল এই দেব আনন্দের লিপেই। সুরকার শচীন দেববর্মনের হাত ধরে চিরসবুজ এই জুটি প্রথম পথচলা শুরু করে ১৯৫১ সালে। ‘সাজা’ ছবিতে দেব আনন্দের লিপে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রথম গাইলেন ‘আ গুপচুপ গুপচুপ পেয়ার করে’। এই গানে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সহশিল্পী ছিলেন সন্ধ্যা মুখার্জি। এর পর ১৯৫২ সালে শচীনকর্তার সুরে ‘জাল’ ছবিতে দেব আনন্দের লিপে বিখ্যাত সেই গান ‘সুন জা দিল কি দাস্তান’ হয়ে রইল তাঁর জীবনের প্রথম সর্বাধিক জনপ্রিয় গান। তার পর থেকে একের পর এক জনপ্রিয় গানের ডালি দর্শক-শ্রোতাকে উপহার দিয়ে গেছে এই জুটি। পরে দেব আনন্দের লিপে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে শোনা গেছে ‘পতিতা’ ছবির ‘ইয়াদ কিয়া দিল নে’, ‘মুনিমজি’ ছবির ‘দিল কি উমঙ্গে হ্যায় জওয়া’, ‘মিলাপ’ ছবির ‘ইয়ে বাহারো কা সমা’, ‘হাউস নম্বর ৪৪’ ছবিতে ‘তেরি দুনিয়া মে জিনে সে’, ‘সোলবা সাল’ ছবিতে ‘হ্যায় আপনা দিল তো আওয়ারা’, ‘মনজিল’ ছবিতে ‘ইয়াদ আ গয়ি ওহ নশিলী’, ‘বাত এক রাত কি’ ছবিতে ‘না তুম হামে জানো’র মতো একের পর এক জনপ্রিয় গান।
‘সোলবা সাল’ ছবিতে ‘হ্যায় আপনা দিল’ গানের জন্য হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সে সময় ‘বিনাকা গীতমালা শ্রেষ্ঠ গায়ক পুরস্কার’ সম্মান পান। অনবদ্য দেব আনন্দ-হেমন্ত জুটির ঠোঁটে ও কণ্ঠে এই গানের সঙ্গে অসাধারণ মাউথ অর্গান বাজিয়েছিলেন শচীন দেববর্মনের পুত্র রাহুল দেববর্মন। জীবনের শেষবেলায় এসে বলিউডের চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দ তাঁর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে ২০০৮ সালে বলেন, ‘পর্দায় অভিনয় করার সময় লিপে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান এলে মনে হতো, সত্যিই এবার বুঝি চরিত্রে প্রাণ এলো। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের উদাত্ত কণ্ঠস্বরের জন্যই এটা সম্ভব হতো। দেব আনন্দের ভাষায়, ও রকম ভারিক্কি অথচ সুরেলা মিষ্টি গলা আর সুরের অভাবনীয় স্পর্শ মিলিয়ে তার গানটা শোনা মানে, ইট ওয়াজ লিটারেলি আ ফ্যাবুলাস এক্সপেরিয়েন্স।’